শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৯
ক্যাসিনো গডফাদার ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলা তদন্ত করছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে মামলা দুটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন।
এ কারণে রিমান্ড মঞ্জুরের পর সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে ডিবি হেফাজতে রাখা হলেও তেমন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। মঙ্গলবার অস্ত্র ও মাদকের দুটি মামলায় সম্রাটকে ৫ দিন করে ১০ দিন এবং তার সহযোগী আরমানকে মাদক মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) লিগ্যাল মিডিয়া উইংয়ের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে র্যাব। তাদের আজ (বুধবার) রাতে অথবা বৃহস্পতিবার সকালে ডিবি থেকে র্যাব হেফাজতে নেয়া হবে। এরপর দেশে-বিদেশে থাকা সম্পদসহ বিস্তারিত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে ডিবি সূত্র জানিয়েছে, মামলা র্যাবে হস্তান্তরের কারণে তারা সম্রাটকে জোরালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। তবে মঙ্গলবার রাতে তাকে কিছুটা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
ক্যাসিনো, মাদক, অবৈধ মার্কেট-দোকান থেকে মাসে সম্রাটের একশ’ কোটি টাকার বেশি আদায় হতো। ভাগবাটোয়ারা শেষেও বিপুল টাকা থাকত তার। এসব বিষয়ে সম্রাটকে কিছুটা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তিনি মুখ খোলেননি। কোন দেশে কত টাকা রেখেছেন, এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি সম্রাট। বারবার এক কথাই বলছেন, তার কাছে টাকা নেই।
এদিকে র্যাব সূত্র জানিয়েছে, অভিযানের সময় সম্রাটের কাকরাইলের কার্যালয়ে টাকা লেনদেন সংক্রান্ত একটা নথি পাওয়া যায়। তবে টাকা কোথায় রাখতেন, এর প্রমাণ মেলেনি। সম্রাটকে র্যাব হেফাজতে নেয়ার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এদিকে র্যাব সূত্র জানিয়েছে, জি কে শামীম, খালেদ ও অন্য সহযোগীদের জিজ্ঞাসাবাদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত হয়েছে দেশের বাইরে সম্রাট ও খালেদের বেশি সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে তাদের কয়েকশ’ কোটি টাকার সম্পদ ও ব্যবসা আছে।
মালয়েশিয়ার আমপাংয়ের তেয়ারাকুন্ডে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে সম্রাটের। সেই সঙ্গে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকেও তার অ্যাকাউন্ট আছে। এসব অ্যাকাউন্টে নিয়মিত লেনদেন হওয়ার তথ্য এসেছে র্যাব ও গোয়েন্দাদের হাতে। রিমান্ডে এসব বিষয় বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সম্রাটকে।
এদিকে পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশে সম্রাট ও তার সহযোগীদের সম্পদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। কয়েকটি টিম ওইসব দেশ ঘুরেও এসেছে। ওইসব দেশে সম্রাট, খালেদ, জি কে শামীমসহ অন্য সহযোগীদের ব্যবসার পাশাপাশি ফ্ল্যাট-বাড়ি আছে। ওইসব সম্পদ তাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে উদ্ধার করতে নানাভাবে চেষ্টা চলছে।
এ নিয়ে একাধিক সংস্থা কাজ শুরু করে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য রয়েছে, ব্যাংকক ও মালয়েশিয়ায় তাদের তিনটি হোটেল ও তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে। দুবাইয়ে সম্রাট, শামীম ও খালেদের মোটর পার্টস ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, শামীম ও খালেদ রিমান্ডে থাকার সময় তাদের পাশাপাশি সম্রাটের সম্পদের ব্যাপারেও বিশদ তথ্য দিয়েছেন। তারা বিদেশে অর্থ পাচার করার কথাও স্বীকার করেছেন। এসব চিহ্নিত করে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সম্রাটের সম্পদের তথ্যও উঠে এসেছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে।
৭ অক্টোবর র্যাব-১ এর ডিএডি আবদুল খালেক বাদী হয়ে রমনা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনের এ দুটি মামলা করেন। অস্ত্র মামলায় শুধু সম্রাট এবং মাদক মামলায় সহযোগী আরমানসহ সম্রাটকে আসামি করা হয়।
ওইদিনই দুই মামলায় আসামিদের আদালতে হাজির করে গ্রেফতার দেখানো এবং রিমান্ডের আবেদন করা হয়। সম্রাটের অসুস্থতার কারণে ৮ অক্টোবর তাকে হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়। তিনি সুস্থ হওয়ার পর মঙ্গলবার সহযোগীসহ তাকে আদালতে হাজির করা হয়। ৬ অক্টোবর চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও আরমানকে গ্রেফতার করে র্যাব।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়