শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২১
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় এবার আমন ধান রোপণের পর থেকে প্রতিকূল আবহাওয়া কৃষকদের বেকায়দায় ফেলেছে। শুরুতেই খরার ধকল কেটে উঠতে না উঠতে খেতে দেখা দিয়েছে পাতা মোড়ানো মাজরা পোকার আক্রমণ। পোকার আক্রমণে দিনদিন পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।
এতে ধানের ফলন নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। ধান রক্ষার কোনো উপায় না পেয়ে দিশেহারা তারা। ধান গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে খেতের ফসল বির্বণ হয়ে ওঠায় দুশ্চিতার ছাপ এখন কৃষকদের চোখে মুখে। কৃষকরা প্রতিদিন কীটনাশক নিয়ে ছুটছে তাদের জমিতে।
দুর্গাপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। জমি প্রস্তুত করার সময় পরিমাণ মতো পটাশ সার প্রয়োগ না করার ফলে ধান গাছ গুলো অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে দিন দিন বিবর্ণ হয়ে যায়।
অপুষ্টির কারনে ধান গাছের রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এলাকাভেদে আমন ফসলের পোকার আক্রমণ বাড়ে। অপুষ্টি কাটাতে কৃষি অফিসের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকরা পটাশ প্রয়োগ ও একাধিক বার কীটনাশক প্রয়োগ করেও ধান গাছের হারানো রং ফেরানো কষ্টকর হয়।
সরেজমিনে বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা তাদের জমিতে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষায় ধান খেতে কীটনাশক নিয়ে ছুটছেন। এবার মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড খরায় এবার আমন ফসল নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন হলেও গভীর অগভীর নলকূপ চালু করে খরা মোকাবেলা করলেও পোকার আক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছেনা কৃষকরা।
চলিত মৌসুমে অনাবৃষ্টির ফলে এবার আমন ফসলে পোকার আক্রমণ ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে। ফলে ধান গাছের রং কোথায় হলুদ ও লাল বর্ণের হয়ে গেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় খেতের ধান পেকে গেছে। পোকার প্রার্দুভাবে কোথাও যাওয়া সহ পাতা মরে যাওয়ার দৃশ্যতো সারা মাঠ জুড়েই। এ অবস্থায় হারানো সবুজ রং ফিরাতে মাঠে কৃষকরা কীটনাশক প্রয়োগের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।
উপজেলার আলীপুর গ্রামের কৃষক বাবুল হোসেন জানান, এবার আমন খেতে শুরু থেকেই ধকল। বৃষ্টির অপেক্ষায় ধান রোপণে দেরি হয়েছে। বর্তমানে খেতে মাজরা পোকার আক্রমণ করেছে। সেই কোন কোন জায়গায় পচানিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষায় কীটনাশক স্প্রে করার পরও ধান গাছের রং যে ভাবে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
নওপাড়া ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জফির উদ্দিন বলেন, প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমিতে এবার রোপা-আমন রোপণ করেছেন। সব ধানখেতেই পোকা আক্রমণ করেছে। পোকা দমনে স্প্রে করা হচ্ছে। প্রতিবার স্প্রে করতে বিঘা প্রতি প্রায় ছয়শ-সাতশ’ টাকা করে খরচ হচ্ছে। পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের আজিজুল ইসলাম বলেন, তার জমিতে পোকা ও পঁচানি রোগ দেখা দিয়েছে। দুইবার কীটনাশক স্প্রে করেও পোকা নিমূল করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, খরার কারনে সেচ দিতে গিয়ে এবার তার বিঘা প্রতি ৩০০ টাকা অতিরিক্ত খরচের পর পোকার আক্রমণে আবার কীটনাশক কিনতে বাড়তি খরচ হচ্ছে।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ধানখেতে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষায় পরামর্শ দিচ্ছেন। রোপণের সময় জমিতে দুই একটা ডাল পুতে দিলে পোকার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অতিরিক্ত মাত্রায় জমিতে পোকার আক্রমণ দেখা দিলে জমিতে কীটনাশক স্প্রেতে কৃষি অফিসের পরামর্শ গ্রহণের অনুরোধ করে কৃষি কর্মকর্তা।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়