মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১০ ১৪৩১
|| ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২ সেপ্টেম্বর ২০২১
নানা জটিলতায় আটকে আছে রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ি যাদুঘরের উদ্বোধন। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বলছে, প্রায় এক বছর আগে যাদুঘরের কাজ শেষ হলেও এখনো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। সেই সাথে করোনার প্রভাবের কারণে কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে বলেও জানান। অপরদিকে উপজেলা প্রশাসনে রদবদলের কারণে রাজাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন নিদর্শন উদ্ধার কাজ থেমে গেছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন, রাজবাড়ি এলাকা পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কয়েকটি ধাপে রক্ষণা-বেক্ষণে কাজ করছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় গত প্রায় ৫ বছর আগে সাড়ে ৪ কোটি টাকার সংস্কার কাজ করা হয়েছে। সেই সাথে পাঁচআনী রাজবাড়ির দ্বিতীয় তলায় যাদুঘর গড়ে তোলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
তবে করোনা মহামারির কারণে যাদুঘর উদ্বোধনী আয়োজন পিছিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে জরাজীর্ন চারআনী রাজবাড়ির সংস্কার কাজ করতে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেটার বরাদ্দ আসলেই কাজ শুরু হবে।
লোকনাট্য গবেষক কাজি সাঈদ হোসেন দুলাল বলেন, রাজবাড়িতে যাদুঘর প্রতিষ্ঠা করতে সাবেক সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী আশাদুজ্জামান নুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। সে মোতাবেক কাজও শুরু করেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। ইতিমধ্যে যাদুঘরের সকল আসবাবপত্র তৈরি করা হয়ে গেছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
তবে গত বাংলা লোকনাট্য উৎসব অনুষ্ঠানে বর্তমান সাংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ রাজপরগণা পরিদর্শন শেষে যাদুঘর উদ্বোধন করার বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব কর্মকর্তাদের তাগিদ দিয়েছিলেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রভাব ও রাজবাড়িতে নিরাপত্তা জনিত কারণে তা পিছিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যাদুঘর উদ্বোধন করা হলে পর্যায়ক্রমে রাজাদের ব্যবহার করা বিভিন্ন নিদর্শন সংগ্রহ ও উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, রাজ-রাজারা এখানে সব কিছু রেখেই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন।
তারা যাওয়ার পর পরগণার বিভিন্ন স্মৃতি চিহ্ন বা নিদর্শনগুলো এক শ্রেণির লোভী মানুষ তা লুটপাট করে নিয়েছে। এর মধ্যে কিছু নিদর্শন এখনো এলাকার বিভিন্ন প্রভাবশালীদের কব্জায় আছে। যা পুলিশ-প্রশাসন চাইলে উদ্ধার করা সম্ভব।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, আমি এখানে আসার পর রাজবাড়ির প্রত্নতাত্ত্বিক কোনো নিদর্শন সংগ্রহ করিনি। তবে সাবেক কর্মকর্তা সংগ্রহ করেছেন কিনা তাও আমার জানা নেই। আর তিনি (সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা) আমার কাছে সংগ্রহীত কোনো কিছুই বুঝিয়ে দিয়ে যাননি।
তবে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাজবাড়ি যাদুঘরের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজাদের ব্যবহার করা বেশ কিছু নিদর্শন এলাকার লোকজনদের নিকট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সময় ও করোনার কারণে সংগ্রহে কিছুটা ঢিলে হয়ে যায়।
তবে যা কিছু সংগ্রহ করা হয়েছে তা উপজেলা পরিষদে সংরক্ষিত রাখা আছে। আমি বদলী হয়ে আসার আগে তা নবাগত কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। তিনি যেনো উদ্ধারকৃত নিদর্শন গুলো যথা সময়ে যাদুঘরে হস্তান্তর করেন।
এ ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক (বগুড়া) নাহিদা সুলতানা বলেন, ইতিমধ্যে পুঠিয়া রাজবাড়িতে যাদুঘরের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা জটিলতার কারণে যাদুঘরের রাখা নিদর্শন গুলো এখনো আনা হয়নি।
যার কারণে যাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে আশা করা যাচ্ছে আগামি বছরের শুরুতেই রাজবাড়িতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাদুঘরের যাত্রা শুরু হবে।
তিনি বলেন, পুঠিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজাদের ব্যবহার করা কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন সংগ্রহ করছেন কিনা তা আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে তারা আমাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করেননি।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়