বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১০ ১৪৩১
|| ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। কোনো বিড়ম্বনা ছাড়াই খুব সহজেই অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে পৌঁছে যায় টাকা। কিন্তু আধুনিক এ সুবিধা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই অনেক অভিভাবকের।
এ সুযোগে প্রতারকচক্র অভিভাবকদের ধোঁকায় ফেলে কখনো নগদের এজেন্ট, আবার কখনো কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে গোপন পিন নম্বর। আর এভাবেই অভিভাবকদের বৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র। রাজশাহীর পবা উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকদের থেকে এভাবেই উপ-বৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বেড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দামকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এসব স্কুলের ৩৫ থেকে ৪০ জনের অধিক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারক চক্র। অভিভাবকরা বলছেন, তাদের ফোনে টাকা আসলে শিক্ষকরা তাদের জানিয়ে দেন। তারা স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে টাকাগুলো তুলে থাকেন।
গোপন পিন নম্বর সম্পর্কে তাদের তেমন ধারণা নাই। প্রতারকরা তাদের ফোন করে নগদের এজেন্টের পরিচয় দিয়ে একটি পিন নম্বর পাঠায়। এবং এটি তারা জানতে চাই। এবং পরবর্তীতে জানতে পারেন তাদের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষক জানান, এ প্রতারণার বিষয়টি তারা অভিভাবকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। আসলে গ্রামাঞ্চলের অভিভাবকরা তেমন সচেতন না। তাদের ফোন করে গোপন পিন নম্বর জানতে চেয়েছে- তারা সেটা বলে দিয়েছে। আর এভাবেই প্রতারক চক্র তাদের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
তারা আরো জানান, তারা যে অভিযোগ পেয়েছেন এর বাইরেও হয়তো কেউ প্রতারিত হতে পারেন। কেননা এখনো অনেক অভিভাবক টাকা তুলেন নি। অভিভাবকদের মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তারা উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছেন। তিনি প্রতারণার শিকার অভিভাবকদের তালিকা চেয়েছেন। এছাড়া বিষয়টি তারা স্থানীয় থানায় জানিয়েছেন।
মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজনিন নাহার জানান, তার স্কুলের প্রায় ১৫ জন অভিভাবক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অভিভাবকরা তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলছেন। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন প্রতারকচক্র গোপন পিন নম্বর হাতিয়ে নিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছে। বিষয়টি তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছেন। এছাড়া থানায় অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে পবা উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। প্রতারণার শিকার অভিভাবকদের তালিকা তৈরি করে জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম জানান, এ রকম একটি তালিকা উপজেলা থেকে পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানে বিস্তারিত তথ্য নেই। এজন্য বিস্তারিত তথ্যসহ তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে। সেটা পেলে নগদের অফিসসহ প্রশাসনকে সেই তালিকা প্রদান করা হবে।
যেসকল ফোন নম্বর থেকে টাকাগুলো হাতিয়ে নেয়া হয়েছে তাদের কেউ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে। এছাড়া এরকম প্রতারণার শিকার যেন অভিভাবকরা না হন সেজন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মাধ্যমে তাদের সচেতন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে দামকুড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ মাহবুব জামান জানান, এ রকম কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়