শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৫ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২১
রাজশাহীর বাগমারায় পরিবেশ আইন অমান্য করে অবৈধভাবে পুকুর খননের নামে কৃষি জমির টপসয়েল কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটায়। এতে প্রভাবশালীরা লাভবান হলেও হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। আবার এই মাটি ট্রাক্টরযোগে পরিবহন করায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকা রাস্তা ভেঙে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষি জমিতে পুকুর খনন এবং জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। দুই আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে। বিষয়টি বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ স্বীকার করলেও রহস্যজনক করণে বাস্তবে সেই আইনের কোনো প্রয়োগ নেই এই উপজেলায়। রাজশাহীর অন্যান্য উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করতে প্রশাসন তৎপর থাকলেও বাগমারায় তার ব্যতিক্রম।
এলাকাবাসীর অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বাগমারায় প্রভাবশালী একটি মহল কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের আবাদি জমিতে জোরপূর্বক পুকুর খননের নামে ফসলি জমির টপসয়েল অবাধে কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। স্থানীয় প্রশাসনের মদদ থাকায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও বন্ধ হচ্ছে না কৃষিজমিতে পুকুর খনন কাজ।
এর প্রতিবাদে বিভিন্ন এলাকায় কৃষকেরা মানববন্ধন কর্মসূচীও পালন করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খননকারী একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর খনন করলে কোনো সমস্যা হয় না। এক্ষেত্রে জমির পরিমাণ অনুযায়ী প্রতিটি পুকুরের জন্য তিন থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত লাগে।
সরেজিমনে উপজেলার গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়নের বোয়ালীয়া-রমজানপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বোরোধানে জমি ও বাঁশঝাড়ে অবৈধভাবে পুকুর খনন করে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জিল্লর মোড় সংলগ্ন ইটভাটায়, শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের হাট বাইগাছা ও হাটমাধনগর এলাকার তিনটি পুকুর খননের মাটি যাচ্ছে চারটি ইটভাটায়, বাসুপাড়া ইউনিয়নের হলুদঘর বিলে, মাড়িয়া ইউনিয়নের কিশমত বিহানালী বিলে ও উত্তর কোয়ালীপাড়া বিলে, গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের তেলিপুকুর গাঙ্গোপাড়া বিলে, গনিপুর ইউনিয়নের লাউপাড়া ও একডালা বিলে, নরদাশ ইউনিয়নের মধ্য দৌলতপুর বিলে, ভবানীগঞ্জ পৌরসভার শিবজাইট এবং দ্বীপপুর, বড়বিহানালী, ঝিকরা, হামিরকুৎসা ও যোগিপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪০টি স্পটে বর্তমানে পুকুর খননের নামে প্রকাশ্যে ভেকু মেশিন দিয়ে কৃজিজমির টপসয়েল কেটে ট্রাক্টরযোগে বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করতে দেখা গেছে।
এসব ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলের কারণে উপজেলা সদ্য নির্মিত রাস্তাগুলো ভেঙ্গেচুড়ে একাকার হয়ে গেছে। এছাড়া ট্রাক্টর থেকে মাটি পড়ে ধুলোবালির স্তূপ জমে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।
বাগমারার ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম হেলাল বলেন, এসব ট্রাক্টরে মাটি বহনের কোন বৈধতা নেই। তাই আমরাও চাই এসব অবৈধ যানবাহন বন্ধ হোক। যাতে রাস্তাঘাট নিরাপদ থাকে।
বাগমারা উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেন, এই সমস্যাটি বাগমারায় চরম আকার ধারন করেছে। বিষয়টি উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় তুলে ধরে একটি রেজুলেশন করা হলেও বাস্তবে কোন কাজ হচ্ছে না।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়