শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৬ ১৪৩১
|| ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২২
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাড়িয়ে বেশ কয়েক যুগ ধরে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী তিলের খাজা। চাঁপাই নবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তিলের খাজা সারা রাজশাহী অঞ্চল জুড়ে খ্যাত।
সেই রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তিলের খাজা আরও উন্নত করে তৈরি হচ্ছে রাজশাহী শহরের রেলগেট এলাকায়। শ্রী উজ্জল সরকার গরম চিনি ফ্যাট করে ফাপা তৈরি করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের লাহারপুর বারোঘড়িয়া ইউনিয়ন থেকে আসা শ্রী উজ্জল সরকার একজন খাজা ব্যবসায়ী।
শ্রী উজ্জল সরকারের সাথে একান্ত আলাপে তিনি জানান যে, তার পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যবাহী তিলের খাজার ব্যবসা তিনি ধরে রেখেছেন। তিনি নিজেই ৬জন অংশীদার নিয়ে খাজা তৈরির ক্ষুদ্র একটি কারখানা গড়ে তুলেছেন।
অংশীদাররা হলেন- শ্রী উজ্জল সরকার, শ্রী ওয়াজিদ সরকার, সোনাতন সরকার, মলিন সরকার, মনোরঞ্জন সরকার ও প্রশান্ত সরকারসহ মোট ৬জন। তারা নিজেরাই খাজা তৈরিতে পরিশ্রম করে থাকেন।
তাদের কারখানায় খাজার সাথে আরো ২টি আইটেম তৈরি করেন তারা। কদমা ও পাদাম ককটি। ব্যবসাটি মূলত সিজিনাল ব্যবসা। শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ খাজার চাহিদা থাকে।
গত কয়েক বছর ধরে প্রতি বছর অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত রাজশাহীতে ঐতিহ্যবাহী তিলের খাজা তৈরি কররেন তারা। দৈনিক ১০ থেকে ১৫ কেজি খাজা নিয়ে যান মোঃ মনসুর রহমান। কেশরহাটে তার দোকান।
মনসুর রহমান বলেন, শীতের সময় খাজার চাহিদা থাকে, আমরা পাইকারী ক্রয় করি ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। এতে দৈনিক ৬-৭ শত টাকা আয় হয় মনসুর রহমানের।
নাটোর থেকে শ্রীকান্ত কুমার শাহা তিলের লাড়ু নিয়ে রাজশাহী আসেন এবং তিলের খাজা নিয়ে নাটোরে বিক্রি করেন। এতে দৈনিক ১৫০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকা আয় করেন শুধু এ সিজিন সময়টুকু বলে জানান তিনি।
শ্রী উজ্জল সরকার জানান, তিল, চিনি, লেবু ও পানি দিয়েই তৈরি হয় তিলের খাজা। ৪ কেজি চিনির মধ্যে সুবিধমত পানি মিশিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা আগুনে উত্তপ্ত করে মিশ্রণকে গাঢ় করা হয়। এরপর একটি সসপেনের মধ্যে সরিষা তৈল-এ রেখে প্রায় ১৫ মিনিট থামিয়ে তাপমাত্রা কমিয়ে পেস্ট করা হয়।
এরপর সিংগটিতে টাংগিয়ে ১৫-২০ বার চিনি টেনে ফাঁপা করা হয়, তারপর হাতে লই দিয়ে (দুইজন মিলে প্রায় ১৫-২০টি ভাঁজ দেয়া) পরিষ্কার পলিথিনের উপর লম্বা (প্রায় ১০-১২ফুট) করে রেখে দিতে হয়।
প্রায় ১০ মিনিট পর ৮ ইঞ্চি করে কেটে ভাজা তিলের উপর কাটা খাজাগুলোকে গড়ানো হয়। এরপর কাটা খাঁজাগুলোকে পলিথিনে প্যকেট করা হয় । এভাবে তিনি দৈনিক গড়ে ২৬০ কেজি খাজা তৈরি করেন। এতে ১৫০ কেজি চিনি ও ৪০ কেজি তিল প্রয়োজন হয়।
শ্রী উজ্জলের অংশীদার মনোরঞ্জন সরকার জানান, কেজি প্রতি উৎপাদন খরচ হয় প্রায় ৯০ টাকা এবং পাইকারী বিক্রয় হয় ১৫০ টাকা, এতে প্রতিদিন গড়ে আয় হয় প্রায় ১৬হাজার ২০০টাকা অর্থাৎ মাসে ৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ।
এর মধ্যে ঘর ভাড়া, বিদ্যুত বিল ও জ্বালানী খরচ। এবাদেও শ্রী উজ্জল সরকারসহ মোট ৬জন অংশীদারের সংসার চলে। এই খাজা রাজশাহী জেলার তানোর, মোহনপুর, কেশরহাট দুর্গাপুর, তাহেরপুর ও বানেশ্বর বাজারসহ চারঘাট ও পুঠিয়ার বিভিন্ন বাজারে পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় করার জন্য সরবরাহ করে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়