বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১০ ১৪৩১
|| ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
প্রকাশিত: ১ মে ২০২০
করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দুই মাস বেকার থাকার পর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ধান কারতে গেলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কৃষি শ্রমিকরা। আজ শুক্রবার (১ মে) পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে থেকে অনুমতি নিয়েছেন প্রায় ১২ হাজার কৃষি শ্রমিক।
জানা গেছে, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে গ্রামে বোরো ধান পাকা শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে পুরোপুরি ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ সময় বাঘা উপজেলায় তেমন কোনো কাজ থাকে না। এ কারণে অলস দিন কাটে কৃষি শ্রমিকদের। তারপর করোনাভাইরাসের কারণে ঘর থেকে বের হতে না পেরে হাতের জমানো টাকাও শেষ। ধার-দেনা করে সংসার চালাতে গিয়ে অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই করোনাভাইরাসে লকডাউনের কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের কাছে থেকে অনুমতি নিয়ে কাজে গেলেন কৃষি শ্রমিকরা। ওই অঞ্চলের ধান চাষিরা বাঘা উপজেলার পদ্মার চরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে খোঁজ করে কৃষি শ্রমিক নিয়ে যায়।
তাই প্রতিদিন সহস্রাধিক কৃষি শ্রমিক নিজ নিজ এলাকা থেকে ট্রাক, ভটভটি ভাড়া করে কাজের সন্ধানে ছুটছেন ওই সব অঞ্চলে। গত দুই সপ্তাহে প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক পাড়ি দিয়েছেন ওই সব জেলায়।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলার ছাতারী গ্রামের কৃষি শ্রমিক সম্রাট আলী, রেজাউল করিম, মখলেসুর রহমান, রহমত আলী, আলামিন হোসেন, আলতাফ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন কৃষি শ্রমিকের সঙ্গে কথা হয়। তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের কাছে অনুমদি নিয়ে নাটোর জেলার সিংড়া এলাকায় ধান কাটার কাজে যান।
ওই সময় তারা বলেন, এখন আমাদের এলাকায় কাজ নেই। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া নিষেধ। এরমধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা ধান কাটার কাজে যাব। আমাদের রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রশাসনকে বলে দিয়েছেন। আমরা অনুমতি নিতে ধান কাটতে এসেছি। একসঙ্গে ভটভটি ভাড়া করে প্রায় ৪০ জনের একটি দল ওই এলাকায় যান।
বাঘা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান শফিক বলেন, এই ইউনিয়ন থেকে প্রায় এক হাজার ৫০০ শ্রমিক বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটতে গেছে। খোঁজ নিয়েছি, তারা ভাল আছে, ধান কাটতে শুরু করেছে।
বাউসা ইউনিয়নের দিঘা গ্রামের ধান কাটা দলের দল প্রধান পলান উদ্দিন জানান, নাটোরের বোয়ালিয়া এলাকায় ধান কাটার জন্য ১৫ জনের একটি দলের তালিকা করা হয়। তারপর এই তালিকা ইউনিয়ন পরিষদ তথ্য কেন্দ্রের উদ্দ্যোগতার নিকট জমা দিয়ে হয়েছে। তাদের নির্দিষ্ট ফরমের সাথে ভোটার আইডি কার্ড জমা দিয়ে অনুমতি নিতে হয়েছে। এগুলো করে এবার ধান কাটতে এসেছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আল মামুন হাসান বলেন, ইতিমধ্যেই প্রায় ১২ হাজার ধান কাটা কৃষি শ্রমিক অনুমতি নিয়েছে। অনুমতি নিয়ে অনেকেই তারা একসঙ্গে ২০-৪০ জনের দল করে গাড়ি ভাড়া করে চলে গেছে। তবে পাকুড়িয়া, বাউসা ও মনিগ্রাম ইউনিয়নের বেশি শ্রমিকরা ধান কাটার কাজে গেছে।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা জানান, ইতিমধ্যে ধান কাটার শ্রমিক অনুমতি নিয়ে ধান কাটতে চলে গেছে। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, যেহেতু আপনারা এক দলে কাজ করতে হবে। তারপরও সাবধানে থাকতে হবে, কাজ করতে হবে। যতোদুর সম্ভব দুরত্ব বজায় রাখাতে হবে। ঘনঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার চেষ্টা করতে হবে। বেশি করে পানি পান করার পরামর্শ দেন তিনি।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়