শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ৭ জুলাই ২০২২
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানসৃজন ও সঞ্চালনের জায়গা। সময়ের সাথে এই জ্ঞানের পরিবর্তন হয়ে থাকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েশিক্ষা ও গবেষণা গুণগত মান সমৃদ্ধর জন্য বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ৫০ বছরেরমহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি এ বিশ্ববিদ্যালয়ও একদিনবিশ্বমানের জ্ঞানচর্চার তীর্থস্থানে পরিণত হবে।
বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন শেষে উপাচার্য এসব কথাবলেন। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় শহীদসৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনভবন চত্বরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সাথে সাথে জাতীয়পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা এবং প্রত্যেকটি হলের পতাকা উত্তোলন করা হয়।পরে সাদা পায়রা ও বর্ণিল বেলুন-ফেস্টুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীরউদ্বোধন করে উপাচার্য।
এদিনবেলা ১১টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়েরগণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সুব্রত কুমার মজুমদার এবং বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্তঅধ্যাপক কবি চৌধুরী জুলফিকার মতিন বক্তব্য প্রদান করেন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপকসুলতান-উল-ইসলামের সভাপতিত্ব করেন আলোচনা সভার। প্রতিবছরদিবসটি বর্ণিলভাবে পালন করা হলেও এবছর অন্য আঙ্গিকে পালন করা হচ্ছে।
সিলেটসহ দেশের অন্যজেলায় বন্যার্তদের কষ্টের কথা বিবেচনায় এবার জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন বাতিল করা হয়েছে বলেজানিয়েছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। তিনি জানান, সারা দেশব্যাপী কোভিডেরযে তিব্রতা বেড়ে চলেছে। এছাড়াও সাময়িকভাবে হলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। তাই বর্ণিলসাজসজ্জা ও অন্যান্য আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। এখান থেকে যে অর্থ বাঁচবে সেটা বন্যার্তদেরসাহায্য করা হবে।
এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপাচার্য শিক্ষকদের জন্য নতুন একটি মিনিবাস ও শিক্ষার্থীদেরজন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করেন। ৭০-এর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-দেশেরদ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি)। নানা গৌরবোজ্জ্বল অতীত নিয়েবিশ্ববিদ্যালয়টি ৭০ বছরে পদার্পণ করেছে বুধবার। দীর্ঘ৬৯ বছরের পথ চলায় নিজস্ব আলোয় আলোকিত এ বিদ্যাপীঠ। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গৌরব ও ঐতিহ্য বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই মাত্র ১৬১ জনশিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু। করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পরিসর। ১৯৫৩সালে রোপণ করা বীজটি বতর্মানে বিশাল মহিরুহে পরিণত হয়েছে। শহীদ ড. শামসুজ্জোহার স্মৃতি বিজড়িত দেশের শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপীঠের রয়েছে গৌরব-ঐতিহ্যের সুদীর্ঘইতিহাস।
ব্রিটিশ আমলে রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়রাজশাহী কলেজ। এই কলেজে আইন বিভাগসহ পোস্ট গ্রাজুয়েশন শ্রেণি চালু করা হলেও কিছুদিনপরেই সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তখনই রাজশাহীতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনঅনুভূত হয়। ১৯৪৭ সালের দিকে রাজশাহীতে স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ীবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্দোলন শুরু হয়।১৯৫০ সালের ১৫ নভেম্বর রাজশাহীর বিশিষ্টব্যক্তিদের নিয়ে ৬৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারদাবি জানাতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৫ ছাত্রনেতা। পরে ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে ঢাকায় একটিডেলিগেশন পাঠানো হয়। এভাবে একের পর এক আন্দালনের চাপে স্থানীয় আইন পরিষদরাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়। এই আন্দোলনে একাত্ম হন পূর্ববঙ্গীয়আইনসভার সদস্য প্রখ্যাত আইনজীবী মাদার বখ্শ। অবশেষে১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আইন পাসহয়। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরীকে সঙ্গে নিয়ে মাদার বখ্শরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এর পর শুরু হয় রাবির পথচলা।
বর্তমানে ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ১১৭৭ জন শিক্ষক ও ২০০০ জনপ্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৩৩০জন (বিদেশি শিক্ষার্থী ৫৮ জন)। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৫৭৯ জন ও ছাত্রী ১২ হাজার ৫৫১ জন।বর্তমানে ১২ অনুষদের অধীনে বিভাগ রয়েছে ৫৯টি। বেড়েছে অবকাঠামো। ১২টি একাডেমিকভবনসহ বর্তমানে রাবির ছাত্রদের থাকার জন্য আবাসিক হল রয়েছে মোট ১১টি ও ছাত্রীদের জন্যরয়েছে ৬টি। এছাড়া গবেষক ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক ডরমেটরি।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়