মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ৫ ১৪৩০
|| ০৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২০
দুর্গাপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে রোপা-আমন কাটা মাড়াইয়ের কাজ চলছে। কৃষকরা জমি থেকে ধান নিয়ে যাওয়ার পর রাতে ঝুঁকি নিয়ে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করতে দেখা গেল বিধবা আইমনাকে। স্বামী নেই, একমাত্র ছেলে তাও আলাদা। একার সংসার হৃতদরিদ্র বিধবা আইমনার।
আইমনা থাকেন দুর্গাপুর পৌর এলাকার শালঘরিয়া গ্রামে। ইদুরের গর্ত থেকে সংগ্রহ করা ধানে তার একার সংসার চলে যায় বছরের প্রায় ছয় মাস। প্রতিবছর রোপা আমর ধান কাটা শেষ হতেই ঝুঁকি নিয়ে ঝরে পড়া ও ইদুরের গর্তের ধান কুড়াতে ব্যস্ত থাকেন তিনি। সংগ্রহ করা ধান দিয়ে ৬ মাস ভাত খায় সে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে রোপা-আমন কাটা চলছে। মাঠে কৃষকরা ধান কেটে রোদে শুকাতে দিচ্ছে। জমিতে ধানসহ খড় শুকিয়ে গেলে কৃষকরা জমি থেকে ধান ঘরে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর ওইসব জমিতে শিশু-কিশোর ও নারীরা হাতে খুন্তি-কোদাল, চালন, ডালা, বস্তা নিয়ে খুঁজে ফিরছে ইঁদুরের গর্ত। ইঁদুরের গর্তে জমানো ধান বস্তায় ভরে তারা। এছাড়াও জমিতে পড়ে থাকা ধানও কুড়িয়ে বস্তায় ভরতে দেখা গেল।
দরিদ্র নারী আইমনা বেওয়া জানান, মাঠে কৃষকরা ধান কেটে রোদে শুকাতে দেয়। খড় শুকিয়ে গেলে কৃষকরা মাঠ থেকে খড় সহ ধান ঘরে নিয়ে যায়। মাটিতে ধানের শীষ পড়ে থাকে। এছাড়া ইঁদুরের গর্ত খুঁড়লে পাওয়া যায় ধান। তিনি বলেন, স্বামী নেই। এক ছেলেও আলাদা। একার সংসারে প্রতি বছরই ধান সংগ্রহে বছরের অর্ধেক তার চাউল কেনা লাগে না।
মাঠে ধান সংগ্রহ করতে আসা আরেক নারী আনজু বেগম জানায়, আমরা বিভিন্ন মাঠে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করি। সব জমিতেই ইঁদুরের গর্ত পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, সংগ্রহ এ চালে ভাত খায় তারা। দুর্গাপুর পৌর এলাকার কৃষক আব্বাস উদ্দিন জানান, ধান কাটার পর মাটিতে পড়ে থাকা ধান অনেকেই সংগ্রহ করে, এতে আমরা বাধা দেই না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান জানান, খেতে এভাবে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করা ঝঁকিপূর্ণ কাজ। ইদুরের গর্তে সাপ ও বিষাক্ত পোকামাড়ক থাকতে পারে। তবে আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষকরা খেতে ধান কাটা ও মাড়াই করলে ধান মাটিতে পড়া এবং ইঁদুর নষ্ট করতে পারবে না। এতে কৃষকরাও উপকৃত হবেন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়