শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২০
রাজশাহীর তানোরে উৎপাদন খরচ না ওঠায় গম ও মসুর চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকেরা। গত কয়েক বছর সরকারের কাছে গম বিক্রি করতে না পারাসহ ক্রমাগত লোকসানে পরে এখন অন্য ফসল উৎপাদনে ঝুঁকছেন তারা। কৃষি বিভাগও বাজারে দাম না পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনে গম উৎপানও হ্রাস পাচ্ছে। তবে এ বছর গত বছরে তুলনায় বেশী জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।
এঅবস্থা কাটাতে উন্নত জাতের গম আবাদের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। অপরদিকে মসুর ছাষাবাদে করে তেমন কোন লাভ না হওয়ার ফলে দিন দিন এ আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। এক সময় এ উপজেলায় চোখে পড়ার মতো অন্যতম আবাদ ছিল গম ও মসুর। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশে গম ও মসুর বাজারজাত করতেন এলাকার চাষিরা।
শীত দীর্ঘমেয়াদি থাকাসহ আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ উপজেলায় গম ও মসুরের বাম্পার ফলন হয়েছে এক সময়। কিন্তু সরকারের ঘোষিত ন্যায্য দরে সংগ্রহ অভিযানে গম দিতে না পারা, বাজার নিম্নমুখী হওয়ায় ক্রমাগত লোকসান গুনতে হয়েছে চাষিদের। তাই এ উপজেলায় গমের আবাদও কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে।
কৃষকদের অভিযোগ, উৎপাদন খরচ না ওঠায় গমের আবাদ থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন তারা। তাই এখন বিকল্প ফসল উৎপাদনে ঝুঁকছেন কৃষরা।
তানোর পৌর সদরে কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, এম সময় এলাকায় প্রচুর পরিমাণ গম ও মসুর ছাষাবাদ হতো। বর্তমানে এ আবাদ আর তেমন চোখে পড়েনা। কারণ হিসাবে তিনি বলছেন ফলন কমছে। তারপর গম বিক্রি করে দাম কম পাই। খরচও ওঠে না।
আর মসুর ডাল রোপনের পর লাল রঙধারন করে মরে যাচ্ছে। কোন ভাবেই এর প্রতিকার করা যাচ্ছেনা। ফলে কয়েক বছর লোকশানের পর সেই আবাদ ছেড়ে দিয়েছি বলে জানান তিনি।
উপজেলার মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার চাষি ইদ্রিস আলী বলেন, গত বছর গমের আবাদ করেছি ২ বিঘা জমিতে এবার তা কমিয়ে এক বিঘা জমিতে চাষ করেছি।
চিমনা গ্রামের চাষি হযরত আলী বলেন, সরকারের গম সংগ্রহে কৃষকরা গম দিতে পারে না। সরকার গমের উচ্চ দাম ঘোষণা করলেও এর সুফল পায় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। তাই গম চাষে আগ্রহ তেমন নাই। মাত্র দুই বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেছি।
একই গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, ১০ কাটা জমিতে মসুর রোপন করেছি। সেই রোপনকৃত মসুর লাল রংধারণ করে মরতে বসেছে। কীটনাশক ব্যবহার করে কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। আগামী বছরে এ মসুর ছাষাবাদ আর করবো না বলে জানান তিনি।
এনিয়ে কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইষলাম বলেন, এবছর ১ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে গম চাষাবাদ হয়েছে। এ থেকে গম উৎপাদন হবে ৪ হাজার ৫০০ মে. টন। আর মসুর ডাল ১ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন গত বছরের চেয়ে গম ৭শ হেক্টর জমিতে বেশি চাষাবাদ হয়েছে।
স/এমএস
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়