বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৫ ১৪৩১
|| ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২১
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে এটাই ধর্মের শিক্ষা। ইসলাম ধর্মে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। যারা সামাজিক পরিমন্ডলে বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ও নৈতিকতা বর্জিত অনৈসলামিক কর্মকান্ড চালায়, তারা কখনো শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসারী হতে পারে না।
ধর্ম কখনো অশান্তি ও রক্তপাতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হয় নাই। কোনো ধর্ম গ্রহণ বা বর্জন করলে ইসলামে এর কোনো ধরনের শাস্তির বিধান নেই। শাস্তি দেয়ার মালিক হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ তাআলা।
মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর সুমহান জীবন ও আদর্শ পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই। তিনি সমসাময়িক লোকদের ধর্মপথ ও পুণ্যের দিকে আহ্বান করেছেন কিন্তু কখনো কারো প্রতি অত্যাচার করেন নাই।
গতকাল বুধবার (২০ অক্টোবর) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মিলনায়তনে ইদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
আলোচনা সভায় মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর সুমহান জীবন ও আদর্শের প্রতি আলোকপাত করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম মানব, মানবতার মুক্তিদূত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল আরবের বিখ্যাত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন।
আইয়ামে জাহেলিয়াতের সেই অন্ধকার যুগে মানুষকে আলোর পথ দেখিয়ে ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাই মহানবী (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর এ দিনটি সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে মর্যাদা ও তাৎপর্যপূর্ণ।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, বাল্যকাল থেকেই সততার জন্য তিনি আল আমিন বা বিশ্বাসী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। হেরা গুহায় স্রষ্টার সন্ধানে ১২ বছরের মোরাকাবা বা একাগ্র সাধনায় আল্লাহপাক সন্তুষ্ট হয়ে ৪০ বছর বয়সে মুহাম্মদ (সা.)-কে নবুয়ত দান করেন।
এরপর কাফেরদের তীব্র বিরোধিতা ও নানা নির্যাতনের মধ্যেও মুহাম্মদ মুস্তফা আহমদ মুজতাবা (সা.) আল্লাহর একত্ববাদ ও ইসলাম প্রচার করতে থাকেন। তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করলে আল্লাহর নির্দেশে তিনি মাতুলালয় মদিনায় হিজরত করেন।
মদিনায় গিয়ে তিনি সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে মুসলমানদের শান্তি ও নিরাপদে বসবাসের জন্য ঐতিহাসিক মদিনা সনদ প্রণয়ন করেন। তিনিই সর্বপ্রথম মদীনা সনদ নামে শান্তিময় রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান প্রণয়ন করেন। যা আজো বিশ্বের প্রথম সংবিধান হিসেবে স্বীকৃত ও সম্মানিত। তারপরও নবীজীকে ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ, ওহুদ যুদ্ধসহ ২৭টি প্রতিরোধ যুদ্ধ মোকাবিলা করতে হয়।
রাজশাহী বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে উক্ত সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার এস.এম. হুমায়ুন কবির এর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ জালাল আহমদ।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন চরসাতবাড়িয়া দারুস সালাম জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. আবুল বাশার।
পবিত্র ইদে মিলাদুন্নবী (স:) ১৪৪৩ হিজরি উদযাপন উপলক্ষে ইসলামিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারি পরিচালক এ.কে.এম মুজাহিদুল ইসলাম এবং আলোচক হিসেবে ছিলেন পবা নতুনপাড়া দারুল উসওয়াহ মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি মাওলানা মো. ওমর ফারুক।
এছাড়াও আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক, ইমাম ও আলেমগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে পবিত্র ইদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার মাওলানা মোস্তাক আহমদ।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়