শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২১
রাজশাহীর দুর্গাপুরে আব্দুল লতিফ মৃধা (৫২) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। এরপর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন তিনি। তিনি উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীক পেয়েছেন।
গতকাল সোমবার পঞ্চম ধাপে ৫জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ভোটে প্রতীক বরাদ্দ হলেও প্রতীক নিতে আসেন নি তিনি। প্রস্তাবকারী সুজন নামের এক ব্যক্তি তার পক্ষে ঘোড়া প্রতীক সংগ্রহ করেছেন উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং অফিসার আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, পঞ্চম ধাপে ৫জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ। এতে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে দুইজন স্বশরীরে প্রতীক নিলেও আসেন নি আব্দুল লতিফ মৃধা। তবে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে কী না, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে, গত ১৪ ডিসেম্বর মাড়িয়া ইউনিয়নের শাকিল আলী নামের এক ছাত্রলীগের কর্মী দুর্গাপুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। দুর্গাপুর পুঠিয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারাকে নিয়ে ৮বছর আগে একটি পুরানো বিয়ষ টেনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে দেওয়া তার বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। আব্দুল লতিফ মৃধা উপজেলা সৈনিক লীগের সাবেক সভাপতি।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, আব্দুল ওয়াদুদ দারা বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও দুর্গাপুর পুঠিয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। মামলার আসামি আব্দুল লতিফ মৃধা গত ৫ডিসেম্বর বিকেলে হোজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সংবাদ সম্মেলন করে তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি (লাইভ) প্রচার করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সাবেক সাংসদ আব্দুল ওয়াদুদ দারা আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (নৌকা) প্রতীকে পাইয়ে দিতে মনোনয়ন বানিজ্য করেছেন। এছাড়াও নিয়োগ বানিজ্য করে অনেক টাকা রোজগার করেছেন।
এজাহারে আরও দাবি করা হয়েছে, আসামির এ ধরনের বক্তব্যে অসত্য ভিত্তিহীন। এই বক্তব্যে ফেসবুক লাইভ প্রচারের পর থেকে দুর্গাপুরে আওয়ামী আদর্শে বিশ্বাসী মানুষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তিনি এলাকার মানুষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির লক্ষে এবং সম্প্রীতি বিনষ্টের উদ্দেশ্য সংবাদ সম্মেলনে এই বক্তব্যে প্রচার করেছেন। স্থানীয় তিন ব্যক্তিকে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, আব্দুল লতিফ মৃধা এই কাজ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর বিভিন্ন ধারায় অপরাধ করেছেন। ওই দিনই দুর্গাপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫,২৯ ও ৩১ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল লতিফ মৃধার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করা হলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অবগত আছেন কী না জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুর্গাপুর পুঠিয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, মামলা হওয়ার দুই দিন পর বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে কে বাদী হয়ে মামলা করেছেন তাকেও আমি চিনি না। আমার অনেক ফলোয়ার আছেন। হয়তোবা তিনি (আব্দুল লতিফ মৃধা) আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। আমার কোন এক ফলোয়ার তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাশমত আলী বলেন, আসামি পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা যায় নি। তবে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। শুনেছি তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। ওসি আরও বলেন, তিন ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩১ ধারাটি জামিন যোগ্য নয়। এ ধারায় অপরাধ হচ্ছে, কোন কথা বলে মানুষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করা। যা মারামারি বা সংঘাত সৃষ্টি করে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়