শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৫ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
এম এম জামান
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০১৯
ফাইল ছবি।
যৌবনকালের সুন্দরী বান্ধবী কাম বড় বোন, পরবর্তীতে লিংগ সুবিধার এক মাননীয় এমপির সাথে কমপক্ষে দেড় যুগ পর দেখা গুলশান আড়ং এ, আমি ওনারে দেইখা খুব সহজেই চিনলাম, মনে রাখার মতই চিহারা মুবারক তার।
আমি ফ্যালফ্যাল কইরা তাকাইয়া আছি, উনিও আমার দিকে তাকাইলেন, মুখ ভঙ্গি দেইখা বুঝলাম আমারেও হালকা চেনা চেনা লাগছে তার। অথচ কতই না ঘনিষ্ঠ ছিলো একসময়। চেহারা সিরিয়াসলি ম্যাটারস!
বললেন, চেনা চেনা লাগছে। মনে মনে বললাম তাও কম কিসে, যেই চেহারা আমার! আর মুখে বললাম, আপনাকে আমি ঠিকই চিনছি। বললেন, কি জানি করেন ভাইয়া? (ভাগ্যিস আঙ্কেল বলে নাই) বললাম, সরকারি চাকর।
কোন ডিপার্টমেন্টে? ফুড ডিপার্টমেন্টে।
তাই? এই ডিপার্টমেন্টে তো আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছে। নাম জামান। একটু মোটাসোটা, কালো। চিনেন?
কপাল! আমারেই জিগায় আমি আমারে চিনি কিনা।
বললাম, চিনি। দেখা হইলে আপনার কথা বলব বলে সসম্মানে বিদায় নিলাম। আর মনে মনে ভাবলাম, চেহারা ভেরি সিরিয়াসলি ম্যাটারস।
আমারে মনে রাখছে, আমার সাইজ মনে রাখছে, নামও মনে রাখছে, মনে রাখতে পারে নাই শুধু চেহারা।
চেহারা সিরিয়াসলি ম্যাটারস!
কুমিল্লায় পোস্টিং তখন, এক অনুষ্ঠানে লম্বা দাড়িওয়ালা এক লোকের সাথে পরিচয়। কথার সুত্র ধরে জানাইলেন আমার ডিপার্টমেন্টে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু/সহপাঠী আছে নাম জামান। পরে অবশ্য দুইজনই লজ্জা পাইছিলাম। কারন হেফাজতি দাড়ির কারনে আমিও তারে চিনি নাই।
বুঝলাম ছেলেদেরও মনে থাকেনা। চেহারা সিরিয়াসলি ম্যাটারস।
ছোটবেলায় আমরা একটা রাইসমিল বসাইছিলাম। প্রথম যেদিন মিল চালু হইলো অনেক মানুষ ধান ভাঙ্গাইতে আসছে, গ্রামের সব পিচ্চিরা জড়ো হইছে, মুঠোয় মুঠোয় চাল খায়, কেউ কিছু বলেনা। কিন্ত আমি যেই একমুঠো চাল নিতে গেলাম অমনি অপারেটর কর্তৃক গালের মধ্যে চটকনা। অথচ আমি ছিলাম মালিকের বড় পোলা।
সেইদিনই বুঝছিলাম আমার চেহারায় গুরুতর সমস্যা বিদ্যমান। একদিন ইট উইল ম্যাটার এবং আমার ধারণা সত্যি হইছিলো, এখনো সত্যিই আছে।
একবার যাত্রাবাড়ী এলাকার হোটেলে এক লেডি কাস্টমার হাতের ইশারায় ডাক দিয়া জিগাইছিলো, মামা ভাতের লগে কি কি আছে?
না শোনার ভান কইরা তার সামনের চেয়ারে বইসা ওই হোটেলে যা যা পাওয়া যায় সব খাইয়া প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলাম আমিও একজন Potential কাস্টমার।
উনি মুসকি মুসকি হাসছিলেন। কিন্তু লাভ কি? ওনারই বি কি দোষ! দোষ তো চেহারার আমার।
দীর্ঘদিন মোবাইলে/ফোনে কথা বলার পর এক মেয়ের সাথে দেখা। ভ্যানিটি ব্যাগ তন্নতন্ন কইরা কি জানি খুঁজতেছে, মুগ্ধ হইয়া তাকাইয়াছিলাম, ভাবছিলাম নিশ্চয়ই কোনো গিফট নিয়া আসছে।
পরে অবশ্য একখান প্লাস্টিক বডির পুরাতন আয়না ধরাইয়া দিয়া দ্রুত কাইটা পড়ছিলো। চেহারা খারাপ হইতে পারে বালিকা, তাই বইলা কি আমার বাসায় আয়না নাই?
আর ওইটুক আয়নায় আমার এতবড় চেহারা কি আটবে?
চেহারা কিন্তু সিরিয়াসলি ম্যাটার্স
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়