শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট ২০২০
রাজশাীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলের চরকালিদাসখালী চরে নূরজাহান বেগমের বাড়ি। নদীভাঙনে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি বাড়ি ঝি এর কাজ করতেন। প্রতিদিন ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকার বেশি আয় হতো না।
৫ সদস্যের পরিবার। ৫ বছর আগে স্থানীয় এক সংস্থা থেকে ৫ জোড়া কবুতর দেয়া হয়। এই কবুতর তাঁর ভাগ্য বদলে দিয়েছে। বর্তমানে তাঁর ৫০ জোড়াতে উন্নত হয়েছে।
নুরজাহান বেগম জানান, নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে বসতভিটা ছিল না। ভাঙনের ফলে অনেক মানুষের সঙ্গে তিনি পদ্মার মধ্যে চরকালিদাসখালী গিয়ে আশ্রয় নেন। অন্যের জমিতে দিনমজুরি খেটে ও ঝি এর কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। এক বেলা খাবার জুটলেও আরেক বেলা জুটত না।
নুরজাহান বেগমের অবস্থা ছিল এ রকম। আর আজ তিনি অনেকটাই স্বচ্ছল। কেমন করে বদলালেন তাঁর অবস্থা উত্তরে জানান, ‘আমার ভাগ্য বদলায়ে দিয়েছে কবুতর।
পদ্মার চরাঞ্চলে এক হাজার ৪৮২টি হতদরিদ্র পরিবার নিয়ে চরস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ওয়াশ, প্রশিক্ষন, সচেতনতা তৈরি, বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ, গরু মোটাতাজাকরণ, উচ্চ ফলনশীল এবং উচ্চমূল্যের শস্য ও সবজি চাষাবাদ, ছাগল পালন, হাস মুরগি পালন, হস্তশিল্প, বেনারশী, সেলাই, নারী নেতৃত্বের বিকাশ, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ রোধ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, এইচ আইভি এইডস, ক্ষুদ্র ব্যবসার উপর স্থানীয় এক সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে পদ্মার চরের মানুষ অনেকটাই স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে।
পদ্মার চরাঞ্চলে নূরজাহান বেগমের দেখাদেখি চরাঞ্চলের জয়নব বেগম, রজিনা বেগম, শরিফা বেগম, মহনা বেগম, রজিনা খাতুন, সাবিনা বেগম, গুল বাহার বেগম কবুতর পালন করে অবস্থা বদলের অনেক কাহিনি শুনতে পাওয়া যায় পদ্মার চরাঞ্চলে গিয়ে।
বন্যা আর নদী ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবন কাটানো চরবাসীর জীবনে অর্থনৈতিক দুর্দশা প্রায় স্বাভাবিক ঘটনা। তবে কবুতর পালনের মধ্যে দিয়ে দৈন্যদশা ঘুচে স্বচ্ছলতা এসেছে তাদের জীবনে।
এ বিষয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল আযম জানান, বছর খানেক আগেও চরে এত কবুতর ছিল না। ওই সময় হাতে গোনা দু/একজন সৌখিন হিসেবে কবুতর পালন করত।
এখন চরের প্রায় বাড়িতেই গড়ে উঠেছে কবুতর পালন খামার। চরে কবুতর পালনের হিড়িক পড়েছে। বর্তমানে অনেক পরিবার কবুতর পালনে ভাগ্য বদলে যাচ্ছে। কবুতর পালনের মাধ্যমে অনেকেই সুখের দেখা পাচ্ছেন।
কবুতর পালন অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তবে চরাঞ্চল এলাকায় কবুতর পালনের খরচ অন্য এলাকার তুলনায় অনেক কম। এজন্য কবুতর পালনের হার বেশি।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়