শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৭ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২০
রাজশাহীর চারঘাটে হটাৎ লকডাউন গুজবে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন কয়েক মাসের খাদ্য আগাম কিনে রাখতে। আর এ সুযোগে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দাম ইচ্ছেমত বাড়িয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীরা।
কিছু দ্রব্য ইতিমধ্যে বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে। যা ভাবিয়ে তুলেছে সাধারণ ক্রেতাদের। এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারগুলোতে ক্রেতাদের সচেতন করে প্রচারনাও চালানো হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগির সংখ্যা বৃদ্ধির সংবাদে আতংকে থাকা সাধারণ মানুষের মনে আরো গভীর আশংকা সৃষ্টি হয় বৃহস্পতিবার শিবচর উপজেলা লক ডাউন ঘোষণা করায়।
একই সাথে রাজশাহী থেকে সারাদেশে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নতুন নতুন শংকার গুজব ছড়িয়ে পড়ছে এলাকায়। এতে অতি অল্প সময়ে সারাদেশে লক ডাউন অথবা গণ কার্ফিও জারি হতে পারে এমন গুজবে বৃহস্পতিবার থেকে মধ্যবিত্ত ও বিত্তশালীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন বাজারে।
তারা বস্তায় বস্তায় চাউল, ডাল, আলু, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, শুকনো বিভিন্ন প্রকার খাবারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, হেক্সিসল ইত্যাদি কিনে নিচ্ছেন। আর এ সুযোগে অসৎ ব্যবসায়ীরা প্রত্যেকটি পন্যের দাম অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে দরিদ্র মানুষ।
সরেজমিনে গত শুক্রবার সকালে চারঘাট সদরের বড় বাজার,সরদহ বাজার ও নন্দনগাছী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রত্যেকটি পণ্যের দাম অনেক বেশি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। হ্যান্ডওয়াশসহ কোন কোন পণ্য আবার বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। চারঘাট বাজারের সবজি ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন জানান, তিনি যে চাউল প্রতি ৫০ কেজির বস্তা ২৩’শ টাকায় কিনতেন সে চাউল শুক্রবার ২৮’শ ৫০ টাকা দাম চেয়েছেন ব্যবসায়ী।
পরে অনেক বলার পর ৫০ টাকা কমানো হয়। একইভাবে প্রতিকেজি আলুতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। বুধবার আলুর কেজি ১৪ টাকা। তা শুক্রবার সকাল থেকে হয়ে যায় ১৯ টাকা কেজি। প্রতি কেজি ৩৫ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, মসুর ডাল প্রতি কেজি বেড়েছে ১০-২০ টাকা, চিনি বেড়েছে ০৮ টাকা। এদিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, প্রত্যেক ক্রেতাই অতিরিক্ত পরিমানে পণ্য ক্রয় করছেন।
কেউ কেউ গাড়ি ভর্তি পন্য কিনে নিয়ে সঞ্চয় করছেন ভবিষ্যতের জন্য। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চন্দনশহর থেকে আসা এক গৃহবধূ সপ্না আক্তার বলেন শুনেছি মাদারীপুরের শিবচরে সবাইকে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। রাজশাহী থেকেও গাড়ি ছাড়া বন্ধ হয়ে গেছে।
শুনছি আমাদের এখানেও লকডাউন করে দেবে। তখন খাব কি? একই কথা বলেন পৌর সদরের মাহাবুব হোসেন। তিনি বলেন, প্রথমে স্কুল-কলেজ বন্ধ হলো। এখন শিবচর লকডাউন। রাজশাহীর সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বন্ধ। এরপর যে আমাদের এখানে লকডাউন হবে না তা কে বলবে? আর আমাদের এখানে লকডাউন হলে তো অন্যদেশের মত সরকার খাবার পাঠাবে না।
আমরা তখন কি করে চলব? চারঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, গত দু-তিন দিন ধরে হটাৎ বেচাকেনা অবিশ্বাস্য বেড়ে গেছে। মানুষ কয়েক মাসের জন্য নিত্য পণ্য কিনে রাখছেন। অন্যদিকে কিছু কিছু পণ্য বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে দামও কিছু কিছু বাড়ছে। তবে দাম নিয়ন্ত্রনে রাখতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা সামিরা বলেন,নিত্যপণ্য নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। আমাদের দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য আছে। কোন ব্যবসায়ী যেন সুযোগে বেশী দাম নিতে না পারে সেদিকে আমরা খেয়াল রাখছি, প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ এবং তা থেকে সচেতন থাকার পাশাপাশি উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
স/র
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়