বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
আবুল কালাম আজাদ সনি, চারঘাট
প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২০
তাঁরা ১৮ জন। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, তাই প্রচার-প্রচারণাও বাড়িয়ে দিয়েছেন। লক্ষণীয় হলো, তাঁরা প্রচারকাজ করছেন স্কুল ছুটির পরে নয়, ক্লাস চলাকালেই। এতে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে পুরো উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকেরা। এই চিত্র রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার।
জানা যায়, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি চারঘাট উপজেলা শাখার নির্বাচন হবে ১৬ই জানুয়ারি। নির্বাচনে মোট পদ রয়েছে ২৫ টি।এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছে ১৯ টি পদে। বাকি ৬ টি পদে পার্থী রয়েছে ১৮ জন।এতে সভাপতি পার্থী ০৩ জন,সহ-সভাপতি পার্থী(পুরুষ) ০৩ জন, সহ-সভাপতি পার্থী(মহিলা) ০২ জন, সাধারন সম্পাদক পার্থী ০৬ জন এবং অন্য দুটি পদে ০৪ পার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এই পদপ্রার্থী শিক্ষকগণ প্রায় প্রতিদিনই স্কুলে হাজিরা দিয়ে নির্বাচনী প্রচারনায় বের হচ্ছেন।তবে দুই একজন পার্থী এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। আর এসকল পার্থীদের সঙ্গে প্রচারে যোগ দিয়েছেন আরও প্রায় ২৫ জন শিক্ষক। তাঁরা প্রতিদিন উপজেলার ৭৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, উপজেলার পরানপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়বড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মেরামাতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানগণসহ আরো প্রায় ডজন খানেক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করেই নির্বাচনী প্রচারকাজে অংশ নিচ্ছেন। অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরা স্কুলে স্কুলে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের এক কর্মকর্তাও এক পার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার কাজে অংশ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্কুল বাদ দিয়ে ভোটের প্রচার কাজে ব্যস্ত থাকায় সচেতন অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
হাফিজুর রহমান নামের এক অভিভাবক বলেন, শিক্ষকতা সম্মান জনক পেশা। কিন্তু শিক্ষার পেছনে সময় না দিয়ে স্কুল ফাঁকি দিয়ে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকাটা অনেক দুঃখজনক। এতে শিক্ষার মান নষ্ট হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনায় অনেক পিছিয়ে পড়ছে।এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন তিনি।
স্কুল ফাঁকি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারনা চালানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে সহ-সভাপতি পদ পার্থী শিমুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লাইলা পারভীন বলেন, আমি স্কুলের প্রয়োজন ব্যতীত একটু সময়ের জন্যও বের হইনি। স্কুলের কাজেই ডাকরা ও চারঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ অসত্য।
চারঘাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমি এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না, সেজন্য নির্বাচনের খবর তেমন জানিনা। তবে স্কুল বাদ দিয়ে নির্বাচনের কাজে অংশ নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই।এটা সম্পূর্ণ অনিয়ম।
এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) লুৎফর রহমান বলেন, ‘স্কুল ছেড়ে কোনো শিক্ষক নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারেন না।’আমরাও এ বিষয়টা নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছি। শিক্ষকরা মোবাইল ফোনে কিংবা স্কুল সময়ের পরে নির্বাচনের কাজে অংশ নিতে পারবে।কিন্তু অনেকেই নিয়ম মানছেন না। শিক্ষা অফিসার কম থাকার কারনে সবাইকে নজরে রাখাও সম্ভব হচ্ছেনা।তবে বিষয়টা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
এমএমআই
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়