সোমবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ||
অগ্রাহায়ণ ২৭ ১৪৩০
|| ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২৩
ঢাকায় স্টেডিয়ামে বসে শান্তর খেলা দেখেছি। শান্তর খেলা হলে আমি মাঠে গিয়ে দেখি। গ্যালারিতে বসে আমি তার জন্য দোয়া করি। সে যেনো ভালো খেলে। স্টেডিয়ামে বসে শান্তর খেলা দেখেছি, সেই মহুর্ত আমার অনেক ভালো লাগে। যেটা কখনো কল্পনা করিনি কোন দিন। বাস্তবে সেটা দেখছি।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সহঅধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর বাবা জাহাঙ্গীর আলম রতন গতকাল শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে পবা পারিলা ইউনিয়নের রনহাট গ্রামের বাড়িতে এসব কথা বলেন। ভারতে শুরু হওয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ডেপুটি নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তর বাবা মৎস চাষি। বাবা, মা আর ছোট বোন নিয়ে শান্তদের পরিবার।
তিনি বলেন, আন্ডার ফরটিনে (অনুর্ধ ১৪) খেলতে যায় ভারতে। ভারতীয় এক কোচ শান্তকে ব্যাট নিয়ে নেমে যেতে দেখে মন্তব্য করেন, ব্যাট ধরবে না খেলবে। সেই দিন শান্ত ১৩৫ রান করে। শান্তর খেলায় খুশি হয়ে ওই কোচ তাকে ৫০০ রুটি পুরস্কার দেয়।
শান্তর শিক্ষাজীবনের বিষয়ে তার বাবা রতন বলেন, পাঁচ বছর বয়সে মাদ্রাসায় দেয়। সাত বছর বয়সে কোরআন শেখেছে। এরপরে তাকে পবার হরিয়ান বাজারে গুলশান আরা কিন্ডার গার্টেন স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করি। সেখানে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে শান্ত। এর পরে ষষ্ট শ্রেণিতে রাজশাহী সুগার মিলস হাই স্কুলে ভর্তি করি। সেখানে এসএসসি পাসের পরে শান্ত।
একাদশ শ্রেণি ভর্তি হয় কাটাখালীর আদর্শ ডিগ্রি কলেজে। সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছে। এছাড়া ঢাকার একটি বিশ^বিদ্যালয়ের বর্তমানে অধ্যয়নরত রয়েছে শান্ত।
খেলাধূলার জগতে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার এক বন্ধু আমাদের বাড়িতে এসেছিল বেড়াতে। সে ফিরে যাওয়ার সময় বাড়ির পাশে শান্তর খেলা দেখে খুশি হয়েছিলেন। তখন শান্তর বয়স ১০ বছর। এসময় বন্ধু বলে এটা কার ছেলে। তখন আমি বলি (বাবা) আমার ছেলে। তখন বন্ধু বলে সে তো ভালো খেলছে। তাকে ক্রিকেটে ভর্তি করে দাও। শান্তকে প্রথমে সাদ ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করে দেয়। সেখান থেকে পরবর্তিতে ক্লেমন ক্রিকেট অ্যকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেয়।
নাজমুল হোসেন শান্তর বাবা জাহাঙ্গীর আলম রতন বলেন, শান্ত প্রতিদিন বাড়ি থেকে বাইসাইকেলে কাটাখালি যেত। এরপরে সেখানে সাইকেল গ্যারেজে রেখে বাস বা টেম্পুতে করে শিলোইল বাস টার্মিনালে আসতো। সেখান থেকে শান্ত রিক্সায় করে মাঠে যেতো প্রশিক্ষণে। আমার খেলাধূলার বিষয়ে কোন ধারণা ছিল না। যে খেললে কি হবে। আমার বন্ধুর কথা উপরে ধারণা করে শান্তকে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করে দেয়।
তিনি আরো বলেন, সে লেখাপড়ায় ভালো ছিল। ক্রিকেট খেলায় ভালো ছিল। তার পরে পুরো বিষয়টা ভাগ্যের উপরে ছেড়ে দিলাম। শান্তকে বললাম তুমি ভালো করে লেখাপড়া ও খেলাধূলা করো। শান্তকে খেলাপড়া ও খেলাধূলার কথা কখনো বলতে হয়নি। সব নিজের ইচ্ছে ও চাহিদাতেই ঠিকঠাক করছে। আমি দোয়া করি আগামিকাল শনিবারের (৭ অক্টোবর) বিশ^কাপ খেলায় বাংলাদেশ দল অনেক ভালো খেলুক।
ক্রিকেটার শান্তর মা নাসিমা খাতুন বলেন, আমাদের অনেক গর্ব হচ্ছে ছেলে দেশের হয়ে খেলছে। আমাদের গ্রামের মানুষ অনেক খুশি হচ্ছে। আমার ছেলে বিশ্বকাপে গেছে। সবাই আমাকে এসে বলছে এটা আমার খুব অনন্দ লাগছে।
নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি বিষয়ে বাবা রতনকে বলেছিলেন বাংলাদেশ ভলিবল দলের সাবেক অধিনায়ক হাফিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি শান্তর বাবা জাহাঙ্গীর আলম রতনকে বললাম একে সাদের ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করে দাও সে ভালো করবে। ভবিষ্যতে সে খুব ভালো করবে। তার এক সপ্তা থেকে ১০ দিনের মধ্যে প্রশিক্ষণ শুরু করে দেয়।
শান্তর প্রথম কোচ রফিকুল ইসলাম সাদ জানান, তার বাসা অ্যাকাডেমি থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে। শান্তর সবচেয়ে বড়গুন ঝর-বৃষ্টি যায় হোক প্রশিক্ষণে উপস্থিত থাকতো। প্রশিক্ষণে খুব মনোযোগী ছিল সে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়