শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮
হৃদি আর সুমন্তের (ছদ্মনাম) বন্ধুত্ব সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকে। এখন তারা মাস্টার্স শেষের দিকে, সামনেই চূড়ান্ত পরীক্ষা। বন্ধুত্বের ৫ বছর পেরিয়েছে তাদের। একই বিভাগে পড়াশুনা, বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরোটা সময় একসঙ্গে থাকা আর ক্লাস করা, ক্লাসের বাইরে ঘুরতে যাওয়া, কখনো অসম্ভব দুরন্তপনায় মেতে ওঠা, খুনসুঁটিতে মেতে ওঠা, জীবনের সব ঘটনা-দুর্ঘটনাগুলো শেয়ার করা- এভাবেই চলে আসছিলো বন্ধুত্ব।
তাদের দুইজন সহই ৬-৭ জন বন্ধুর একটি গ্রুপ আছে। তারা এভাবেই একসঙ্গে গড়ে তুলেছে তাদের বন্ধুত্বকে। কিন্তু হৃদি আর সুমন্তের কথা আলাদা করে বলছি কারণ হৃদির মন বলছে অন্যকিছু। হ্যাঁ, হৃদি বেশ কিছুদিন থেকেই সুমন্তের প্রতি আলাদা দুর্বলতা বোধ করছে। ভালো লাগা, ভালোবাসার বোধ হচ্ছে। মানে ‘বন্ধুত্বের চেয়ে একটুখানি বেশি’ বোধ যাকে বলে। কিন্তু সুমন্তকে বলে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না হৃদির। এটাই প্রেমের লক্ষণ। বন্ধুর প্রতি প্রেমে পড়ার লক্ষণ। এই অবস্থায় পড়লে না যায় মেনে নেওয়া, না যায় মুখ ফুটে বলা। এই সমস্যা সমাধানের পথ নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা-
প্রথমেই সময় নিন
বন্ধু হিসেবে তাকে আপনি ভালোভাবেই চেনেন। এই বন্ধুত্বে বন্ধন থাকলেও কিন্তু তাতে দায়িত্ববোধের বিষয়টি থাকে না। আপনার জীবনসঙ্গী হিসেবে সে আপনার উপযুক্ত কি না সেটা আগে ভাবুন। সে পুরোপুরি মানুষ হিসেবে কেমন, সেটাও বোঝার চেষ্টা করুন। তাকে মনের কথা জানানোর আগে তার সম্পর্কে পুরোটা জেনে নিন। মনে রাখুন, ভালো বন্ধু হলেই যে সে ভালো মানুষ বা ভালো জীবনসঙ্গী হবে সেটা ঠিক নয়।
আপনাদের ‘কমন ফ্রেন্ডের’ সাহায্য নিন
এই সময়ে আপনাদের দুজনকেই ভালোভাবে চেনে এমন কারো সাহায্য নেবেন। আপনি তাকে যেভাবে চেনেন, যেভাবে চেনেন- সেই কমন বন্ধু হয়তো তাকে অন্যভাবে চেনে। তার দেখা আর বোঝার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা রকমের হয়। তাই তাদের কাছ থেকে মূল্যায়ন জানুন। এতে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়। আপনি একটি নিরপেক্ষ জায়গা থেকে সম্পর্কের সম্ভাবনা আর ভালো লাগার বাস্তবায়ন করতে পারবেন।
কথা বলার চেষ্টা করুন
বন্ধুকে তো হঠাৎ করেই সব কথা বলা যায়। কিন্তু ভালোলাগার কথা বলা যায় না, কারণ দ্বিধা-সংকোচ কাজ করে। মনে হবে বন্ধুত্বটাই নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু একটু সাহস আনুন। খোলাখুলি বলুন বা কোনো কৌশলের পথ ধরুন। এমনভাবে প্রস্তাবটি করুন যাতে বন্ধুত্ব না ভাঙে। জীবনসঙ্গী আর বন্ধু হিসেবে দুজন আজীবন হাত ধরে একসঙ্গে থাকবেন, তাই তার শুরুর প্রস্তাবটা সুন্দরভাবে করুন। মনের কথা বলার সময়ে মনে সাহস রাখুন। আপনার কথাকে সে যেন হেয় না করে। এমনভাবে বলুন যাতে সে আপনার কথা ভাবে।
কখনো জোরাজুরি করবেন না
তাকে আপনার ভালো লেগেছে মানে বন্ধুত্বের খাতিরে আপনার প্রস্তাব মেনে নিতে হবে এমনটা নয়। তার নিজের ইচ্ছার বিষয় আছে। আপনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তার পছন্দ না হলে সে তাতে রাজি নাও হতে পারে। আপনাকে সে ফিরিয়ে দিতেই পারে। বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করার চেষ্টা করবেন না। জোর না করে সময় নিয়ে দেখুন। আপনার প্রতি তার ভালোবাসা তৈরি হলে সম্পর্ক এমনিতেই গড়ে উঠবে।
কেমন হবে আপনার প্রতিক্রিয়া
আপনাকে সে না করে দিতেই পারে। তাহলে কোনো রকম উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখাতে যাবেন না। সর্বোচ্চ আপনি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখাতে পারেন। কিন্তু তাকে দুর্বল করে তোলার জন্য অন্য কোনো পথ বেছে নেবেন না। এতে করে বন্ধুত্ব তো যাবেই, ভবিষ্যতটাও নষ্ট হবে। তাকে এভাবে বোঝান যে আপনি তার সঙ্গে ভবিষ্যত কাটাতে চান। আর নিতান্তই রাজি না হলে সেটা থেকে কীভাবে বেরিয়ে যেতে হবে সেটাও ভেবে রাখুন।
চেষ্টা কি থামিয়ে রাখবেন?
একবার প্রস্তাব দেওয়ার পর তাতে ব্যর্থ হলে আবার প্রস্তাব দিতে যাবেন না। কারণ এতে করে আপনার নিজের ব্যক্তিত্ব বলে কিছুই থাকবে না। আর এতে করে বন্ধুত্ব একেবারেই ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। তার দিক থেকে ইতিবাচক কিছু হলে সে নিজেই সেটা বুঝিয়ে দেবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়