শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২২
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় আড়ানী পৌরসভার হামিদকুড়া গ্রামের উচ্চ শিক্ষিত সোহেল রানা। তিনি দীর্ঘদিন বেকার ছিলেন। বাবার বসতভিটাসহ তিন বিঘা জমি ছাড়া কোনো সম্পদ নেই। আয় বলতে জমিই ভরসা।
বছরে এ জমি থেকে যে ফসল উৎপাদন হয়, তা দিয়ে কোনোমতে চার সদস্যের সংসার চলে। তবে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে তিনি বেকারত্ব দূর করেছেন।
জানা যায়, তৎকালীন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা বেগমের পরামর্শে বাড়ির পাশে ২০১৪ সালে আট শতক জমিতে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ শুরু করেন। প্রথমবার তিন হাজার টাকা খরচ করে ৮ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেন।
২০১৬ সালে ১২ হাজার টাকা, ২০১৭ সালে ১৫ হাজার, ২০১৮ সালে ১৮ হাজার, ২০১৯ সালে ৩০ হাজার, ২০২০ সালে ৫০ হাজার এবং ২০২১ সালে ৪০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করা হয়েছে। উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ এই প্রথম। সোহেল রানার আট শতক জমিতে সাদা, হলুদ ও গোলাপি রঙের গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ করছেন।
অক্টোবর মাসের শেষের দিকে এ ফুলের চারা রোপণ করতে হয়। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ফলন পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতিটি ফুলের স্টিক ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি প্রতিটি ফুলের স্টিক ফুল ব্যবসায়ীদের কাছে ৭ থেকে ৮ টাকায় বিক্রি করেন।
এ বিষয়ে সোহেল রানা বলেন, আমি ২০১৬ সালে ইসলামের ইতিহাস থেকে রাজশাহী কলেজ থেকে অনার্স-মাস্টার্স পাস করে বেকার ঘুরে বেড়াতাম। ফুল চাষ করে বাড়তি আয় করা যায়, সেই চিন্তা থেকে বাঘা উপজেলার তৎকালীন কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা বেগমের পরামর্শে যশোরের এক বন্ধুর সহযোগিতায় ঝিকরগাছা থেকে বীজ সংগ্রহ করে আট শতক জমিতে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ করি। অধিক দামে সার ও ডিজেল কিনে অন্য ফসলের উৎপাদন খরচই ওঠে না।
তিনি আরও বলেন, বাড়তি আয়ের জন্য গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ করি। ইতোমধ্যে ৪০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছি। জমিতে আরও ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার ফুল রয়েছে। তবে এ ফুল বিক্রি করতে কোনো সমস্যা হয় না। ব্যবসায়ীরা প্রতি মাসে দুই থেকে তিনবার ফোন দেন। ফুল বিক্রি করার মতো হলে রাজশাহী, নাটোর, ঈশ্বরদীর ব্যবসায়ীদের জানালে তারা জমি থেকে নিয়ে যায়। তারা ন্যায্য দামও দেন।
সোহেল রানা বলেন, আমার বাবা শাহবাজ আলী অনেকটাই অসুস্থ। কোনো কোনো সময়ে স্থানীয় একটি স মিলে দিন হাজিরায় কাজ করেন। মা দোলেনা বেগম গৃহিণী। বড় ভাই টুটুল আহম্মেদ একটি বেসরকারি কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করেন।
বাঘা উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ফুল বিক্রির পর চাষিরা বীজও বিক্রি করতে পারবেন। আট শতক জমি থেকে অন্তত ৩০ হাজার টাকার চারা বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। তবে সোহেলা রানা ফুল চাষ করে অনেকটাই সফলতা পেয়েছেন।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়