শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২২
দুর্গাপুর উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া এক সময়ের জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের ঝোপদুয়ারপাড়ায় গত শুক্রবার পড়ন্ত বিকেলে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সারাদেশের লাঠি-লরি সংস্থার কমিটি গঠনের লক্ষে বাংলাদেশ লাফি-লরি সংস্থার সহযোগিতায় এ খেলার আয়োজন করে দুর্গাপুর উপজেলা লাঠি-লরি সংস্থার ওস্তাদ মুনছুর রহমান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী এ খেলা উপভোগ করতে আশাপাশ এলাকা থেকে ছুটে আসে হাজারও উৎসুক জনতা। এই লাঠিখেলাকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রাম পরিনত হয় উৎসবে। চারদিকে ঢাকঢোল আর কাসার ঘণ্টার বাজনা। বাদ্যের তালে তালে লাঠিয়ালদের কসরত। দর্শকদের আনাগোনায় মুখর হয়ে পড়ে পুরো দেবীপুর গ্রাম। বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, শিশুরা উপস্থিত থেকে নিবিড় দৃষ্টিতে উপভোগ করেন এই খেলা। নানা রংয়ের পোশাকে সেজে খেলা শুরু করে লাঠিয়াল সর্দাররা। বাদ্যের তালে তালে লাঠিয়ালরা আক্রমণ করেন একে অন্যকে। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা আর কৌশলে প্র্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মেতে ওঠেন তারা। আধুনিক প্রযুক্তির মাঝেও এমন আয়োজনে উচ্ছ্বসিত দর্শকরা। লাঠি খেলা দেখে খুবই আনন্দিত দর্শক। তাই প্রতিনিয়ত এ ধরনের আয়োজন করার দাবি তাদের।
লাঠিখেলা দেখতে আসা দশম শ্রেনির শিক্ষার্থী সানজামুল হক বলেন, বাপ-দাদার মুখে গল্প শুনেছি লাঠিখেলার। আজ বাস্তবে লাঠি খেলা দেখলাম। হারিয়ে যাওয়া এই খেলা খুবই চমৎকার। খেলা দেখে খুব ভাল লেগেছে। এমন খেলার আয়োজন যেন প্রতিবার করা হয় এমনটাই দাবি তার।
আয়োজক দুর্গাপুর লাঠি-লরি সংস্থার ওস্তাদ মুনছুর রহমান বলেন, আধুনিকতার ছোয়ায় গ্রাম গঞ্জে আর বিনোদন নেই। এখন মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকে শিশু-কিশোররা। তাই গ্রামীণ ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া খেলাধুলাকে ফিরিয়ে আনতেই এমন আয়োজন করা হয়েছে।
খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ লাঠি-লরি সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওস্তাদ শায়েস্তা খান, রাজশাহী জেলা লাঠি-লরি সংস্থার সভাপতি ওস্তাদ আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওস্তাদ মুক্তাদির হোসেন বুলেট, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। লাঠিখেলায় ৩টি লাঠিয়াল দল অংশ নেয়। দুর্গাপুর, পুঠিয়া ও নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা লাঠি-লরি সংস্থা।
বাংলাদেশ লাঠি-লরি সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওস্তাদ শায়েস্তা খান বলেন, হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ লাঠি-লরি সংস্থা কমিটি গঠনের লক্ষে সারাদেশের ৫০টি জেলার সাড়ে ৫০০দলের তালিকা তৈরি করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গ্রাম গঞ্জে এ লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাজশাহী অঞ্চলে কমিটি গঠণ শেষ পর্যায়ে। এরপর খুলনা অঞ্চলে শুরু হবে। দর্শকরাও এতে ব্যাপক সাড়া দিচ্ছে। আশা করছি গ্রাম বাংলার লাঠিখেলার হারানো ঐতিহ্য আবারও ফিরে আসবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়