বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
ভোর সকাল কী গভীর রাত, সারাক্ষণ বাজছে সেখানকার ফোন। রাজধানীসহ দেশের নিভৃত পল্লী থেকে নারী-পুরুষ এমনকি শিশুরাও সেবা প্রাপ্তির আশায় কল করছেন সেখানে। মুহূর্তেই মিলছে সেবাও। অসুস্থ রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, জঙ্গি আস্তানার সন্ধান, অগ্নিকাণ্ডসহ যে কোনো দুর্ঘটনা, বাড়িতে ডাকাতের হানা, ধর্ষকের কবল থেকে বাঁচার আকুতি, প্রতারকের প্রলোভন, ইভটিজিংয়ের প্রতিকার-সব সমস্যার সমাধান যেন ৯৯৯। উন্নত বিশ্বের ন্যায় দ্রুত নাগরিকসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাতীয় এই জরুরি সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর। ঢাকার আবদুল গনি রোডে ৫ তলা ভবনে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে একজন অতিরিক্ত ডিআইজির নেতৃত্বে ২৪ ঘণ্টাই ব্যস্ত পুলিশের একটি চৌকস দল।
কার্যক্রম শুরু পর থেকে গত ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানে মোট ১৬ কোটি ২৩ লাখ ১১ হাজার ৩১টি কল করা হয়েছে। যার মধ্যে জরুরি কল ২ লাখ ৩ হাজার ৪২৩টি, পুরুষদের কল ২৬ লাখ ৭২ হাজার ৯৬০টি, নারীদের কল ১ লাখ ১০ হাজার ৯২৬টি, শিশুদের কল ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬১টি, বিভাগীয় কল ৪১ হাজার ৩৭৪টি, (ফাঁকা) কল ৮৩ লাখ ৮৮ হাজার ৩৭৪টি, ফান কল (মজা কল) ১৬ লাখ ৪১ হাজার ৪০১টি এবং বিবিধ কল ছিল ২৮ লাখ ৬৯ হাজার ৩১২টি। ওই সময়ে পুলিশি সেবা চেয়ে এক লাখ ৪৯ হাজার ৩৩৭টি, ফায়ার সার্ভিসের সেবা চেয়ে ৩০ হাজার ৯টি ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা চেয়ে ২৪ হাজার ৭৭টি কল এসেছে।
জাতীয় জরুরি সেবার দায়িত্বে থাকা পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ বলেন, যে কোনো ব্যক্তি কল করে তার প্রয়োজনের কথা জানাতেই কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে তারা সারাক্ষণ কাজ করছেন। শুধু পুলিশি সেবা নয়, দ্রুত সময়ের মধ্যে নাগরিক সেবার সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন তারা।
সামগ্রিকভাবে ৯৯৯-এর প্রতিটি কল যেন এক একটি সাফল্যের গল্পঃ
পতেঙ্গায় ধর্ষণ থেকে রক্ষা: গত ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাত ২টা ৫৬ মিনিটে ভীত, সন্ত্রস্ত ও উদ্বিগ্ন একজন নারী কলার কাঠগড়, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, তাকে চাকরি দেয়ার কথা বলে কাঠগড়ের একটি বাড়িতে এনে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে দিয়ে খারাপ কাজ করানো হতে পারে, তাই তিনি ওয়াশরুমে ঢুকে ৯৯৯-এ ফোন করেছেন উদ্ধার হওয়ার আশায়। কলার যখন ৯৯৯-এ ফোন করেন, তখন তিনি ছিলেন অত্যন্ত ভীত ও সন্ত্রস্ত। ৯৯৯ কলারকে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়ার পাশাপাশি তাৎক্ষণিকভাবে পতেঙ্গা থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে পতেঙ্গা থানার এসআই সুমন ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। পরবর্তী সময় এসআই সুমন জানান, তিনি কাঠগড়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভিকটিম ১৭ বছর বয়সী তরুণীকে উদ্ধার করেন এবং তাকে আটকে রাখার জন্য ইয়াসমিন আক্তার, রনি দত্ত (২৩), মো. জোবায়ের (২৮) এবং নেয়ামতকে (৩৮) আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। এসআই সুমন আরো জানান, ভিকটিম চাকরির সন্ধানে চট্টগ্রাম এসেছিলেন। পরে তার সঙ্গে ইয়াসমিন আক্তারের পরিচয় হয়। চাকরি দেয়ার কথা বলে তাকে কাঠগড়ে নিজের বাসায় নিয়ে যায় ইয়াসমিন। সেখানে আটকে রাখা হয়েছিল পতিতাবৃত্তি করানোর জন্য।
কুমিল্লায় নারীর ঘাতক আটক: গত ২২ জানুয়ারি রাত ১১টা ৪১ মিনিটে শফিকুল নামে উদ্বিগ্ন একজন কলার নবগ্রাম, কোতোয়ালি, কুমিল্লা থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, কোতোয়ালি থানার নবগ্রামের একটি বাড়িতে একটি ছেলে একটি মেয়েকে খুন করেছে। কলার ৯৯৯-এর কাছে দ্রুত পুলিশি সহায়তার জন্য অনুরোধ জানান। ৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে কলারকে কোতোয়ালি থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। সংবাদ পেয়ে কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর জাকির ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। তিনি ঘটনাস্থল থেকে খুনের শিকার আফরোজা আক্তার বৃষ্টির (২০) মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণের ব্যবস্থা করেন। সেইসঙ্গে খুনি রুহুল আমিনকে (১৯) হাতেনাতে আটক করা হয়। ইন্সপেক্টর জাকির জানান, খুনের শিকার আফরোজা আক্তার বৃষ্টি তার স্বামী দীন ইসলাম রকির (৩৫) দ্বিতীয় স্ত্রী এবং অভিযুক্ত রুহুল আমিন প্রথম স্ত্রীর ভাই। পারিবারিক কলহের জের ধরে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হারানো শিশু উদ্ধার ও অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর: গত ২২ জানুয়ারি সকাল ৮টা ৩৯ মিনিটে নুরুল হক নামে উদ্বিগ্ন একজন কলার ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, ঈশ্বরগঞ্জের তারুন্দিয়া এলাকায় একটি ১০/১১ বছর বয়স্ক ছেলে কান্নাকাটি করছে, সে বলছিল সে হারিয়ে গেছে। কলার জরুরি ভিত্তিতে পুলিশি সহায়তার অনুরোধ জানান। ৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে কলারকে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। সংবাদ পেয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার এএসআই মোমেন ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। তিনি ঘটনাস্থল থেকে শাহিনকে (১১) উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই রেজাউল জানান, ছেলেটি তার মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকে। তার মা একজন গার্মেন্টসকর্মী। সে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে একটি ট্রেনে উঠেছিল কিন্তু আর নামতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত সে ময়মনসিংহের ত্রিশাল স্টেশনে নামে। ছেলেটি আরো জানায়, তার নানির বাড়ি নেত্রকোনা সদর থানায়। পরে নেত্রকোনা সদর থানার সহায়তায় ছেলেটির নানির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। পরে তাকে তার নানির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ডাকাতি প্রতিরোধ ও ডাকাত আটক: গত ২০ জানুয়ারি রাত ৮টা ১০ মিনিটে হেকমত নামে একজন কলার রাজশাহীর পুঠিয়া থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, পুঠিয়ার শিলমরিয়া এলাকার গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাত হানা দিয়েছে। ব্যাংকের ভেতর থেকে তারা চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন। এলাকাবাসী ব্যাংক ঘেরাও করে রেখেছে, তাদের দ্রুত পুলিশি সহায়তা প্রয়োজন। ৯৯৯ তাৎক্ষণিক কলারকে পুঠিয়া থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে পুঠিয়া থানার এসআই সাইফুল ইসলাম ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। তিনি ঘটনাস্থল থেকে ডাকাত সন্দেহে আনোয়ার হোসেনকে (৩২) ছোরাসহ আটক করেন। আনোয়ার রাজশাহীর তানোরের অধিবাসী। আনোয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের ক্যাশিয়ারকে ছোরা দিয়ে আঘাত করলে ক্যাশিয়ার সামান্য আহত হন।
তিনি আরো জানান, আনোয়ার একসময় গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মচারী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন অনিয়মের কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয় এবং সে একজন মাদকসেবী। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
লালমনিরহাটে স্ত্রীর উত্ত্যক্তকারীকে ধরিয়ে দিলেন স্বামী: গত ২০ জানুয়ারি দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সায়মন নামে একজন কলার লালমনিরহাট শহর থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, পূর্ব পরিচিত এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে প্রায়ই ফোনে উত্ত্যক্ত করেন। রাত-দিন বিভিন্ন রকম আজে-বাজে মেসেজ পাঠান এবং অশ্লীল কথা-বার্তা ও কুপ্রস্তাব দেন। উত্ত্যক্তকারী বিবাহিত এবং তাকে অনেকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও এ ধরনের কাজ থেকে সে বিরত হয়নি। এখন সে লালমনিরহাট পৌরসভার কাছে কলারের স্ত্রীকে যেতে বলেছে, সেখানে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসবে। কলারের পরামর্শ মোতাবেক তার স্ত্রী উত্ত্যক্তকারীর সঙ্গে দেখা করতে রাজি হয়। কলার এ অবস্থায় উত্ত্যক্তকারীকে ধরার জন্য দ্রুত পুলিশি সহায়তা চান। ৯৯৯ তাৎক্ষণিক কলারকে লালমনিরহাট সদর থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। সংবাদ পেয়ে লালমনিরহাট সদর থানার এএসআই তুলসী কুমার ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। তিনি ঘটনাস্থল থেকে উত্ত্যক্তকারী আবু মুছাকে (২৩) আটক করেন। মুছা লালমনিরহাটের তালুকোটা গ্রামের অধিবাসী।
মানিকগঞ্জে শিশু ধর্ষণকারী আটক: গত ২০ জানুয়ারি সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে আলমগীর (ছদ্মনাম) নামে একজন কলার মানিকগঞ্জ সদরের ফারিকচর পূর্বপাড়া থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, তিনি একজন দরিদ্র ভ্যানচালক। তার নয় বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার পথে তার প্রতিবেশী আবদুল কাদের (৭০) জোরপূর্বক ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে স্থানীয় কিছু লোক ভুট্টাক্ষেত থেকে তার মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আরো লোকজন মিলে ধর্ষককে আটক করেন। এখন তার জরুরি ভিত্তিতে পুলিশি সহায়তা দরকার। ৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে কলারকে মানিকগঞ্জ সদর থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই তারেক ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। তিনি ভিকটিমকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
ভাঙ্গায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার: গত ১৯ জানুয়ারি সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে ফজল মুন্সী (ছদ্মনাম) নামে একজন কলার মাধবপুর, ভাঙ্গা, ফরিদপুর থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার মাধবপুরের তালুকদার বাড়িতে একজন পলাতক আসামি লুকিয়ে আছে। ৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে কলারকে ভাঙ্গা থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে ভাঙ্গা থানার এএসআই রুবায়েত ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। তিনি তালুকদার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি আল আমিনকে (৩৫) আটক করে থানায় নিয়ে যান।
কক্সবাজারে পর্যটক দম্পতি উদ্ধার: গত ১৩ জানুয়ারি দুপুর ১৪টা ৪২ মিনিটে শরিফ নামে একজন উদ্বিগ্ন ব্যক্তি কক্সবাজার লাবণী বিচ থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, তিনি তার পরিবারসহ কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন। লাবণী পয়েন্ট বিচে তিনি তার পরিবারের মহিলা সদস্যসহ বেড়াতে যান। সেখানে ছবি তোলার জন্য এক প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারের সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তি অনুযায়ী ফটোগ্রাফার তার ও পরিবারের সদস্যদের বেশ কিছু ছবি তুলে দেন। এই ছবিগুলোর মধ্যে গোসলের দৃশ্যের ছবিও ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ছবি চাইতে গেলে ফটোগ্রাফার চুক্তির চাইতে কয়েকগুণ বেশি টাকা দাবি করে। চাহিদা মাফিক টাকা না দিলে সে ছবি দেবে না এবং ছবিগুলো ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেবে বলে জানায়। কলার ৯৯৯-কে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। ৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে কলারকে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি দল ৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারা অভিযুক্ত ফটোগ্রাফারের ক্যামেরা থেকে দম্পতির সব ছবি ডিলেট করে দেন। ফটোগ্রাফার তার ভুল স্বীকার করে দম্পতির কাছে ক্ষমা চান। দম্পতি ফটোগ্রাফারকে ক্ষমা করে দেন এবং এ বিষয়ে তারা পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে অনীহা প্রকাশ করেন।
কুমিল্লায় ভিকটিম উদ্ধার ও ধর্ষক আটক: গত ২১ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে মো.আলম (ছদ্মনাম) নামে একজন উৎকণ্ঠিত কলার কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া শশীদল রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, শশীদল রেলওয়ে স্টেশনের পাশে একটি ধানক্ষেতে একটি মেয়েকে কয়েকজন লোক জোর করে ধরে নিয়ে গণধর্ষণ করছে। তিনি ভিকটিম মেয়েটির চিৎকার ও কান্নাকাটির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলেন। কলার ৯৯৯-এর কাছে দ্রুত পুলিশি সহায়তার অনুরোধ জানান। ৯৯৯ তাৎক্ষণিক কলারকে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে রওনা দেয়। দলটি ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের শিকার ১৭ বছর বয়সী তরুণীকে উদ্ধার ও সন্দেহভাজন ৬ জনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে ৩ জনকে ধর্ষণের শিকার ভিকটিম মেয়েটি শনাক্ত করেন। আটককৃতরা হলেন- লাবু (৪০), নাসির আহমেদ (৪২), নজরুল ইসলাম (৩৮), কাওছার (৪২), সাদ্দাম (৩০) এবং জমির হোসেন (৩৫)। তারা শশীদলের অধিবাসী।
সাভারে আত্মহত্যা থেকে রক্ষা: জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে আত্মহত্যা করতে যাওয়া এক যুবককে উদ্ধার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ। ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে রাজাশন পলু মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে এক কলার ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, পলু মার্কেট এলাকায় এক ব্যক্তি ৬ তলা ভবনের ছাদে উঠে নিচে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়েছেন। বিষয়টি জানানো মাত্রই সাভার মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখে লোকটি ছাদে এমনভাবে দাঁড়ানো যে একটু নড়াচড়া করলেই নিচে পড়ে যেতে পারেন। তখন পুলিশ তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে লোকটি জানান, তার বাড়ি রংপুর, তিনি সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করবেন। কোনোভাবেই তিনি সেখান থেকে নামবেন না। কেউ উদ্ধার করতে এলে লাফ দেবেন বলেও হুমকি দিচ্ছিলেন। এভাবে কিছুক্ষণ কথা বলার পর পুলিশ বুঝতে পারে লোকটি মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন। তখন চিন্তা বেড়ে যায় উপস্থিত পুলিশের। তাকে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা ২ দলে ভাগে হয়ে যায়। পুলিশের একটি দল ওই লোকটির সঙ্গে কথা বলে তার মনোযোগ তাদের দিকে ধরে রাখছিলেন। অন্য দলটি ওই ভবনের ছাদে ওঠেন। সেখানে গিয়ে দেখে ছাদের দরজাটি ওই লোকটি বাইরের দিক থেকে আটকে রেখেছে। দরজা না ভেঙে ছাদে ওঠার কোনো উপায় নেই। তখন পুলিশ হালকা করে ছাদের স্টিলের দরজায় টোকা দেয়। তখন দেখা যায়, আত্মহত্যা করতে যাওয়া লোকটির খেয়াল নিচে থাকা পুলিশ সদস্যদের দিকে। দরজার শব্দ সে খেয়াল করছে না। ঠিক এ সুযোগেই পুলিশ কৌশলে দেয়ালের খানিকটা ইট ভেঙে একটি ফুটো তৈরি করে। এরপর সেখান দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দরজা খুলে গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে পুলিশের এ উদ্ধার অভিযান।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়