শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২২
রাত সাড়ে আটটার মধ্যে ছাত্রীদের হলে ফেরার সময়সীমা নির্ধারণ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রী হল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, গত সোমবার (৯ মে) ছাত্রী হলের প্রাধ্যক্ষের এক সভায় এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ছাত্রী হলগুলোতে এটি বিজ্ঞপ্তি আকারে টানিয়েও দেওয়া হয়েছে।
ছয় ছাত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সকল ছাত্রী হলের প্রাধ্যক্ষদের সর্বসম্মতিক্রমে মেয়েদের রাতে হলে প্রবেশের সময় রাত সাড়ে আটটায় নির্ধারণ করা হলো।
তবে এটি বিজ্ঞপ্তি নয় বলে দাবি করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল। তিনি বলেন, এটাতো আসলে নোটিশ না, একটা রেজোল্যুশন মাত্র।
এর আগে আমার হলের মেয়েরা বলেছিলো হলে প্রবেশের সময় রাত সাড়ে আটটা হলে তাদের সমস্যা হবে না। আর প্রভোস্ট কাউন্সিলে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমরা সব হলের মেয়েদের সঙ্গে বসবো সময়টা নির্ধারণ করার বিষয়ে। পাশাপাশি আমরা এই সিদ্ধান্তও নিয়েছিলাম প্রতিটা হলের মেয়েদের সঙ্গে আলোচনার সময়, মেয়েদের সব কয়টা হলের প্রাধ্যক্ষরাই উপস্থিত থাকবো। কিন্তু এ বিষয়টাকে আমাদেরই একজন সদ্য দায়িত্ব পাওয়া প্রাধ্যক্ষ একটু ভুল বুঝে নোটিশ আকারে দিয়ে দিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিটি যে আসলে সঠিক নয়, এবিষয়ে জনসংযোগ দপ্তরের মাধ্যমে শীঘ্রই একটা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হবে বলেও জানান এই প্রাধ্যক্ষ।
এদিকে গতকাল বুধবার বিজ্ঞপ্তিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার' নামক ফেসবুক গ্রুপে ভাইরাল হওয়ায় পর থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন হলের আবাসিক ছাত্রীরা। বিজ্ঞপ্তিটিকে সান্ধ্য আইন বলে মনে করছেন তারা।
ছাত্রীরা বলছেন, সান্ধ্য আইন মোটেও উচিত নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য। এটা রীতিমত হেনস্তা করা।
বেগম খালেদা জিয়া হলের কঙ্গনা সরকার মিল্টি নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সান্ধ্য আইন মোটেও উচিত নয়। এটা রীতিমত হেনস্তা করা। আজকের এই দেশে দাঁড়িয়ে এই ধরনের নিয়ম বেঁধে দেওয়া একদম অযৌক্তিক, স্বাধীনতার অপব্যবহার।
এতে করে ছাত্রীদের মানসিক অবস্থা আরও চাপের সম্মুখীন হবে। যদি রাত সাড়ে ৮টার পরে এতই সমস্যা তাহলে প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুক। এটা তাদের দায়িত্ব। এটা না করে কর্তৃপক্ষ একটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক জেলখানার কয়েদিদের মতো নিয়ম জারি করেছে যা মেনে নেয়া অসম্ভব। আশা করি কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।
মন্নুজান হলের মৌ নাহার চৌধুরী নামের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায় আমাদের একাডেমিক কাজই হয় রাত ৮ টা পর্যন্ত। আবার যখন নাটকের কাজ হয় তখন রাত ১০টা বাজে। এছাড়া অন্যান্য বর্ষের নাটকের সময় আমাদের কাজ করতে হয়। তখন কখনও রাত ১১টাও বেজে যায়। এরপর বাইরে থেকে খেয়ে ক্লান্ত শরীরে হলে ফিরতে হয়। এসময় হল গেটে দাঁড়িয়ে সবকিছু হল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে হলে প্রবেশ করাটা বিরক্তিকর এবং একপ্রকার মানসিক হেনস্তা। আমি হল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি তারা যাতে তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকবছর ধরে সান্ধ্য আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্রীরা। সর্বশেষ গত বছরের ৫ নভেম্বর সান্ধ্য আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়