শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২১
আজ ১৩ এপ্রিল, চারঘাট গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে চারঘাট উপজেলার সারদা থানাপাড়া, গোরশহরপরে, কুঠিপাড়া ও চারঘাট গোপালপুরসহ চারঘাটের আশেপাশের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করছিল ।
তাই প্রতি বছরের মত এবারেও চারঘাট গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করবে। তবে মহামারি করোনার কারণে কোন আনুষ্ঠানিক ভাবে নয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ নিজ পরিবারের সদস্যরা কবর জিয়ারত করবে এবং শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করবে বলে জানিয়েছেন গণহত্যায় লাশের স্তুপ থেকে ফিরে আসা রায়হান আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকাররম হোসেন হেজু।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালের ১৩ই এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে চারঘাটের শান্তিপ্রিয় মানুষ চৈত্রের হাড়ভাঙ্গা খাটুনী শেষে একটু বিশ্রামের আশায়, ঠিক সেই সময় মেশিনগানের গুলির শব্দ প্রকম্পিত হয়ে উঠে এলাকা, আতঙ্কিত হয়ে এলাকাবাসী প্রাণভয়ে ছুটাছুটি শুরু করে দেয়।
এ সময় থানাপাড়াসহ আশেপাশের অনেকেই আশ্রয় নেয় পদ্মার চরে। পাকহানাদাররা তৎকালীন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি) বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ঢুকে দূর থেকে দেখতে পায় পদ্মার চরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের। তারপর তারা দ্রুত চলে যায় পদ্মার চরে আশ্রয় নেওয়া নিরীহ মানুষদের ঘিরে ফেলে।
এ প্রসঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শী থানাপাড়া গ্রামের রায়হান আলী জানান, অস্ত্রে সজ্জিত পাক হানাদার বাহিনী সায়রেন বাজিয়ে সারদায় অবস্থিত তৎকালীন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার লুট করা অস্ত্র উদ্ধার করতে আসে।
পাক বাহিনী পুলিশ একাডেমির ভিতর ঢুকে পদ্মা নদীর চরে ভীত সন্ত্রস্ত নিরস্ত্র কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু দেখতে পায়। পাক হানাদার বাহিনী পদ্মার চারপাশে জমায়েত লোকজনদের ঘেরাও করে। পুরুষদের অপেক্ষা করতে বলে এবং নারী ও শিশুদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
শুরু হয় ব্রাশফায়ার, সারি সারি স্বজনের মৃতদেহ। শুধু গুলি করেও ক্ষান্ত হননি হানাদার পাকবাহিনী, মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে লাশগুলো এক জায়গায় করে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পর প্রতিবছর থানাপাড়াবাসী এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করে আসছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়