বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৮ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২০
চরের কথা পরে। ঠিক তাই! রাজশাহীর পবার হরিয়ান ইউনিয়নের খিদিরপুরের পদ্মা নদীর মধ্যচর। যার অবস্থান মূল ভূ-খণ্ডের বাইরে নদী গর্ভে। শীতকালে এখানে অবিরাম বহে হাড় হিম করা ঠান্ডা বাতাস। বাতাস ও শীতে বেশ কাবু করেছে এই এলাকার মানুষগুলোকে। তাই সরকারি সহায়তার অপেক্ষায় দিন কাটছে এই এলাকার বাসিন্দাদের। যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোটাতে হিমসিম খেতে হয়। সেখানে তাদের কাছে পোশাক কেনা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়।
তবে স্থানীয় প্রতিনিধি বলছেন, ‘মাত্র ১৩টি কম্বল পেয়েছেন, পুরো ওয়ার্ডের জন্য। সরকারি বরাদ্দের জন্য জানানো হয়েছে।’
ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ভাঙা-গড়ার মধ্যেই মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। এই চরে পদ্মার করাল গ্রাসে সর্বস্বান্ত হওয়া প্রায় ১০০ পরিবারের বাস। যাদের সংসার চলে দিন এনে দিন খেয়ে। পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে এই চরেই। কিন্তু মেলেনি তীব্র শীত নিবারণে কোনো সহায়তা। তাই ভরা শীতে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।
এলাকার মুসলিমা বেগম বলেন, ‘ঠান্ডার জ্বালায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কষ্টে থাকতে হয়। উপায় নাই। চর থেকে যাবো কোতি (কোথায়)। যাওয়ার জায়গাও নাই।’
শীতকাল তাই পদ্মার মধ্যচরের পুরো এলাকা কুয়াশায় ঢাকা। সঙ্গে বইছে অবিরাম বাতাসও। কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে স্থানীয়দের আগুন পোহাতে। তাদের কাছে শীত নিবারণের এটিই মাত্র মাধ্যম।
স্থানীয়রা বলছিলেন, দিনের চেয়ে রাতের ঠান্ডা বাতাস সহ্য করা অসম্ভব হয়ে যায়। হাড় পর্যন্ত কাঁপে। রাতে ঠান্ডা ভাত খেলে কাঁপুনি উঠে যায়। কোনো মতে দিন পার করতে হচ্ছে- বিকল্প যাওয়ার জায়গা নেই বলে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ শুধু নির্বাচনের সময় দেখা মেলে স্থানীয় প্রতিনিধিদের। ভোটের সময় অনেক প্রতিশ্রুতি দেয় তারা। ভোটের পরে দেখা মেলেনা তাদের।
শাহানা বেগম জানান, ‘আল্লাহ ছাড়া আমাদের কেউ নাই দুনিয়ায়। তারা কত মানুষকে কত কিছু দেয়। বয়স্ক ভাতা ও কম্বল দেয়। আমাকে কেউ কোনো দিন কিছু দেয়নি।’
স্থানীয়দের অভিযোগ ভরা শীতেও তাদের জুটছে না কম্বল। মিলছে না কোনো সরকারি সহায়তাও। তাই শহরের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
হরিয়ান ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম মোস্তফা বলেন, তার ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ হাজার ২০০ জন। এর মধ্যে পুরো হরিয়ান ইউনিয়নের জন্য কম্বল এসেছে মাত্র ২০৯টি। তিনি পেয়েছেন ১৩টি।
তিনি আরো বলেন, এই অল্প সংখ্যক কম্বল কিভাবে দেবেন। আরো কম্বলের জন্য তিনি আবেদন করেছেন। কম্বল আসলেই পৌঁছে দেয়া হবে।
স/এমএস
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়