শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২১
রাজশাহীর বাঘায় অসময়ে পদ্মার ভাঙনে চকরাজাপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুল হুমকিতে মধ্যে পড়েছে। পদ্মার ভাঙন থেকে মাত্র ৫ মিটার দুরে রয়েছে স্কুলটি। যে কোন সময় পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।
চকরাজাপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে এই স্কুলে ১৮৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তিন কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘর নির্মান করা হয়েছে। করোনাকালিন ছুটির পর স্কুলে নতুন ঘরে ক্লাস শুরু না করতেই অসময়ে আবার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
এদিকে স্কুল সরিয়ে নিব, কিন্তু কোন জমিও পাচ্ছিনা। স্কুলটি ১৯৭৩ সালে স্থাপন করা হয়। নদী ভাঙনের কারনে ৩ বার স্থানান্তর করা হয়। এবারও স্থানান্তর করতে হবে। যে কোন সময় স্কুলটি পদ্মা গর্ভে চলে যাবে।
গতকাল বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে অসময়ে ভাঙ্গনে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন দিনার আলী খাঁ, আকমল হোসেন, লিটন আলী, আরিফুল ইসলাম, ফুলচান, ছনিয়া, নুর মোহাম্মদ, আব্বাস, সুলতান, আনোয়ার, সাহাজন, হালিম, জাফর, বছির, আলাল, নিতাই চন্দ্র, গুলবার, ছিদ্দিক, ওছির, সবজোপ, রুবেল, হান্নান,আবদুল খালেক, আমজাদ হোসেন, গোলাম রহমান, বাহের আলী, পাখি আহম্মেদ, আয়নাল হক, রাসেদুল ইসলাম, সেকেন্দার রহমান। এছাড়া ভাঙ্গনের কারনে বৈদ্যুতিক খুঁটি, গাছপালা, শতশত বিঘার ফসলি জমি পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কালিদাসখালী চরের সেকেন্দার রহমান বলেন, আমি বাড়ি ঘরের মালামাল সরিয়ে নিতে নিতে চোখের সামনে বাড়ির ভিটে পদ্মা গর্ভে চলে গেল। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলাম, কিছুই করতে পারলাম না। এখন কোথায় আশ্রয় নিবো। কিভাবে চলবো। কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না। নিরুপায় হয়ে পড়েছি। বাড়ি করার জমিও পাচ্ছিনা।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার ভাঙ্গনে আমি নিজেই আশ্রয়হীণ হয়ে পড়েছি। আমার পরিবারের প্রায় দুই শতাধিক বিঘা জমি কয়েক বছরের ব্যবধানে পদ্মা গর্ভে চলে গেছে।
এছাড়া কয়েক বছরের ব্যবধানে কমিউনিইট ক্লিনিক, বিজিব ক্যাম্প, মসজিদ, হাজার হাজার একর ফসলি জমি, গাছপালা পদ্মা গর্ভে চলে গেছে। ২০১২ সালে পূর্ব চকরাজাপুর সরকারি প্রাইমারী স্কুল, ২০১৬ সালে চকরাজাপুর সরকারি প্রাইমারী স্কুল, ২০১৮ সালে চকরাজাপুর হাইস্কুল, ২০১৯ সালে চৌমাদিয়া সরকারি প্রাইমারী স্কুল, ২০২০ সালে চরকালিদাসখালী সরকারি প্রাইমারী স্কুল এবং সর্বশেষ ২০২১ সালে চকরাজাপুর কমিউনিটি ক্লিনিক পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
তবে এই স্কুলগুলোর মধ্যে চৌমাদিয়া বাদে সবগুলোর ভবন পাকা ছিল। বর্তমানে চকরাজাপুর সরকারি প্রাইমারী স্কুল ভাঙ্গন থেকে মাত্র ৫ মিটার দুরে রয়েছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়