বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২০
পশ্চিমাঞ্চল রেলে ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে তেল চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এ অঞ্চলে তেল চোরদের একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। কতিপয় ট্রেন চালক ও গার্ডসহ ডিপোতে কর্মরতরা এ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ তেল লোপাট করছে। র্যাবের অভিযানে চক্রের কেউ কেউ হাতেনাতে ধরা পড়লেও থামছে না চুরি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মিহির কান্তি গুহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের একটি সভায় রেলমন্ত্রী মহোদয় পশ্চিমাঞ্চলে ডিপো ও ইঞ্জিন থেকে তেল চুরির বিভিন্ন ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সচিবসহ উপস্থিত রেল কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রেলের তেল চুরি ঠেকাতে মন্ত্রী দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণে কঠোর নির্দেশ দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমাঞ্চল জিএমের নির্দেশে ১০ মার্চ লালমনিরহাট ডিভিশনের ম্যানেজার (ডিআরএম) তাপস কুমার দাস তেল চোর সিন্ডিকেট ও জড়িত রেল কর্মকর্ত-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। লালমনিরহাট ডিভিশনের বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারকে (ডিএমই) প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।
লালমনিরহাটের ডিআরএম তাপস কুমার দাস বলেন, কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রতিবেদন পেতে আরও কয়েকদিন সময় লেগে যেতে পারে। এই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
এদিকে র্যাবের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ১৭ মার্চ সকালে র্যাব পাবনা ক্যাম্পের কমান্ডার আমিনুল কবীরের নেতৃত্বে একটি দল ঈশ্বরদী জংশন এলাকার ফতেমোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেলের ইঞ্জিন থেকে চুরি করা সাড়ে চার হাজার লিটার তেলসহ পিন্টু সেখকে গ্রেফতার করে। এ সময় আরও তিন চোর পালিয়ে যায়।
আমিনুল কবীর বলেন, গত এক মাসে র্যাব একই এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেল ডিপো ও ইঞ্জিন থেকে চুরি হওয়া প্রায় ৪০ হাজার লিটার জ্বালানি তেল উদ্ধার করেছে। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ডিপো কর্মচারী, ট্রেনের চালক ও গার্ডদের সহায়তায় তারা তেল চুরি করে বাজারে বিক্রি করে।
র্যাব সূত্র জানায়, ৬ মাসে পশ্চিমাঞ্চল রেলের বিভিন্ন স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তারা লক্ষাধিক লিটার তেল উদ্ধার করেছে। চলতি বছরে রাজশাহীর কাঁকনহাট, নাটোরের আবদুলপুর, পাবনার ঈশ্বরদী জংশন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা, গাইবান্ধার বোনারপাড়া, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, খুলনা, যশোরের নওয়াপাড়া, কুষ্টিয়ার পোড়াদহ স্টেশন থেকে ট্রেনের তেল চুরির ঘটনা ঘটে। ট্রেনগুলো এসব স্টেশনে বিরতি দিলে ট্রেনের গার্ড ও চালকরাই তেল চোর চক্রকে ইঞ্জিন থেকে তেল বের করে দেন। পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চলের ঈশ্বরদী, খুলনা, পার্বতীপুর, নাটোর ও লালমনিরহাটে রয়েছে রেলের জ্বালানি তেলের ডিপো। এসব ডিপোর কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীও প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল তাদের পরিচিত চোর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাইরে পাচার করে দেন।
এ ব্যাপারে পশ্চিমাঞ্চল রেলের জিএম মিহির কান্তি গুহ আরও বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে ।
এন/কে
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়