শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৫ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২১
রাজশাহীর সর্ববৃহৎ পুঠিয়া-বানেশ্বর মোকামে জমে উঠেছে আম বাজার। পুরো বাজার থেকে পাকা আমের মৌ মৌ মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে। প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বাহারী আমের কেনা-বেচা। বিভিন্ন গুটি জাতীয় আমের সাথে পুরোদমে এখন বাজারে আসছে গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাত ও লক্ষণ ভোগ।
আগামী ৬ জুন আসবে আমের রাজা ল্যাংড়া। তবে জেলার বিখ্যাত ফজলি ও আম্রপলি আম আসবে ১৫ জুন থেকে। ইতিমধ্যে উপজেলার বানেশ্বর-বিড়ালদহ মোকাম থেকে প্রতিদিন আম কেনা-বেচায় কয়েক কোটি টাকা লেন- দেন হচ্ছে।
গতকাল শনিবার বানেশ্বর ও বিড়ালদহ বাজারের আমের মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে চলছে আম কেনা-বেচা। পুরো এলাকা যেনো এখন আমময় হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে আম কেনা- বেচার ধুম। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে বানেশ্বর বাজার এখন বিগত বছর গুলোর চেয়ে বেশি সরগরম।
বর্তমানে ক্ষীরসাপাত ও গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে প্রতিমণ দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকা দরে। বিভিন্ন জাতের গুটি আম এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। আর লক্ষণভোগ প্রতিমণ ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা দরে। এছাড়া দুধস্বর, কালুয়াসহ কয়েকটি প্রজাতি আম দু’হাজার থেকে দু’হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বানেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান ও বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজি সুলতান বলেন, এই আমের মোকাম জেলার মধ্যে সর্ববৃহৎ। এর পরের স্থানে আছে বিড়ালদহ-মাইপাড়া বাজার। এই বাজার গুলোতে প্রতিদিন পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাগমারা, বাঘা, চারঘাট ও নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া অঞ্চলের বাগানমালিকরা আম বিক্রি করতে আসেন।
সেই সাথে আম কিনতে এখানে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় সকল অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের আগমন ঘটে। সেই সাথে সকল ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। হাট কমিটির লোকজন, গ্রাম পুলিশ ও থানা পুলিশের সদস্যরা সব সময় আমের বাজার তদারকি করছেন।
নাটোর বাগাতিপাড়া এলাকার আমচষি গিয়াস উদ্দীন বলেন, বানেশ্বর বাজারে দেশে বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা আসেন। তাই একটু দূরত্ব হলেও আমরা এখানে আসি। লখনা ও গোপালভোগ জাতের দুই ভ্যানে ২৫ মণ আম নিয়ে এসেছি। আমের চাহিদা অনুসারে দাম ভালো পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
কাউসার আহম্মেদ নামের একজন ব্যাংকার বলেন, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক এলাকা হচ্ছে বানেশ্বর বাজার। এই বাজার ঘিরে গত কয়েক বছরে দেশের প্রায় সকল বেসরকারি ব্যাংক এখানে শাখা অফিস খুলেছেন। এই ব্যাংক গুলো থেকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ কোটি টাকা লেন- দেন হয়। তবে আমের মৌসুম শুরু হলে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। এছাড়া পুরো বাজার জুড়ে রয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা। সেখানেও প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকার ওপরে লেন- দেন হয়।
এ ব্যাপারে বানেশ্বর বাজার ইজারদার ওসমান আলী বলেন, বানেশ্বর আমের মোকাম জেলার মধ্যে অন্যতম। এখানে প্রায় এক ডজন কুরিয়ার ও পার্সেল সার্ভিসের অফিস রয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন শতাধিক যাত্রীবাহি বাস ও ট্রাকের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলায় আম সরবরাহ করছেন।
তবে দিন দিন অনলাইনে আমের কেনা বেচা হওয়ায় এই বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। ক্রেতার চাহিদা অনুসারে অনলাইনে বিক্রেতারা বাগান থেকে সরাসরি আম দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন। যার কারণে এই বাজারে আগের চেয়ে আম কিছুটা কম আসছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়