শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২০
রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ঘিরে শীর্ষ দুই পদেই আসছে ‘চমক’। দীর্ঘ আট বছর পর আগামী ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল।
গত ৮ নভেম্বর আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তানোর উপজেলার স্থানীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে এ কথা নিশ্চিত করেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ২০১৩ সালের ৬ জানুয়ারি। টানটান উত্তেজনায় গতবার শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেই চলে যান কেন্দ্রীয় প্রয়াত নেতা মোহাম্মদ নাসিম।
এবার উত্তেজনার সেই পারদ উঠেছে আরও ওপরে। তাই কাউন্সিলকে ঘিরে এরই মধ্যে অনেক জল্পনা-কল্পনার ডালপালা মেললেও শেষ পর্যন্ত কী হতে যাচ্ছে তা জানেন না কেউ।
গতবারের মতো এবারও কি শুধু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নামই ঘোষণা করবে হাইকমান্ড, নাকি সরাসরি ভোটের মাধ্যমে কাউন্সিলররা তাদের নেতা নির্বাচিত করতে পারবেন তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন।
এছাড়া নতুন নেতৃত্বের যে ধারা সূচিত হচ্ছে তার হাওয়া তানোরের উত্তপ্ত রাজনীতিকেও শীতল করবে কি-না তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রত্যাশার ব্যাপ্তি আরও বিস্তৃত হয়েছে। তৈরি হয়েছে নতুন নতুন নেতা।
তাই এবারের উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি পদে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ও সাধারণ সম্পাদক পদে তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকারই যোগ্য নেতা বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন কর্মী ও সমর্থকরা। বহিষ্কৃত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাউন্সিলের মাধ্যমে ভোটই মূল সমাধান।
নেতা নির্বাচন করা উচিত দলীয় কাউন্সিলরদের ব্যালটের রায়ের মাধ্যমেই। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত না হলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খাদেকুন্নবী বাবু চৌধুরী।
সূত্র জানান, গত কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার প্রায় এক বছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়। সেই কমিটি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাদা ছোড়াছুড়ি চলতে থাকে।
পরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে দলের বিরোধী কার্যকলাপে জড়িয়ে ছিটকে পড়েন বহিষ্কৃত সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন বলে জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক রামকমল সাহা।
সম্প্রতি তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ঘিরে সভাপতি পদে মেয়র গোলাম রাব্বানী ও চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নাকে নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকরা ফেসবুকে ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। সে সঙ্গে প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকারকেও সাধারণ সম্পাদক পদে দেখতে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকরা দাবি তুলে প্রচারণায় রয়েছেন।
কিন্তু সাধারণ সম্পাদক পদে আবারও মামুন প্রার্থিতা ঘোষণা দিলেও তাকে নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে সাড়া নেই। এ সুযোগে কাউন্সিলরদের সুদৃষ্টি পেতে নিজের নানা ত্যাগ-তিতীক্ষার কথা তুলে ধরছেন তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার।
পাশাপাশি আগামী কাউন্সিলে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছেন হাইকমান্ডের সঙ্গেও। এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, একজন সঠিক নেতার জন্ম হয় রাজপথ থেকেই।
রাজনীতি করতে রাজত্ব লাগে না। লাগে নীতি, নৈতিকতা ও সৎসাহস আর আদর্শ। মুজিব আদর্শ বুকে ধারণ করে নেতাকর্মীর সুখে-দুঃখে পাশে থেকে রাজপথে সংগ্রাম করে এতদূর এসেছি। আগামীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে থেকে তানোর আওয়ামী লীগকে আরও জনবান্ধব ও শক্তিশালী করতে চাই।
তবে, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ছাড়া যাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ দেবেন তাকে নিয়েই আমরা দলকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করব বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে গোলাম রাব্বানী ও আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, কেন্দ্র কমিটি থেকে তারা বহিষ্কৃত নন। কোনো কারণে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের বহিষ্কার করে পত্র দেন। তবে, এখনও তাদের প্রতি তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আস্থা রয়েছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচন দেয়া হলেও তারাই আবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন বলে জানান তিনি।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়