শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২২
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গ্রোগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় ৬ নং ওয়ার্ডের বিড়ইল গ্রাম থেকে বিল পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় বর্ষায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী। তবে বর্ষা মৌসুম আসলে এই ভোগান্তির যেনো শেষ থাকে না। অল্প বৃষ্টিতেই এই রাস্তাটি কাঁদায় পরিণত হয়ে চলাচলের সম্পন্ন অনুপোযোগী হয়ে পড়ে এমনটাই অভিযোগ ওই গ্রামের বসবাসকারী বাসিন্দাদের।
এলাকাবাসী জানান, আমরা এই গ্রামে বসবাসকারীরা চরম ভাবে অবহেলিত। ভোট আসে ভোট যায়। জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় নানান প্রতিশ্রুতি দেয় রাস্তাটি পাকা করে দিবে বলে। তবে কেউই এই রাস্তাটি পাকা করনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে না। ফলে যুগের পর যুগ রাস্তাটি কাঁচা থেকে যাচ্ছে। আর বর্ষাসহ বিভিন্ন সময়ে আমাদের চরম দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে দিন যাপন করতে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রোগাম ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বিড়ইল গ্রামের মোড় হতে বিল পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তাটি অল্প বৃষ্টির পানিতেই খনাখন্দে আর কাঁদায় পরিণত হয়ে যায়। ফলে এই অল্প পরিমাণ রাস্তার উপর নির্ভরশীল বিড়ইল, শ্রীরামপুর, সোনাডাইং, মধু ডাইং দাদৌড় ও আদারপাড়া গ্রামের প্রায় চার হাজার মানুষ বন্দি হয়ে পড়ে। ঠিকমত চলাচল না করতে পারায় চরম অসুবিধার মধ্য দিয়ে কাঁদা পানির মধ্য দিয়েই চলাচল করতে হয়।
এতে দূর্ভোগ বেড়ে যায় চরমে। প্রায় ৫টি গ্রামের বসবাসকারি মানুষের একমাত্র চলাচলের রাস্তা এটি। আর এসব গ্রামের মানুষ অধিকাংশ পেশায় কৃষি কাজে নিয়োজিত এবং কৃষি পণ্য ধান,গম, চরিষা, ভূট্টাসহ বিভিন্ন ফসল ঘরে তোলার জন্য ব্যবহৃত গরুরগাড়ী, ট্রলি, ভুটভুটিসহ বিভিন্ন পরিবহন চলাচল করতে পারে না। ঝুঁকি নিয়ে এসব গাড়ী মাঠে নিয়ে ফসল পরিবহন করলে রাস্তার কাঁদায় পুতে যায়। আবার কখনো উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে বলে এলাকাবাসী জানান।
বিড়ইল গ্রামের বসবাসকারি মুশফিক মিলন জানান, আমাদের গ্রামটি চরম ভাবে অবহেলিত। সরকার দেশে নানান জায়গায় উন্নয়ন করলেও সামান্য আমাদের গ্রামের রাস্তাটি নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এই এলাকার শিক্ষার্থীরা ঠিকমত বর্ষা মৌসুমে স্কুল-কলেজ যেতে পারে না। কৃষকদেরও নানান সমস্যা হয়। তাই রাস্তাটি নির্মানের জন্য স্থানীয় এমপিসহ জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদত, একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী বেহুলা জানান, বর্ষা মৌসুমে আমাদের গ্রামটি কাঁদায় পরিণত হয়। ফলে চলাফেরা করতে পারা যায় না । সময় মত স্কুল-কলেজে যেতে পারিনা। পরীক্ষার সময় কাঁদার করণে হাতে জুতা সেন্ডেল নিয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। এতে করে সময় নষ্ট ও লেখাপড়ায় বিঘ্ন হয়। তারা আরো জানান, আমরা টির্ভি-পত্রিকা, ফেসবুকে দেখছি দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে তবে আমাদের এই রাস্তার কোন উন্নয়ন দেখছিনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ওই গ্রামের কৃষক আজাদ আলী, আলাউদ্দীন বাবু, কবির হোসেনের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমর এই এলাকায় কৃষি আবাদ করে খায়। এই গ্রামের রাস্তাটি এখনো কাঁচা থাকায় ধুলোমাটি আর কাঁদায় পরিণত হয় । বিশেষ করে বর্ষায় কাঁদার গ্রাম হিসেবে পরিচিত পায়। সময় মতো আবাদি ফসল ঘরে তুলতে পারিনা। গরুরগাড়ী, ট্রাক্টক, টলি, ভুটভুটি পুতে যায়। ফলে কোন কোন সময় ফসল মাঠেই পড়ে থাকে তাই এই রাস্তাটি জরুরী ভাবে নির্মানের জন্য আবেদন জানান সরকারের প্রতি।
এই রাস্তার বিষয়ে গ্রোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, বর্ষ আসলে রাস্তাটি দিয়ে বড় ট্রাক্টর, ট্রলি চললে তা গর্ত ও কাঁদা হয়। তবে রাস্তাটি পাঁকা করনের জন্য এলজিইডির তালিকায় দেওয়া আছে। যে কোন সময় অনুমোদন হয়ে গেলে তার কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানান।
এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী সাদরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা রাস্তাঘাট নির্মাণ ও উন্নয়নের জন্য দুই ভাবে কাজ করি। একটি স্থানীয় এমপির ডিও লেটারের মাধ্যমে অন্যটি এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে। তবে এলাকাবাসী রাস্তাটি নির্মানের জন্য আমাদের দপ্তরের আবেদন করলে তা পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।
এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিড়ইল গ্রামের রাস্তার বেহাল দশার কিছু ছবি আমি দেখেছি। দ্রুত রাস্তাটি নির্মানের জন্য আগামীতে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস প্রদান করেন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়