বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০২১
রাজশাহীর তানোরে সর্বত্রই আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দর পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বিগত বছরগুলোতে অনেকটা ক্রেতাশূন্য ছিল এখানকার আলুর বাজার। তবে গত বছর ও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ক্রেতারা ভিড় করছেন খেত থেকে আলু কেনার জন্য।
এছাড়া কৃষকেরা খেত থেকে আলু তোলার পর বিভিন্ন পাইকারি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন বেশ ভালো দামেই। এর পরেই গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। আলু চাষের সাথে জড়িত হাজার হাজার কৃষক রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে।
হাটবাজারগুলোতে নতুন আলু বিক্রির শুরুতেই বাড়তি দাম পেয়ে কৃষকদের মাঝে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। দিন দিন বাড়ছে আলু চাষের আগ্রহ। তবে বরেন্দ্র বহুমূখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপের অপারেটারদের কাছে প্রান্তিক কৃষকরা দিন দিন জিম্মি হয়ে পড়তে বসেছে।
উপজেলার সর্বত্র প্রচুর আলু কেনাবেচা হচ্ছে। আর সেই আলু বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। এউপজেলার মাটি আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এ বছর আলু আবাদ ভালো হয়েছে।
বিগত বছরগুলোতে আলু আবাদে সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির ফলে উৎপাদিত আলুর খরচ বৃদ্ধি এবং সেই সাথে বাজারে ভালো দাম না পাওয়ায় সাধারণ কৃষক আলুর আবাদ কমিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই বছর যাবৎ ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকদের আলু চাষের আগ্রহ বেড়ে যায়।
উপজেলার চিমনা গ্রামের রবিউল ইসলাম ও সারওয়ার হোসেন জানান, তারা দুইজন এ বছর ছয় বিঘা করে জমিতে আলু রোপণ করেছিলেন। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। আলু উৎপাদন হয়েছে ৫৫০ মণ। বিক্রি হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকায়। তবে ডায়মন্ড আলুর আবাদ ও ফলন তুলনামূলক বেশি হয় বলে জানান তারা।
প্রাণপুর গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন সুমন জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা। আলু বিক্রি করেছেন ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার মতো।
কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছে ১০-১১ টাকা। এর সাথে জমি থেকে আলু উত্তোলন, বাজারজাতকরণে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ মিলে প্রতি কেজি আলুর খরচ পড়ছে ১৪- ১৫ টাকা। স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকা কেজি দরে।
আলু ক্রেতা মোজাহার আলী জানান, গত এক সপ্তাহে তানোরে আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে গড়ে ১৪ থেকে ১৬ টাকা দরে। প্রতিদিন তানোর থেকে শত শত বস্তা আলু স্টোরজাতের পর চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন বাজারসহ বিদেশের বাজারে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কার্ডিনাল, রোজাগোল্ড, কারেজ, স্টোরিক, শান্তানা, বিনা সতেরো, বিনেলা জাতের আলু রোপণ করা হয়। মাটিতে জো আসার সাথে সাথে আলুবীজ রোপণ করা হয়। অল্প দিনেই চারা গজিয়ে যায়।
আগাছা দমন, সার, কীটনাশক দিতে হয়। অগ্রহায়ণ, পৌষ ও মাঘ এই তিন মাস আলু চাষের সব চেয়ে ভালো সময় বলে তারা জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামিমুল ইসলাম জানান, চলতি মওসুমে উপজেলায় প্রায় ১২ হাজার ১৪ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর আবাদ ভালো হয়েছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়