বৃহস্পতিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||
আশ্বিন ১২ ১৪৩০
|| ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২২
রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। যদিও রাজশাহী জেলার উপজেলাগুলোয় রোগী আছে মাত্র একজন। তবে, শহরে সংক্রমণের হার বাড়ছে। গত বছরের শেষের দিকে একবারে তলানিতে ঠেকেছিল সংক্রমণের হার। জানুয়ারিতে সেই চিত্র পাল্টে গেছে। নতুন বছরে প্রথম ১১ দিনে সংক্রমণ বেড়েছে ৪ গুন। এছাড়া গত ডিসেম্ব^র মাসের থেকে গড় সংক্রমণ ৪ গুন বেড়েছে ১১ দিনে। এদিকে, হটাৎ করে বাড়া এই সংক্রমণকে ওমিক্রন ধরন বলে মনে করছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক। আর স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, তারা বাড়তি প্রস্তুত গ্রহণ করছে, সেই সাথে কাজ করছে সচেতনতা বাড়াতেও। তবে, রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো গুরুত্বই নেই মানুষের মধ্যে। মাস্ক ব্যবহারকারীর স্যংখ্যাও একেবারে হাতেগোনা।
রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে, রাজশাহী জেলার ৯ উপজেলায় বর্তমানে করোনা রোগী আছে মাত্র একজন। আর রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৪২ জন। রাজশাহীতে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ৬ হাজার ২৩৫ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এই সময় করোনা পজিটিভ হয় ১১৬ জন। সংক্রমণের হার দাঁড়ায় ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ডিসেম্ব^র মাসে ৬ হাজার ১৯২ জনের করোনা পরীক্ষা করে পজিটিভ পাওয়া যায় ১৩১ জনের। সংক্রণের হার ২ দশমিক ১২ শতাংশ। তবে জানুয়ারি এসে এই হার বাড়তে শুরু করে।
জানুয়ারি মাসের ১ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ৭২৮টি। এতে শনাক্ত হয় ১৫১ জন। অর্থাৎ, সংক্রমণের গড় হার ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
এর মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর ১৪২ জনের করোনা পরীক্ষা করে চারজনের করোনা শনাক্ত হয়। এই দিন গড় সংক্রমণের হার দাঁড়ায় ২ দশমিক ৮২ শতাংশ। ৫ তারিখে ১৫০ জনের করোনা পরীক্ষা করে ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এই দিন গড় সংক্রমণের হার দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সর্বশেষ গত বুধবার সিভিল সার্জন অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, ১১ জানুয়ারি ২১৪ জনের করোনা পরীক্ষা করে ২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এই দিন গড় সংক্রমণের হার দাঁড়ায় ১২ দশমিক ১৫ শতাংশ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, আমরা ধরন পরীক্ষা করতে পারছি না। তবে, আমাদের কাছে মনে হচ্ছে এগুলো ওমিক্রন ধরন। আশার কথা হচ্ছে, রোগী আক্রান্ত বেশি হলেও হাসপাতালে রোগী কিন্তু বাড়েনি। রোগী আগের মতো ৩০ থেকে ৩২ জনই থাকছে। আক্রান্ত হচ্ছে কিন্তু হাসপাতালে আসা লাগছে কম। এটা আসলে একটা ভালো খবর।
তিনি বলেন, হটাৎ করে রোগী বেড়ে গেলে সামাল দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি রাখা আছে। আমাদের এখন চারটি ওয়ার্ডে করোনা চিকিৎসা চলছে। তবে যদি লাগে আমরা ১৪টি পর্যন্ত ওয়ার্ড করোনা ডেটিকেটেড করে দেব। এতে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া একটু কঠিন হবে। তবে আমরা প্রয়োজনে সবগুলো ওয়ার্ডই ব্যবহার করব। এছাড়া আমাদের অক্সিজেন, বায়োপ্যাক ও অন্যান্য সামগ্রী প্রস্তুত করে রাখছি। পাশাপাশি পিপিই ও আনুসঙ্গিক জিনিসপত্রের জোগানও বাড়াচ্ছি।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ ফারুক বলেন, রাজশাহী এখন মধ্যম ঝুঁকিতে। মূল যে কাজটি এখন প্রয়োজন সেটি হচ্ছে জনসচেতনতা। জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। হাসপাতলে মাস্ক ছাড়া কেউ আসবে না। আমরা চেষ্টা করছি টিকা দেওয়ার হার বাড়ানোর। চেষ্টা করব ১৫ তারিখের ভেতরে ১২ থেকে ১৭ বছরের স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের টিকা দিয়ে দেব। চেষ্টা করব শতভাগ দিয়ে দিতে।
তিনি বলেন, এগুলো অমিক্রন কি না, সেটি নিশ্চিত করতে পারছি না। এখান থেকে স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করতে হবে। এদিকে করোনা রোগীদের আগের মতো করেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আরও অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী জেলার উপজেলাগুলোয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন নেই। আমরা উপজেলাগুলোয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
এদিকে বিধিনিষেধেদর প্রথম দিনেই মাঠে আছে জেলা প্রশাসন। রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল জানান, নিদের্শনার বিষয়ে সব দপ্তরকে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে সচেতনতা তৈরিতে কাজ প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের সকালে দুটি ও বিকালে দুটি করে মোট চারটি মোবাইল টিম নগরীতে কাজ করছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, নির্দেশনা বাস্তবায়নে সবার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে আরএমপির পুলিশ সদস্যরা তৎপর থাকবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়