শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০২০
বাগমারায় একটি খেতে কাজ করছেন চাষীরা।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় আগাম আলু উৎপাদনে খেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। গত বছর আলু চাষে আর্থিক ভাবে ক্ষতির মুখে পড়লেও চলতি মৌসুমে তারা অধিক লাভের আশায় দিন গুনছেন।
আগাম জাতের আলু কিছু খেত থেকে উত্তোলন শুরু হওয়ায় বাজার দর ভাল থাকায় প্রাথমিক ভাবে কৃষকদের মুখে হাসি রয়েছে। তবে পরবর্তিতে বাজার দর ভাল থাকলে অধিক লাভবান হবে কৃষক। লাভের আশায় কৃষকরা প্রতিদিনই খেতের পরিচর্যায় সময় পার করছেন। তবে অর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত বছরের চেয়ে উপজেলায় আলু চাষ কম হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাগমারা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বাগমারা উপজেলায় আলুচাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে তের হাজার দশ হেক্টর। বর্তমান সময় পর্যন্ত চাষ হয়েছে স্থানীয় জাতের তিন হাজার চারশ দশ হেক্টর ও উফসি জাতের ছয় হাজার পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে। বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাগমারায় মৌসুমের শুরুতে বীজ, সার এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখন পর্যন্ত আলুর আবাদ ভাল রয়েছে। এর আগের মৌসূমে আলুর উৎপাদন ভাল হলেও বছর জুড়ে দাম কম থাকায় চাষিদের লোকসানের বোঝা টানতে হয়েছে। কিন্ত এবার শুরু থেকে আলুর দাম ভাল হওয়ায় লাভবান হবেন এমন আশা চাষিদের মধ্যে। হাট বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু হয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে নতুন আলু খুচরা পঞ্চাশ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। যা শুরুতে ১৩০টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। বাজারদর ভাল থাকলে কৃষকরা বীজ, সার, ওষুধ প্রয়োগসহ যাবতীয় উৎপাদন খরচ বাদে অধিক লাভবান হবেন বলে আশা পোষন করছেন।
গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের পলাশী গ্রামের আলু চাষি আকবর আলী জানান, চলতি মৌসুমে অধিক লাভের আশায় দুই বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছি। আশা করছি শুরুতে যে ভাবে আলুর দাম রয়েছে এমন থাকলে গত বছরের লোকসান এবার পুষিয়ে যাবে।
একই গ্রামের জোনাব আলী, আমিরুল ইসলাম, দেলবর রহমান, জাইপত আলী জানান, খেতের আলু এখন পর্যন্ত ভাল রয়েছে। এবার আলুর জন্য আবহাওয়া অনুকূলে ভাল বীজ এবং ফলনও ভাল হবে আশা করছেন তারা। কোন রোগ-বালাই বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে ফলন ভাল হবে বলে কৃষকরা আশা পোষন করেন।
অপরদিকে গত মৌসুমে আলু চাষে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চলতি মৌসুমে অনেক চাষি আলু চাষ থেকে বিরত রয়েছেন।
হামিরকুৎসা ই্উনিয়নের আলোকনগর সখোপাড়ার পল্টু জানান, তিনি গত মৌসুমে চার বিঘা জমিতে আলু চাষ করলেও এ মৌসুমে আলু চাষ থেকে বিরত রয়েছেন। মাড়িয়া ইউনিয়নের তক্তপাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলাম রুবেল জানান, গতবারে তিনি চার বিঘা জমিতে আলু চাষ করলেও চলতি মৌসুমে শুধু মাত্র এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছেন।
এদিকে বাগমারায় আলু সংরক্ষনে চারটি হিমাগার রয়েছে। উপজেলায় আলু চাষকে কেন্দ্র করে ওই হিমাগারগুলো গড়ে উঠেছে। হিমাগার থাকায় কৃষকরাও সহজে তা সংরক্ষন করতে পারে বলে জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত আলুর খেত ভাল রয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা না দিলে কৃষকরা আলু চাষে অধিক লাভবান হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
স/এমএস
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়