বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১০ ১৪৩১
|| ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২০
গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খড়ের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর তানোর উপজেলার খামারি ও সাধারণ কৃষকেরা। গরুর খাদ্যের মধ্যে অন্যতম খড়-কুটার দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে এমনটাই জানালেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গরুর খামারিরা।
আজ বুধবার বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার গোল্লাপাড়া, চাপড়া, তালন্দ, সমাসপুর, হাতিশাইল, কামারগাঁ, হরিপুর, আজিজপুর, কলমা, মুন্ডুমালা, কৃষ্ণপুর, আমশো, কাশিমবাজার, কালিগঞ্জ, চাঁন্দুড়িয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় গরুর খামার। কারো রয়েছে দুগ্ধজাত খামার আবার কেউ শুধুমাত্র কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে পালন শুরু করেছেন গরু। এসব খামারে সংকট রয়েছে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খড়-কুটা।
খামারিরা জানান, সর্বত্র গোখাদ্য খড়ের কদর বেড়েছে। উপজেলায় গোখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও খড়ের আকাশছোঁয়া দাম ভাবনায় ফেলেছে তাদের। অনেকে পশু খাদ্য কিনতে না পেরে গরু হাটে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাঁরা আরও জানান, বিঘা প্রতি ছয় হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে খড়। যে খড়ের দাম গত বছর ছিলো বিঘা প্রতি সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।
এদিকে খামারিদের কারণে সাধারণ গরু লালন-পালনকারীরা পড়েছেন আরও বিপাকে। স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খড়।
জানা গেছে, কুড়া-ভুসির পাশাপাশি ধানের খড় গরুর জন্য উৎকৃষ্ট খাদ্য। কুড়া-ভুসির সঙ্গে খড় কেটে ভিজিয়ে গরুকে খাওয়ানো হয়। গরুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য এই খাদ্যের বিকল্প নেই। তাই খামার অথবা ব্যক্তিগত গরু পালনকারীদের সারা বছরের জন্য খড়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছেই। হঠাৎ খড় ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে অনেকটা সংকট রয়েছে বলেও স্থানীয়রা জানান।
গরুর জন্য খড় কিনতে অনেকটাই প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে খামারিসহ সাধারণের। নিজ এলাকার বাইরে থেকেও খড় কিনে আনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গরুর খামারিরা। ফলে পরিবহন খরচও যুক্ত হচ্ছে তাতে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তানোর উপজেলায় গত কয়েক বছর ধরে গরুর খামারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে যুবকদের একটা অংশ খামার প্রকল্পের দিকে ঝুঁকছেন। কেউ গরুর মোটাতাজাকরণ আবার কেউ দুগ্ধজাত গরুর খামার করছেন। এছাড়া এই এলাকায় ধান চাষ আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তাছাড়া ফলন ভালো না হওয়ায় খড়ের সংকট দেখা দেয়। মূলত খড় ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে, সে তুলনায় বাড়েনি খড়ের পরিমান। আর এতে করেই দাম বাড়ছে হু-হু করে।
গরু পালন করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, একটি গরুর সারা বছরের শুকনা খাবারের জন্য খড়ের বিকল্প নেই। তিনবেলা নিয়ম করে অন্যান্য খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি খড় দিতে হয়। কুড়া-ভুসি, চাল ফুটানো মিলিয়ে খাওয়ার সঙ্গে খড় কেটে পানির সঙ্গে ভিজিয়ে খাওয়ানো হয়। এছাড়াও তিনবেলা খাওয়ার বাইরে খড় ও কাঁচা ঘাস দিতে হয়। ঘাসের তুলনায় খামারে খড়ের প্রয়োজনীয়তাই বেশি। আর এ কারণেই প্রত্যেক খামার বা
সাধারণ গেরস্থদের কমপক্ষে এক বছরের জন্য খড় কিনে রাখতে হয়। খড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন সাধারণেরাও। অনেকে আবার সংকটের কারণে রাজশাহীসহ অন্যান্য জেলা থেকেও খড় কিনে এনেছেন বলেও তারা জানান।
শামসুল আলম নামে এক খামারি জানান, তার খামারে ৭টি গরু আছে। সবই মোটাতাজাকরণের জন্য। আগামী কোরবানিতে বিক্রি করার জন্য লালন-পালন করছেন। নিজ এলাকায় খড়ের দাম বেশি হওয়ায় নওগাঁর নিয়ামতপুর এলাকা থেকে খড় কিনে এনেছেন তিনি।
এমএমআই
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়