শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২০
রাজশাহীর বাঘায় পানি নিষ্কাশনের সু-ব্যবস্থা না থাকায় চলতি বর্ষা মৌসুমে ভারি বর্ষণের কারণে প্রায় চার হাজার বাড়ির উঠানসহ বাড়ির চারপাশে পানি জমে আছে।
এর ফলে গরু, ছাগল ও শিশুদের নিয়ে খুব কষ্টে বসবাস করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌর কর্তৃপক্ষকে বহুবার বলা হলেও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। পৌর এলাকায় ড্রেন নির্মাণ করা হলেও পরিকল্পনায় ত্রুটি থাকায় এর কোন সুফল পাচ্ছে না লোকজন। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পৌরবাসিদের অনেকে।
সরেজমিনে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। খোদ উপজেলা পরিষদ চত্বর প্রবেশ মুখে এবং সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে জমে আছে হাঁটুপানি।
এছাড়াও এ উপজেলার ২ টি পৌরসভা ও ৭ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ বাড়িতে পানি জমে আছে। আবার অনেকের ঘরের বারান্দা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে সাপ আতঙ্কে নির্ঘম রাত কাটাচ্ছেন অনেকে।
বাঘা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাজুবাঘা নতুনপাড়া মহল্লা এবং আড়ানী পৌরসভার সাহাপুর গ্রামের নিচু এলাকায় অধিকাংশ বাড়িতে পানি জমে আছে।
এসব এলাকার বাসিন্দা, আরজিনা, শকিনা, শাপলা, অমেলা, জিল্লুর, আমিনুল, হাকিম, হাসান, জব্বার, বাদশা, মান্নান, রফিকুল, মহির, সাহাব, রবিউল, আক্কাস, আফজাল, ও হাফেজের বাড়িতে জলবদ্ধতায় উঠানে পানি জমে আছে।
এ বিষয়ে বাঘা পৌর সভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে ৯টি গরু নিয়ে খুবই বেকায়দায় আছি।
আমার বাড়ির উঠানে ও গরুর গোয়ালঘরে পানি জমে আছে। ফলে গরু নিয়ে খুব কষ্টে আছি। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
আব্দুল হামিদ, বলেন বাঘা পৌরসভায় তিন বছর আগে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণ করা হলেও এর কোন সুফল পাইনি। এ বিষয়ে এলাকার অনেকেই একমত পোষন করেন।
বাঘার পৌর মেয়র আবদুর রাজ্জাক বলেন, এবার বৃষ্টিপাত বেশি হচ্ছে। তারপরও পানি নিষ্কাশনের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এছাড়া প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, বর্ষা শুরু হওয়ার কারণে কাজটা করা সম্ভব হয়নি। আশা করছি বৃষ্টি কমলে পানি নিষ্কাশনের কাজ শুরু করা হবে।
এদিকে ইউনিয়ন পর্যায়ে উপজেলার মনিগ্রামের ভানুকর ও বাজুবাঘার নিশ্চিন্তপুর ও জোত সায়েস্তা এবং গড়গড়ি ও বাউসা এলাকায় প্রায় ১ হাজার বাড়িতে বর্ষণের পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।
এই পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানির মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার লোকজনকে।
বিষয়টি স্থানীয় মেম্বর ও চেয়ারম্যানকে জানিয়ে কোন সুরাহ হচ্ছে না বলে দাবি করেন ওইসব এলাকার সুধী মহল।
এ বিষয়ে মনিগ্রাম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হয় তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশি বৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তি হচ্ছে।
এটি নিস্কাশনের জন্য এই মুহুর্তে কোন বরাদ্দ নেই। তারপরেও যত দ্রুত সম্ভব পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার প্রতিটি এলাকায় পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে পুকুর খনন করা হয়েছে। এই কারনে পানি নামতে না পেরে জলাবন্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রতিটি এলাকায় কর্তৃপক্ষকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রত্যেক বিলের বন্ধ করা মুখ খুলে দিলে এই জলাবদ্ধতার থেকে মুক্তি পাবে মানুষ।
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বেশি পানি জমে থাকলে আমন চাষ করা কষ্টকর হবে। পানি নিস্কাশনের বিষয়ে তিনি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানান।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়