বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৮ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
বছরের শুরু থেকেই তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চল। খাঁ খাঁ রোদ্দুরে অস্থির জনজীবন শান্তি পেয়েছে মাত্র কয়েকদিন হলো। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় জনজীবনে শান্তি ফিরেছে। এর আগে রাস্তার পাশে বরফগলা পানির সঙ্গে আখের রস, ডাবের পানি আর দুধের ঘোল খেয়ে তৃষ্ণা মিটিয়েছে মানুষ। ঠিক এমন সময়ই বিক্রি শুরু হয়েছে দুধ-কলার আইসক্রিম ‘রোলার কোস্টার’। জনপ্রিয়ও হয়েছে বেশ।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার এলাকার রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে রোলার কোস্টার আইসক্রিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন। উত্তরাঞ্চলের রাজশাহীতে সর্বপ্রথম সুস্বাদু এই খাবারটি নিয়ে এসেছেন নাটোরের রিংকু সরকার। এমনটিই দাবি করেছেন এই তরুণ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, দেশি-বিদেশি নানান ফলের মিশ্রণে এই আইসক্রিম ক্রেতাদের কাছে পরিবেশন করা হচ্ছে। এটি তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে কলা, ড্রাগন ফল, দুধ, আনারস, মাল্টা, গাজরসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক ফল। প্রতি বাটি আইসক্রিমের দাম রাখা হচ্ছে ৩০ টাকা। আইসক্রিমের পরিমাণের তুলনায় দাম ক্রেতার নাগালের ভেতরেই।
এটি তৈরির প্রক্রিয়াও ভিন্ন ধরনের। দেখা গেলো লোহার তৈরি বেশ মোটাতাজা গোলাকার চাকতি ঘুরছে ক্রমাগত। তাতে ব্লেড লাগিয়ে কুরে নেওয়া হচ্ছে আইসক্রিম! প্লাস্টিকের কাপে ঝরে যাওয়া আইসক্রিম চামচ দিয়ে একে একে ক্রেতার হাতে দিচ্ছেন রিংকুর সহকারী সোহেল রানা। আর দোকান ঘিরে আইসক্রিম হাতে নিয়ে বেশ মজা করে খাচ্ছেন ১০-১২ জন শিক্ষার্থী।
রিংকুর কাছে এই আইসক্রিমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমে লোহার গোলাকার ট্যাংকে লবণ আর বরফ ঢোকানো হয়। আর ট্যাংকের গায়ে কলার ব্লেন্ড, গরুর দুধ, দু-তিন কালারের ড্রাগন ব্লেন্ড ও মাল্টার জুস! ভেতরের বরফের ঠান্ডায় নিমিষেই জমে এসব ব্লেন্ড করা ফলের রস। তাতেই তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু রোলার কোস্টার আইসক্রিম।
ক্রেতারা বলছেন, কলা, ড্রাগন ফল, দুধ, আনারসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক ফল দিয়ে তৈরি রোস্টার আইসক্রিমের দাম তুলনামূলক কম। ৩০ টাকায় এক বাটি আইসক্রিম বেশ তৃপ্তি সহকারেই খাওয়া যায়।
রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী হযরত আলী জাগো নিউককে বলেন, ‘এর আগে রাজশাহীতে এমন আইসক্রিম দেখিনি। তবে ইউটিউবে মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে। তখন টেস্ট নেওয়ার চিন্তা করেছি কিন্তু পাইনি। কলেজের সামনেই বিক্রি হচ্ছে এখন। এখানে পেয়ে বেশ ভালোই লাগছে। আইসক্রিমের স্বাদ যেমন ভালো, দামও হাতের নাগালের মধ্যেই।’
কলেজের আরেক শিক্ষার্থী বদরুদ্দোজা। ইতিহাস বিভাগে তার ইনকোর্স পরীক্ষা শেষেই এসেছেন বাইরে। আইসক্রিম খেতে খেতে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভ্যানিলা আইসক্রিম আমার খুব পছন্দ। তবে ফেসবুকে দেখেছি রোলার কোস্টার আইসক্রিম বিষয়ে। এই আইসক্রিম রাজশাহীতে কিছুদিন হলো এসেছে। মজা করে কয়েকবার খেয়েছি। খারাপ লাগে না।’
রোলার কোস্টার আইসক্রিম বিক্রেতা রিংকু বলেন, ‘কয়েক মাস আগে ফেসবুকে একটি ভিডিও দেখি। তারপর থেকে আইসক্রিম বানানোর সিদ্ধান্ত নিই। এখন পর্যন্ত ভালোই সাড়া পড়েছে। ভবিষ্যতে আরও ভালো সাড়া পাওয়ার আশায় এর পিছু এখনই ছাড়ছি না। এক মাস আগে যাত্রা শুরু করেছি, অভিজ্ঞতা মন্দ নয়। টাকাও আসছে মোটামুটি।’
এই খাবারে স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা হতে পারে কি না তা জানতে কথা হয় রাজশাহী বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাসান আল মারুফের সঙ্গে।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে উপাদানগুলো দেখে মনে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাবার। এর তেমন পার্শপ্রতিক্রিয়া হওয়া সম্ভাবনা নেই।’
এ বিষয়ে রাজশাহী নিরাপদ খাদ্য অফিসার লোকমান বলেন, ‘আমি এখনো সরাসরি দেখিনি। দেখলে পরে বলা যাবে কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত। তবে উপাদান যেগুলো রয়েছে সবগুলো প্রাকৃতিক বলে মনে হচ্ছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়