বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৮ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২১
জায়গা সংকটে কোনঠাসা রাজশাহীর পুঠিয়ায় পলাশবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মাত্র সাড়ে তিন শতক জমির ওপর একটি ভবন ছাড়া বের হওয়ার মত আর কোনো জায়গা নেই। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ঘুরে দেখা গেছে, ১৯৯০ সালে পলাশবাড়ি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর সরকার ২০১৩ সালে সারাদেশে প্রাথমিক জাতীয় করণ তালিকায় নাম আসে স্কুলটির। বর্তমানে তিন কক্ষের একতলার একটি ভবনে চলে স্কুলের পাঠদান। পাশে ব্যক্তি মালিকানা জমিতে রয়েছে স্কুলের একটি টিনসেট ঘর।
তবে সে ঘর রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে তা পরিত্যক্ত হয়ে আছে। শুধুমাত্র একটি ভবন ছাড়া আশে পাশে স্কুলের নিজেস্ব কোনো জায়গা-জমি নেই। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮০ জন।
আরিফুল ইসলাম নামে একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, শুধুমাত্র একটা তিন রুমের ভবন ছাড়া এখানে স্কুলের আর কোনো জায়গা নেই। এই স্কুলে আসা শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার মাঠতো দূরের কথা, ক্লাসরুম থেকে বের হলেই মানুষের জমি। মাঠ সঙ্কটের কারণে কখনোই শিক্ষার্থীদের পাঠদানের আগে সকালে অ্যাসাম্বলি হয় না। আগে ক্লাসরুমের সামনে বের হওয়ার মত ব্যক্তি মালিকানা একটু ফাঁকা জায়গা ছিল। সেখানেও এখন সুপারির চারা রোপণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় অনেকেই জমি দান করতে চেয়েছিলেন। তবে বিভিন্ন সময় প্রধান শিক্ষক ওই জমির মালিকদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। যার কারণে তারা এখন আর স্কুলের নামে জমি দিতে চাচ্ছেন না। তবে প্রধান শিক্ষক বিগত সময় একজনকে নৈশপ্রহরীর চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্কুলের নামে ৩.২৫ শতক জমি লিখে নেন।
প্রতিবেশী ওবায়দুর রহমান বলেন, স্কুল জাতীয়করণ করার পর প্রধান শিক্ষক আমাকে নৈশপ্রহরীর চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেন। বিনিময়ে গত দুই বছর আগে স্কুলের সাথে থাকা আমার ৩.২৫ শতক জমি লিখে নেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আর চাকরি দেননি। আর আমি স্কুলের কোনো জায়গায় গাছ লাগাইনি। ওটা আমার নিজস্ব জমি।
জাফর ইকবাল নামে অপর একজন বলেন, নতুন ভবনটি (সাড়ে তিন শতক) শুধু স্কুলের নামে। এছাড়া এখানে স্কুলের কোনো জমি নেই। পুরনো যে টিনের ঘর আছে সে জমির মালিক আমি। ১৯৯০ সালে স্কুলটি চালু করতে আমার কিছু জমি ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিলাম।
তখন স্কুলের শিক্ষকরা বলেছিলেন, মাত্র ৪-৫ বছর এখানে থাকবেন। এরপর নিজস্ব জমি কিনে সেখানে চলে যাবেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাহিরে জমি কিনলেও তারা পাশের প্রায় তিন শতক জমির উপর ভবন নির্মাণ করেছেন। যেহেতু তাদের এখন ভবন হয়েছে তাই আমার জমি খালি করে দিতে বলেছি।
চকপলাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দীন বলেন, এখানে অল্প জায়গা হওয়ার কারণে আমাদের মাঠ বা ফাঁকা জায়গা নেই। তবে স্কুলের নামে ৪৬ শতক জমি আছে। প্রতিবেশী একজন স্কুলের নামে কিছু জমি দান করেছেন। বিনিময়ে তাকে নৈশ প্রহরীর চাকরি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো নৈশপ্রহরী নিয়োগের নির্দেশনা আসেনি। আর স্কুলের জায়গা সম্প্রসারণ করতে সাথে যাদের ব্যক্তিগত জমি আছে তাদের সাথে কথা চলছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম ছানোয়ার হোসেন বলেন, জাতীয়করণকৃত ওই স্কুলের জায়গা সংকটের বিষয়টি অবগত আছি। স্কুলের শিক্ষকদের বলা হয়েছে তাদের কাগজপত্র অফিসে নিয়ে আসতে। আর স্কুলের জায়গা সম্প্রসারণে আমরা নিয়ম মোতাবেক তদারকি করবো।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়