বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১১ ১৪৩১
|| ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২১
বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম দেশের কৃতী সন্তান শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান। বাবার সেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রগতিশীল রাজনৈতিক আদর্শকে ধারণ করে রাজশাহীর উন্নয়নের কারিগর হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। জাতীয় নেতা শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামানের পর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে স্থান পেয়েছিলেন প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।
১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে তিনি দল ত্যাগ করে সেই পদটি হারিয়েছিলেন। এরপর দীর্ঘ সময় পরে দলের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়ামে অর্ন্তভুক্ত হলেন সফল মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তার এই অগ্রযাত্রাকে উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক চর্চায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
রাসিক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতার কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে অতিষ্ঠিত হওয়ায় প্রত্যাশা ও অনুভূতি প্রকাশ ব্যক্ত করে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য প্রফেসর আব্দুল খালেক বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম নেতা শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি আত্মত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তার সুযোগ্য উত্তরসূরি রাসিক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটন বড় জায়গায় অধিষ্ঠিত হোক এটা আমার ব্যক্তিগত স্বপ্ন।
এটা শুধু আমার নয়; রাজশাহীবাসীর স্বপ্ন। জাতীয় নেতার এই সুযোগ্য সন্তানকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এই পদে মনোনিত করার মহৎ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমারসহ রাজশাহীবাসীর স্বপ্ন পূরণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মেয়র হিসেবে লিটনের যে দক্ষতা ও বংশীয় পরিচয় সবমিলিয়ে তিনি এই পদের যোগ্য। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে নতুনদের মূল্যায়ণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা সেই মূল্যায়ন করেছেন। এতে রাজশাহীবাসী গর্বিত। দেশের ঐতিহ্যবাহী এই রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়া গর্বের। সুতরাং মেয়র হিসেবে সে যেমন যোগ্যতা-দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে, তেমনি রাজশাহীর উন্নয়নে যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে হবে। সরকার পরিবর্তন হয় কিন্তু দল পরিবর্তন হয় না। আর দল শক্তিশালী হলেও ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
সুতরাং দলকে শক্তিশালী করতে উত্তরাঞ্চলের রাজনীতিকে চাঙ্গা করতে লিটন যোগ্যতর।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামানের পুত্র খায়রুজ্জামান লিটনকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে অর্ন্তভুক্ত করাই রাজশাহীবাসীর পক্ষ থেকে তাকে সাধুবাদ জানাই। উত্তরবঙ্গে মৌলবাদী রাজনৈতিক চর্চার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সবসময় সোচ্চার থেকেছে।
প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির চর্চায় মেয়র লিটনের বলিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। রাজশাহীর উন্নয়নে তার অবদান প্রশংসার দাবি রাখে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী জায়গায় গিয়ে লিটন শুধু উত্তরবঙ্গের নয়; জাতীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন লিটন।
জাতীয় পার্টির রাজশাহী মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন মিন্টু বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের অন্তর্ভুক্তি রাজশাহীবাসীর জন্য সুখবর। তার পিতা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান দেশের ক্লান্তিলগ্নে হাল ধরেছেন।
জাতীয় এই নেতার সন্তান খায়রুজ্জামান লিটনও দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন। নাসিম সাহেবের মৃত্যুর পর এ অঞ্চলের কেউ ওই দলের প্রেসিডিয়ামের সদস্য ছিলেন না। দীর্ঘ দিন পরে হলেও মেয়র লিটন সেই জায়গায় গেছেন। এতে এ অঞ্চলের রাজনীতিতে নেতৃত্বের শূত্যতার জায়গাটা অনেকটাই পূরণ হলো। এটা উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য গৌরবের।
আর আমি আশা করি এরমধ্যে দিয়ে এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ¦ রয়েছে তার অবসান হবে। সর্বোপরি উত্তরবঙ্গে প্রগতিশীল রাজনৈতিক চর্চায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন লিটন। তার প্রতি শুভকামনা থাকবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, শহিদ কামারুজ্জামানের যোগ্য উত্তরসূরি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটন শুধু মহানগর না; এই অঞ্চলের অভিভাবক। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়ামে তার অন্তর্ভূক্তি এটা আমাদের অনেক আগের চাওয়া। কিন্তু আমরা অনেক পরে সেটা পেলাম। তবে দেরিতে হলেও আমরা পেয়েছি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। খায়রুজ্জামান লিটন এ অঞ্চলের রাজনীতিকে আরও গতিশীল করার পাশাপাশি রাজশাহীর ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করবেন।
তিনি আরও বলেন, মেয়র এরইমধ্যে নগরীকে একটি মডেল শহর হিসেবে গড়ে তুলেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দায়িত্ব পাওয়ার মধ্যে দিয়ে তিনি পিছিয়ে থাকা এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারবেন। অনেক সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হতাম। তার নেতৃত্বে সেটা থেকে আমরা উত্তরণ ঘটাতে পারবো।
বাংলাদেশ ওর্য়াকার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু বলেন, জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহিদ এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে অন্তর্র্ভূক্ত করার যে সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনা নিয়েছেন এটা সময়-উপযোগী ও যথাযথ সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।
তার এই অন্তর্ভূক্তি উত্তরাঞ্চলের রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ ওর্য়াকার্স পার্টির সঙ্গে ঐক্য আরও মজবুত হবে। উন্নয়নবঞ্চিত এই জনপদকে বাংলাদেশ ওর্য়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন একসঙ্গে মিলে উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করবেন। সর্বোপরি বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার যে লড়াই তা আরও বেগবান হবে।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, জাতীয় চার নেতার সুযোগ্য সন্তান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এ অঞ্চলের অভিভাবক। তার এই অন্তর্ভূক্তি এ অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতি চর্চাকে আরও ত্বরান্বিত করবে। আওয়ামী রাজনীতিকে আরও গতিশীল করবে। উন্নয়নের ধারাকেও গতিশীল করবে। সবমিলিয়ে রাজবাসীর জন্য এটা বড় পাওয়া।
সিপিবি’র রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও রাকসুর সাবেক ভিসি রাগিব হাসান মুন্না মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামানের উত্তরোত্তোর সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়