শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২১
রাজশাহীর দুর্গাপুরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পানি নিষ্কাশনের কাজে ব্যবহৃত ছোট-বড় নালা, ব্রীজ-কালর্ভাটের মুখ। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
অপরিকল্পিত পুকুরখননে ব্রীজ-কালর্ভাটের মুখ বন্ধ হয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে কয়েকশ হেক্টর জমির আমন আবাদ। ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়া ও জলাবদ্ধতায় আমন ধান রোপণ করতে না পারায় হাজারও কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুর্গাপুর পৌর এলাকার সিংগা-রৈপাড়া কবরখুড়ি বিল, দেবীপুর-শালঘরিয়া মৌজার ডাহারকান্দর, কানপাড়া, পানানগর, হোজা অনন্তকান্দি, শ্যামপুর, নওপাড়া, শিবপুর, কিসমত বগুড়া, বাদইল, উজালখলসী সহ বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এতে কয়েকশ হেক্টর আমন ধানের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে পানিতে তলিয়ে গেছে ধান। আবার অনেক স্থানে সম্প্রতি লাগানো আমন ধান কচুরিপানায় ঘিরে ফেলেছে। অপরিকল্পিত পুকুর খননে বিলের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই তাদের তলিয়ে যাওয়া ফসলের আশা ছেড়ে দিয়েছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, কৃষকদের আর্তনাদ ও তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা কেউ শুনেন না। গত কয়েক বছর ধরে পাল্লা দিয়ে চলছে ফসলি জমিতে পুকুর খনন। দখল হয়ে গেছে সরকারি খাল, নালা, বন্ধ হয়ে গেছে পানি নামার ছোটবড় ব্রীজ কালর্ভাটের মুখ।
এখন বর্ষাকালে সব এলাকায় নিচু জায়গাতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। উপজেলায় অপরিকল্পিত কৃষিজমিতে পুকুর খনন ও জলাবদ্ধতার সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু কোনো মহলই কর্ণপাত করছেন না।
রৈপাড়া গ্রামের সাইফুল, হাবিলসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, কয়েক বছরধরে উপজেলায় যত্রতত্র পুকুর খনন হচ্ছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য ছোট-বড় ব্রীজ-কালর্ভাটের মুখ। বর্ষায় কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে দুর্গাপুর পৌরসদর সিংগা ও রৈপাড়া কবরখুড়ি বিলের কয়েকশ বিঘা ধানের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আবার নিচের অংশ একেবারে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পাশের বরহরমপুর এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন করায় ব্রীজ-কালর্ভাটের মুখ বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে সিংগা-রৈপাড়া কবরখুড়ি বিলে মাঠ জুড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার দেবীপুর গ্রামের কৃষক নুরুল, আফসার, ছিদ্দিকু, হেলাল জানান, দেবীপুর ও শালঘরিয়া মৌজায় ডাহার বিল এলাকায় প্রায় দুই বিঘা বিঘা জলাবদ্ধতায় পতিত হয়ে পড়ে আছে। আগে ওই জমিতে পুরোদমে আমনের আবাদ করা যেত। পুকুর খনন পানি নিষ্কাশনের নালার মুখ বন্ধ হয়ে পড়ায় কোমর পর্যন্ত পানি দেখা দিয়েছে। তাদের ফসলি জমি থেকে পানি নামানোর আর জায়গা নেই। ফলে পতিত হয়ে পড়ে আছে দুই গ্রামের প্রায় দুইশ বিঘা ধানের জমি।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের কাছে জলাবদ্ধতা বিষয়ে জানতে চাইবো। তবে জমি থেকে পানি নিষ্কাশনে কৃষকের ফসল রক্ষায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইউএনও সোহেল রানা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় জনগণকে সাথে নিয়ে প্রশাসন দখল হওয়া অনেক খাল ও কালর্ভাটের বন্ধ মুখ খুলে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছে। কৃষকদের অভিযোগ পেলে ফসল রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়