শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ৯ জুন ২০২০
রাজশাহীর বাঘায় ছয়জনের পর প্রতারক চক্রের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে উপজেলার গাওপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে প্রতারক চক্রের অপর সদস্য শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। শফিকুল গাওপাড়া গ্রামের আসলাম আলীর ছেলে।
এর আগে ২দিন আগে উপজেলার সুলতানপুর-করারি নওশারা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন- উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বাদশার ছেলে রুবেল (২৫), আরমানের ছেলে পল্লব (২৫), মানিকের ছেলে মনি (২২), সুলতানপুর পূর্বপাড়ার শরিফলের ছেলে আল আমিন (২১), সুলতানপুর দক্ষিন পাড়ার রাজ্জাকের ছেলে পারভেজ হাসান পিয়াস (১৮) ও লালপুর উপজেলার মমিনপুর গ্রামের ইনতাদুল হকের ছেলে বিপ্লব হোসেন ডলটন (২২)।
করারি-নওশারা রাস্তার ইসরাইলের বন্ধ চায়ের দোকান থেকে প্রথমে ৩জনকে ২কেজি গাঁজা ও এক’শ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর অপরাধ চক্রের সন্ধান পেয়ে আরো ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের ব্যবহৃত ৫টি স্মার্ট ফোন জব্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, এই সংঘবদ্ধ গ্রুপটি প্রতারণা, অর্থ-আত্মসাৎ ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা নিজ নিজ এলাকায় ইমো পার্টির সদস্য হিসেবে পরিচিত। এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে প্রবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রবাসী নামে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, গ্রুপ খুলে প্রবাসীদের অ্যাড করে।
সেসব পেজ কিংবা গ্রুপে কিছু মেয়েকে লাইভে এ্যাড করে। ফেইক ফেইসবুক পেইজ ব্যবহার করে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করে একে অপরের মোবাইল নম্বর আদান-প্রদান করে।
ওই পেইজে সুন্দরী নারীদের, মেয়ে কন্ঠে ছবি দেখিয়ে থাকে। মোবাইল ফোনে ম্যাজিক ভয়েস এর মাধ্যমে কন্ঠস্বর পরিবর্তন করে দেখা করার কথা বলে ইমোশনাল ব্লাক মেইল করে বিভিন্ন জনের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।
এসব চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে জিম্মি হয়েছেন হাজারো প্রবাসী,হারিয়েছেন বিপুল অর্থ। সম্মান ও লোকলজ্জার ভয়ে এসব বিষয়ে মুখ খুলছেন না ভুক্তভোগি অনেকেই। তাদের প্রধান টার্গেট প্রবাসী বাংলাদেশি।
সম্প্রতি একটি মামলায় অভিযান চালাতে গিয়ে বিষয়টি নজরে নিয়ে অনুসন্ধান চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে এ ধরনের প্রতারণার সাথে অনেকেই জড়িত রয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রত্যেকের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছর। এরা সবাই আইটি বিষয়ে দক্ষ। এ ছাড়া তাদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে অর্থ লেনদেনের প্রমান পাওয়া গেছে। এদের প্রত্যেকেই বির্ভিন্ন কোম্পানিরস্মার্টফোন ব্যবহার করে। ওই ফোনে ম্যাজিক ভয়েজ সফটওয়্যার দেওয়া রয়েছে।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ২৪(২)(৩) ধারাসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রতারক চক্রটি বাঘা- লালপুর এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে সুন্দরী নারিদের ছবি ব্যবহার করে বিডি কল গার্ল, হট ইমো কল গার্ল, বিডি কিউট গার্ল প্রভৃৃতি নামে প্রতারণা করে আসছিল। অপরাধ চক্র সম্পর্কে আরো অনুসন্ধান চালানো হবে এবং এ বিষয়ে অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান ওসি।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়