শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২০
বরেন্দ্র অঞ্চলের গেরুয়া প্রান্তর তানোর উপজেলা। কৃষি নির্ভর এই উপজেলায় ধান প্রধান ফসল। আর ধানের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করে চলেছেন কৃষক নূর মোহাম্মদ।
স্বশিক্ষিত এই ধান গবেষক প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ধানের জাত নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছেন। তানোর পৌর এলাকার গোল্লাপাড়া বিলকুমারীবিল সংলগ্ন তার ধান ক্ষেত। ছোট ছোট অনেকগুলো সাইনবোর্ড সমস্ত ক্ষেতজুড়ে শোভা পাচ্ছে।
কাছে গিয়ে দেখা যাবে বেগুনি, সোনালী, সবুজ, খয়েরি, সাদাগুঠিসহ নানা প্রকারের ধানে ভরপুর ক্ষেত।
তবে শুরুতেই যে কেউ দেখলে ভাববেন এটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের কোন প্রর্দশনী প্লট। কিন্তু না, এটি গ্রামের প্রান্তিক কৃষক নূর মোহাম্মদের নিজস্ব ধান গবেষণার প্রদর্শণী প্লট।
এ প্লটে চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ৩৭ প্রকার জাতের ধান শঙ্করায়নের মাধ্যমে নতুন ধান উদ্ভাবন করেছেন তিনি।
গ্রামের কৃষকরা জানান, প্রান্তিক কৃষক নূর মোহাম্মদের শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো সনদ নেই, তবে তার আছে ধান নিয়ে নতুন নতুন উদ্ভাবন চিন্তা। সঙ্করায়ণ করে একের পর এক নতুন ধান উদ্ভাবন করছেন তিনি।
স্বশিক্ষিত এই বিজ্ঞানীর কাজ আমলে নিয়েছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরাও। ধানগুলো জাত হিসেবে স্বীকৃতির অপেক্ষায় রয়েছে।
গ্রামের লোকজন জানান, কৃষক নূর মোহাম্মদ ধান বিজ্ঞানী হিসাবেই উপাধি পেয়েছেন এই বরেন্দ্র অঞ্চলে। এমনকি কৃষি সম্প্রসারণ অফিসগুলোতেও সবাই তাকে বিজ্ঞানী নূর মোহাম্মদ নামেই চেনেন।
তার বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার গোল্লাপাড়া গ্রামে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। বরেন্দ্র ভূমিতে প্রায় প্রতিবছরই খরায় নষ্ট হয়ে যায় ধান। সেই ধান রক্ষা করতেই কাজে লেগে যান তিনি। নিজের মাটির ঘরটাকে বানিয়ে ফেলেছেন হারানো ধানের গবেষণাগার।
জানা যায়, নতুন ধান ও প্রায় বিলুপ্ত ধান মিলে নূর মোহাম্মদের কাছে সংরক্ষণ করা আছে এমন ধানের জাতের সংখ্যা ৩০০টি। সর্বশেষ তিনি একটি নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।
তার দাবি, দেশে প্রচলিত বোরো ধান বপন থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত ১৪০ দিন লাগে। তার উদ্ভাবিত এই ধান বোরো মৌসুমে বপন থেকে ১৩০ দিনের মধ্যে কাটা যাবে। তিনি খরাসহিষ্ণু এই ধানের নাম দিয়েছেন ‘এনএমকেপি-১০৫’।
এনএমকেপির অর্থ হচ্ছে ‘নূর মোহাম্মদ কৃষি পরিষেবা’। প্রথম দিকে তিনি এনএমটি অর্থাৎ ‘নূর মোহাম্মদ তানোর’ নামে ধানের নামকরণ করতেন।
কৃষক নূর মোহাম্মদ জানান, চলতি বোরো মৌসুমে তার এক একর জমিতে ৩৭ জাতের ধান শঙ্করায়ণের মাধ্যমে উদ্ভাবন করেছেন। এগুলো এখন পাক ধরেছে। কিছু কর্তন শুরু হয়েছে। ধানের শুধু নম্বর প্লেট দেয়া রয়েছে।
ক্ষেতের এসব ধান কৃষি কর্মকর্তারা দেখে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করবেন। কোন কোন জাতকে স্বীকৃতির দেয়া হবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়