বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবি এবং সার্জেন্ট জহুরুল হক হত্যার প্রতিবাদে ১৪৪ ধারা ভেঙে ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাস্তায় নেমেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। তাদের ওপর পাকিস্তানি সেনারা গুলি করার প্রস্তুতি নিলে ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা।
ছাত্রদের সামনে দাঁড়িয়ে সেনাদের বলেছিলেন, ‘ডোন্ট ফায়ার, আই সেইড ডোন্ট ফায়ার! কোনো ছাত্রের গায়ে গুলি লাগার আগে যেন আমার বুকে গুলি লাগে।’ ক্যাপ্টেন হাদী পিস্তল বের করে ড. জোহাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়েন। পরে গুলিবিদ্ধ ড. জোহাকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
এই দিনটিকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি দীর্ঘদিনের। এ দাবি এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উঠছে। কমিটির সদস্য ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বিষয়টি স্থায়ী কমিটিতে তোলার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, এ দাবির সঙ্গে তিনিও একমত।
শহীদ ড. শামসুজ্জোহার ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আজকের এই দিনটি জাতীয়ভাবে শিক্ষক দিবস ঘোষণা দাবি জানানো হচ্ছে। এটি নিয়ে পার্লামেন্টে কথা বলেছি। কিন্তু আজও স্বীকৃতি মিলেনি। আমরা চাই, এই দিনটিকে জাতীয় শিক্ষক ও শিক্ষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক। আমি যেহেতু এখন শিক্ষামন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটিতে আছি, বিষয়টি দ্রুতই কমিটিতে তোলা হবে।
বর্তমানে শিক্ষা প্রশাসনে দুর্নীতির ছায়া পড়েছে উল্লেখ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাবেক এই ভিপি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০৪০ সালে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের অংশীদারি হবে। কিন্তু সেজন্য অপরিহার্য হচ্ছে মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং মাধ্যমিক স্কুলগুলোর বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। শিক্ষা প্রশাসনে দুর্নীতির ছায়া পড়েছে। এখান থেকে রক্ষা করতে না পারলে আমরা উন্নত বিশ্বের অংশ হতে পারবো না।
এক দার্শনিকের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, কেউ যদি এক বছরের পরিকল্পনা করতে চায়, তবে সে যেন ধান চাষ করে। কেউ যদি ১০ বছরের পরিকল্পনা করে তবে সে যেন গাছ লাগায় এবং কেউ যদি ১০০ বছরের পরিকল্পনা করতে চায় তবে সে যেন তার সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে। তাই আমাদের সন্তানদেরও সেই সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে শহীদ ড. শামসুজ্জোহার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন ফজলে হোসেন বাদশা। পরে ওয়ার্কাস পার্টির পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনেক ড. জ্জোহার স্মৃতিস্তম্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে ওয়ার্কাস পার্টির রাজশাহী মহানগর সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু দলীয় নেতাকর্মীদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
ওয়ার্কাস পার্টি রাজশাহী মহানগর সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবুর সঞ্চালনায় এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুজিত সরকার, ওয়ার্কাস পার্টির মহানগর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অ্যাভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, সাদরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, সিরাজুর রহমান খান, আব্দুল মতিন, মনির উদ্দীন পান্না, মনিরুজ্জামান মনি, মতিহার থানার সভাপতি রমজান আলী, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক সম্রাট রায়হান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম প্রমুখ।
স/সা
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়