বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১১ ১৪৩১
|| ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০২০
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির পর ভিটামিন-জ্বরসহ যেসব সাধারণ ওষুধ মিলতো সব ফার্মেসিতেই। হঠাৎ করে সেসব ওষুধ বাজার থেকে অনেকাংশে উধাও হয়ে গেছে। পৌরসভার ওষুধের পাইকারি দোকানগুলোতেও চাহিদা মতো পাওয়া যাচ্ছে না এসব ওষুধ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে বাড়ানো হয়েছে নাপা, ফেক্সো, জিমেক্স, সিভিট ট্যাবলেটের দাম। এই তালিকায় আছে অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিম্যালেরিয়াল ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন জাতীয় ওষুধসহ জীবাণুনাশক সামগ্রীও।
ফার্মেসি মালিকরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে প্যারাসিটামল, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিম্যালেরিয়াল, ভিটামিন সি ট্যাবলেট ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন জাতীয় ওষুধের বিক্রি কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ওইসব ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি করোনাজয়ী তানোর উপজেলার একাধিক ব্যক্তি বলেন, করোনার চিকিৎসা একটি গাইডলাইন অনুসারে চলে। কিন্তু অনেকে স্ক্যাবো ট্যাবলেট ও ডক্সিসাইক্লিন ক্যাপসুলসহ নানান ওষুধ ফার্মেসি থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এসব ওষুধ করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় কার্যকর বলে এখনও প্রমাণিত হয়নি।
ফেরদৌস জামান সিদ্দিকী (৪০) নামের একজন হৃদরোগী বলেন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বুকে ব্যথা, চর্বি নিয়ন্ত্রণ, শরীরের বাড়তি পানি কমানোর জন্য ব্যবহার করা ওষুধ অ্যাসপ্রিন, ডিলটিয়াজেম, গ্লিক্লাজাইড, গ্লিবেনক্লামাইড, আইসোসরবিড, লিসোনোপ্রিল, নাইট্রোগ্লিসারিন, পটাশিয়াম ক্লোরাইড, রেমিপ্রিল, ফেনোফিব্রেট ক্যাপসুলের দাম আগের তুলনায় বেশি রাখা হচ্ছে।
এদিকে এই সুযোগে ওষুধের দোকানীরাও হাতিয়ে নিচ্ছেন অধিক দাম। তানোর পৌরসভার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, এক পাতা স্ক্যাবো ট্যাবলেট (৬ মিলিগ্রাম) এর দাম ছিল ৫০ টাকা। এখন সেই ওষুধের দাম নেওয়া হচ্ছে ৮০- ১৩০ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা সদরের কয়েকজন ওষুধ বিক্রেতা জানান, তানোর ও মুন্ডুমালা পৌরসভার ফার্মেসিগুলোতে এসব ওষুধের গলাকাটা দাম নেওয়া হচ্ছে।
প্রচারমাধ্যমে করোনা ঠেকাতে ভিটামিন সি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার পর সিভিট ট্যাবলেটও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফার্মেসিতে ওষুধ কেনার পর বিক্রয় রশিদও দেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির তানোর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি হামিদুর চৌধুরী বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে তানোরে বেশির ভাগ ফার্মেসিতে জ্বর, কাশি, সর্দি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের ওষুধ সঙ্কট। খুচরা বাজারে যে অর্ডার সে অনুপাতে কোম্পানি দিতে পারছে না।
তবে সরবরাহ সঙ্কটের কারণে বাড়তি দাম রাখার অভিযোগ সত্য নয়। কারণ বাইরে যারা বিক্রি করছেন তারা ভাসমান বিক্রেতা। ক্রেতাদের কাছে অনুরোধ করব, রাস্তা থেকে এসব ওষুধ ও পণ্য না কেনার জন্য। দোকান থেকে কিনে অবশ্যই রসিদ নেবেন। যাতে বেশি দাম কেউ নিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রোজিয়ারা খাতুন বলেন, উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনা সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব নেই। যদি কোনো ফার্মেসি কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে, তাহলে আমরা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেবো এবং সতর্ক করে দেবো। কারণ এখানে ওষুধসহ সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব নেই।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়