বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১১ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২০
শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে আনন্দ মালাকারের বাড়ির বাইরে ভেতরে শোভা পাচ্ছে ছোট-বড় ২৫ টি প্রতিমা। বাঁশ-কাঠ আর কাদা মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন। কয়েক দিন বাদেই প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। কারিগরদের দম ফেলার ফুসরত নেই।
শুক্রবার উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের আনন্দ মালাকারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী (কারিগর) আনন্দ মালাকার। সেখানে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন প্রতিমার খোঁজ খবর নিচ্ছেন। বংশানুক্রমিক পেশায় দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করে আসছেন আনন্দ চন্দ্র মালাকার। তার এ কাজে সহপেগিতা করছেন তার ছেলে গনেশ চন্দ্র মালাকার। তিনি বলেন, আগামী ২১ অক্টোবর মহাপঞ্চমী দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু। ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজা থেকে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ। ২৬ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
আনন্দ মালাকার বলেন, প্রায় দুই মাস আগে থেকে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত ২৫টি প্রতিমা সেট তৈরি করেছেন। প্রতি সেটে দুর্গার সঙ্গে থাকে অসুর, সিংহ, মহিষ, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিক ও লক্ষ্মী প্রতিমা। তিনি বলেন, আগে একটা প্রতিমা সেট তৈরি করতে খরচ হতো ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। সেটি বিক্রি হতো ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। কিন্তু এখন বাঁশ, কাঠ, কাদা মাটিসহ প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেশি। তাই প্রকারভেদে প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে খরচ হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। এখন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বেশি লাভ করা যাচ্ছে না।
২৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন আড়ানি পৌর এলাকার আরেক কারিগর মিলন পাল (৪৮)। তিনি বলেন, নদী থেকে কাদা মাটি কিনে এনে প্রতিমা তৈরি করতে হয়। তারপর কাঠ, সুতা, খড়, রং, কাপড় ও মুকুট দিয়ে এক সেট প্রতিমা তৈরি করতে সময় লাগে পাঁচ দিন। কিন্তু প্রতিমা সেট বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না। এবার ৫টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছেন। প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে বিশ হাজার টাকা করে।
নারায়নপুর সার্বজনীন কেন্দ্রীয় দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার বাকু পান্ডে বলেন, এই মন্দিরে প্রতিমা স্থাপন ও আলোকসজ্জার বিপরীতে খরচ হচ্ছে প্রায় দেড় লাখ টাকা, যা গত বছর ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। করোনাকালে বিধি নিষেধ মেনে সবকিছু করার কারণে এবার খরচ কম হচ্ছে। উপজেলা দুর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব সাহা বলেন, গত বছর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৪১টি মন্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে। এবার ২টি কমে ৩৯টি মন্ডপে এই পূজা হবে। তিনি বলেন, নিরাপত্তার ব্যাপারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হবে। এ ব্যাপারে ১৪ অক্টোবর উপজেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে হবে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা সভা।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়