বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১০ ১৪৩১
|| ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২১
রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিবসহ দুই কর্মকর্তাকে নাজেহাল ও হেনস্তার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। ঘটনা সরেজমিন তদন্ত করে দ্রুত মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন ও মাউশির হিসাব ও নীরিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
১১ অক্টোবর কমিটি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে তদন্ত কমিটিকে সব ধরনের সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মোকবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বোর্ড চেয়ারম্যান আরও বলেছেন, তদন্ত কমিটিকে সুষ্ঠুভাবে তদন্তকাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেওয়া হবে।
জানা যায়, ১২ সেপ্টেম্বর বিকালে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিবের কক্ষে প্রবেশ করে বোর্ড অফিসার্স কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হোসেন ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র সেনসহ কতিপয় কর্মকর্তা ত্রাস সৃষ্টি করেন।
তারা বোর্ড সচিব অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক অধ্যাপক মো. বাদশা হোসেনের ওপর চড়াও হয়ে চড় মারতে উদ্যত হন এবং তাদের টানা-হেঁচড়া করেন। প্রেষণে থাকা বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এ দুই কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও নাজেহাল করা হয় ঘণ্টাব্যাপী। সিসিটিভি ফুটেজেও ঘটনার বিস্তারিত উঠে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজের একটি কপি যুগান্তরের কাছেও রয়েছে।
এদিকে হেনস্তার শিকার দুই কর্মকর্তা তাদেরকে হেনস্তকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মোকবুল হোসেনকে একাধিকবার লিখিত আবেদন করেন বলে জানা যায়। যদিও ঘটনার এক মাস পরও বোর্ড চেয়ারম্যান দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। বরং হেনস্তাকারীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং তাদেরকে নানাভাবে প্রশ্রয় দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও বোর্ড চেয়ারম্যান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
এদিকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের এমন ঘটনায় বিভিন্ন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৪ অক্টোবর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির প্রধান ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নেহাল আহমেদসহ কমিটির সদস্য কর্মকর্তারা ১১ অক্টোবর সরেজমিনে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এজন্য ওইদিন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ দপ্তরে উপস্থিত থাকতে কমিটির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদগুলো মূলত মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মন্ত্রী ও সচিব পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে ঘটনাটি অবগত হয়েছেন। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় মন্ত্রণালয় ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্ত কমিটিকে তদন্তকাজে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তারা প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার থেকে প্রেষণে আসা কর্মকর্তারা বোর্ডের কতিপয় নিজস্ব ও পদোন্নতির মাধ্যমে হওয়া কর্মকর্তার পীড়নের শিকার হন। সৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রেষণ কর্মকর্তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না। অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে উদ্যোগ নিলেই তারা রোষানলে পড়েন। ১২ সেপ্টেম্বরের ঘটনাও ছিল এমনই একটি ঘটনা। সুত্র-যুগান্তর
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়