শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৭ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২০
ইরাকে মার্কিন দু’টি সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রায় আড়াই ঘন্টা আগেই এ বিষয়ে জানতে পেরেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণে নিরাপদে থাকতে মাটির নিচে খনন করা বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিল মার্কিন সেনারা। যার ফলে তারা প্রাণহানি ঠেকাতে সফল হয়েছিল।
রোববার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিষয়ক ও হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যার পর মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রতিশোধের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলো মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
তবে গোয়েন্দা সূত্র এবং ইরাকি সূত্র থেকে আড়াই ঘন্টা আগেই হামলার বিষয়টি জেনে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু কোন কোন স্থাপনা তারা লক্ষ্যবস্তু বানাবেন, তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
অগ্রিম তথ্য পাওয়ায় মার্কিন সেনারা বাঙ্কারে অবস্থান নেয়া এবং উপযুক্ত পোশাক পরার মতো পর্যাপ্ত সময় পেয়েছিল। এ কারণে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, গোয়েন্দা সূত্র থেকে প্রথম হুঁশিয়ারিগুলো আসে। এছাড়া ইরাকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও জানা যায় যে ইরান হামলা চালাতে ইচ্ছুক।
স্পর্শকাতর গোয়েন্দা তথ্য ও কূটনৈতিক যোগাযোগ নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা জানতাম, ইরাকিরা আমাদের বলেছেন, এই তথ্য কয়েক ঘণ্টা আগেই আসছিল।’
এদিকে প্রাণহানি এড়াতে ইরাকিদেরও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে যে দাবি করা হয়, অন্যরা এসব গুরুত্বহীন বলে দাবি করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যদি ইরাকিরা সতর্কবার্তা দিতেন, তবে এটা নিশ্চিতভাবে কয়েক ঘণ্টা আগে হওয়ার কথা না।
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে পূর্বাভাস দিতে পেন্টাগনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার ও জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলির সঙ্গে সিনিয়র কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন। এরপরেই তথ্য আসে যে, ইরান হামলা করতে যাচ্ছে।
পেন্টাগনে সাংবাদিকদের এসপার বলেন, ইরান সর্বমোট ১৬টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এরমধ্যে ১১টি আল-আসাদ বিমান ঘাঁটিতে গিয়ে পড়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘন্টা পর পর্যন্তও মার্কিন সেনারা নিরাপত্তামূলক অবস্থানে আত্মগোপন করে ছিল।
একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ন্যূনতম সংখ্যক সেনা পশ্চিম ইরাকের আল আসাদ বিমান ঘাঁটি থেকে হামলার আগেই সরে পড়েছিল। দ্বিতীয় একজন প্রতিরক্ষা বিষয়ক কর্মকর্তা বলেন, এ হামলায় কোনো সেনা নিহত হয়নি। এটা কোনো ভাগ্যের বিষয় না। সামরিক কমান্ডাররা ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং ভালো সাড়া দিয়েছিলেন।
হামলার পরে টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, আগেভাগে পাওয়া সতর্ক ব্যবস্থার ভূমিকার কথা। স্বীকার করেছেন, এতে প্রাণহানি ঠেকানো গেছে। প্রতিরক্ষা বিষয়ক একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি রাডার নেটওয়ার্কের বিষয়ে কথা বলেছেন। এই রাডার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র সনাক্ত করতে পারে।
এই তথ্যের আলোকে প্রতিবেদনটি বলেছে, কমপক্ষে দুটি গোয়েন্দা সূত্র যুক্তরাষ্ট্রকে আত্মরক্ষার পরিকল্পনা নিতে সময় দিয়েছে। প্রথমত, এমন ইঙ্গিত ছিল যে, ইরাকে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইরান। তবে এই তথ্য কোথা থেকে এসেছে তা পরিষ্কার নয়।
আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইরাক সরকারের ভেতর থেকে সুস্পষ্ট কিছু তথ্য পেয়েছিল মার্কিন সেনারা। পেন্টাগন বুঝে নিয়েছিল ইরান প্রতিশোধ নেবে।
দ্বিতীয় সতর্কতা এসেছিল টেকনিক্যাল উপায়ে। রিপোর্ট অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে সামরিক স্যাটেলাইট। এগুলো ব্যবহার করে উৎক্ষেপণের সামান্য পরেই ক্ষেপণাস্ত্র সনাক্ত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তারা সঙ্গে সঙ্গে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পারে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়