শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২০
রাজশাহীর বাঘায় যৌন হয়রানির প্রতিবাদকারী স্বামী নাজমুল হোসেনকে হারিয়ে ৭ মাসের কন্যা সন্তানকে নিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েছে স্ত্রী মুক্তা খাতুন। নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে নিহত নাজমুল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, স্ত্রী মুক্তা খাতুন, বাবা আজিজুর রহমান, মাসহ নিকট আত্মীয়য়দের বিলোপ। নিহত নাজমুলের রেখে যাওয়া ৭ মাসের একমাত্র কণ্যা সন্তান নুরিয়া জাহানকে কোলে নিয়ে কাঁদছেন স্ত্রী। অকালে স্বামী হারানোর বিয়োগ ব্যথা কোন শান্তনাতেই থামছেনা। অবুৃঝ শিশুটির বোঝার বয়স হয়নি, তার বাবা বেঁচে নেই। সন্তান হারানোর শোকে মুর্চ্ছা যাচ্ছিলেন বাবা, মা আর দুৃই বোন। চলছে স্বজন হারানোর আহাজারি।
তবে এ ঘটনার পর থেকে শ্রেণী পেশার ছোট বড় সব বয়সের নারী পুরুষের হাতে হাতে ফেস্টুন। কোনটাতে লেখা রয়েছে, নাজমুলকে মারলো যারা ফাঁসির দঁড়িতে ঝুলবে তারা, আমাদের আকুতি বিলোপ হোক সন্ত্রাসী, নুরিয়া জাহানের বাবাকে ফিরিয়ে দাও, আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরে খুনিরা কেন বাইরে ঘুরে, সন্ত্রাস মুক্ত এলাকা চাই, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, মৃত্যু হয়েছে নির্মম, বিচার হবে নির্মম, কোন কিছু বুঝিনা ফাঁসি ছাড়া মানবোনা, এলাকাবাসী বেঁধেছে জোট, খুনিদের ফাঁসি হোক। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজারো মানুষ জোট বেঁধে নাজমুৃলকে হত্যাকারিদের ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নামেন, হাতে হাতে ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে। শুধু হত্যাকারিদের বিচারের দাবিই ছিলনা, স্কুল ছাত্রী উত্ত্যক্তকারীর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি তাদের। এ নিয়ে চলছে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, সমাবেশ।
নিহত নাজমুলের চাচা আবু তুয়াব জানান, নাজমুলের পরিবারের এক মাত্র আয়ের ব্যক্তি ছিল সে। তার ৭ মাসের নুরিয়া জান্নাত নামের একটি মেয়ে রয়েছে। এছাড়া তার দুই বোনের অন্যাত্রে বিয়ে হয়েছে। তবে নাজমুলের নিহতের ঘটনা জানার পর থেকে স্ত্রী মুক্তা খাতুন কোন কথা বলতে পারছেনা। সে নির্বাক হয়ে পড়েছে। কারো সাথে কোন কথা বলছে না। কোন সময়ে কাঁদছে আর নির্বাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার রাতেই নিহতের বাবা অজিজুর রহমান আরজেদ আলীর বখাটে ছেলে সুমনকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যাদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, উপজেলার সুলতানপুর গ্রাামের শাহাজান আলীর মেয়ে ও খানপুর জেপি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাজনিন তাবাসুম বৈশাখীকে একই এলাকার আরজেদ আলী ভোলা প্রামাণিকের ছেলে সুমন আলী প্রাায় উত্ত্যক্ত করত। ঘটনাটি বখাটে সুমন আলীর পরিবারকে জানায় ছাত্রীর পরিবার। ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন আলী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ১০-১৫ জনের একটি দল নিয়ে ছাত্রীর বাবা শাহাজান আলী মাস্টারকে বাড়ি ঘেরাও করে মারধর শুরু করে। পরে ছাত্রীর মামা নাজমুল হোসেন এগিয়ে এলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
স/সা
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়