শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
আবুল কালাম আজাদ সনি, চারঘাট
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
বিশ্বের সবচেয়ে যে কয়েকটি বিষধর সাপ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম রাসেল ভাইপার। ধারণা করা হতো এ সাপ বাংলাদেশ থেকে অন্তত ২৫ বছর আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু নতুন করে রাসেল ভাইপারের উপদ্রব বেড়ে গেছে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা সংলগ্ন পদ্মা নদীর আশেপাশে। গত ছয় মাসে এ সাপের কামড়ে অন্তত তিন জন মারা গেছে।
এছাড়াও সাপের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে আরো দুজন। জানা যায়, পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উপজেলা চারঘাট।
গত নভেম্বর মাসে পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করলে উপজেলায় সাপের উপদ্রব বাড়তে থাকে।
গত ০২ নভেম্বর (শনিবার) উপজেলা প্রশাসন বড়াল সংলগ্ন বালুঘাট থেকে একটি রাসেল ভাইপার সাপ উদ্বার করে বন্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন। তার এক সপ্তাহ পর আরো দুইটি রাসেল ভাইপার সাপ চর সংলগ্ন লোকালয়ে চলে আসলে স্থানীয়রা মেরে ফেলে।
পরবর্তীতে গত ৩০ শে নভেম্বর (শনিবার) রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা যায় উপজেলার গোপালপুর মৃত গ্রামের সাদে মানিক এর ছেলে জামাল উদ্দীন(৩২)। মৃত্যুর আগে সাপে কাটার পরে জামাল উদ্দীন ৭দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এছাড়াও উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের সিপাইপাড়া গ্রামের একজন ও রাওথা গ্রামের একজন পদ্মার চরে গিয়ে সাপের কামড়ে মারা গেছেন।
আরো জানা যায়, গত সোমবার (১৭ফেব্রুয়ারি) সাপে কামড়ায় কমেলা বেগম(৪৫) নামের এক গৃহবধুকে। তিনি গোপালপুর গ্রামের মাকবেল আলীর স্ত্রী। বাড়ির পাশের পদ্মার চরে গমের ক্ষেত দেখতে গেলে সাপে ছোবল দেয় তাকে। তিনি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রতিনিয়ত এরকম বিষধর সাপের উপদ্রবে দিশেহারা হয়ে গেছে পদ্মার চরের চাষীরা। তারা তাদের কষ্টের ফসল ঘরে তোলা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা নিজাম উদ্দীন বলেন, রাসেল ভাইপার আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে পদ্মাপারের মানুষদের। কেউ এখন পদ্মার চরে যেতে সাহস পাচ্ছে না। অনেক টাকা খরচ করে চরে গম ও আলুর আবাদ করেছি। কিভাবে ঘরে তুলে আনবো বুঝতেছি না। দুশ্চিন্তায় আছি আমরা। এদিকে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের জীবন রক্ষাকারী ইঞ্জেকশন অ্যান্টিভেনম নেই। অ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ থাকায় উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাপে কাটার চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বিপাকে পড়ছে। ফলে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৩০ কিলোমিটার দুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। এতে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করতে গিয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে।
এ ব্যাপারে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান বলেন, উপজেলা পর্যায়ে সাপে কাটা রোগীদের জন্য অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নেই। তাই হাসপাতালে সাপে কাটা রোগী এলে রাজশাহী পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এতে অনেকেরই জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে। তবে আমরা খু্ব দ্রতই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম সরবারহ পাবো।
স/এমএস
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়