মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ৪ ১৪৩০
|| ০৯ রমজান ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২১
গ্রিন ও ক্লিন সিটির সৌন্দর্য পিপাসুদের অন্যতম বিনোদন স্পট পদ্মাপাড়। এই নান্দনিক সৌন্দর্যের কারুশিল্প এবং শিল্পী উভয়ই আজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তজার্তিক অঙ্গনে পরিচিতি পাচ্ছে। সৌন্দর্যের মডেল হিসেবে এই সিটি এখন উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
আর এই সৌন্দর্যের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে পদ্মাপাড়। আর এই পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামানের নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এরমধ্যে অন্যতম একটি লালনশাহ পার্ক। এরই মধ্যে এই পার্কের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই পার্ক এরই মধ্যে পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছে নতুন রূপে। যেই সৌন্দর্যের মোহে নগরবাসীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন। পদ্মাপাড় সংলগ্ন দরগাপাড়ায় অবস্থিত হযরত শাহমখদুম রূপোষ (রহ.) মাজার শরীফ। এর সামনের পদ্মাপাড় জুড়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) এর উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে লালনশাহ পার্ক।
রাসিক-এর চলমানা কার্যক্রমে এরইমধ্যে পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্যে এক আকর্ষণীয় পরিবর্তন এসেছে। যুক্ত হয়েছে দুইটি নান্দনিক ব্রিজ। পদ্মাপাড়ে যত্রযত্র বিষ্ঠা আর আবর্জনার পরিবর্তে হয়েছে সবুজ ও পরিষ্কার। এমন সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছে দর্শনার্থীরা।
এবিষয়ে কথা হয় পদ্মাপাড়ে ঘুরতে আসা আফরোজা ও সেলিম দম্পতির সঙ্গে। যারা ঢাকা থেকে রাজশাহীতে ঘুরতে এসেছেন। তারা জানান, দীর্ঘ সময় পরে তারা রাজশাহীতে এসেছেন।
গত পাঁচ-ছয় বছরে রাজশাহীর চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেছে। পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্যেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে রাসিকের বিনোদনবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচির অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। দর্শনার্থীরা এখানে স্বাচ্ছন্দ্যে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে পারে।
এদিকে, চলমান নির্মাণ কার্যক্রমের মধ্যেও ৯ নং ওয়ার্ডের পদ্মাপাড়ে কিছু অবৈধ স্থাপনা ও গরু-ছাগল পালন করা হচ্ছিলো। এতে পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছিলো। এদের উৎপাতে পদ্মাপাড়ে লাগানো বেশকিছু গাছ মরে যায়। যেটি নজরে আসে রাসিক কর্তৃপক্ষের।
সৌন্দর্য রক্ষায় ৩১ আগস্টের মধ্যে ৯ নং ওয়ার্ড এলাকার পদ্মা তীরবর্তী বাঁধের ধার, ফুটপাত, রাস্তা বিভিন্ন প্রকার অবৈধ স্থাপনা ও গরু-ছাগল অপসারণে এলাকাবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছিলো রাজশাহী সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একটি টিম পদ্মাপাড় এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা নিজ দায়িত্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে এলাকাবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন। সিটি করপোরেশনের অনুরোধে ইতোমধ্যে অনেকে নিজ দায়িত্বে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেছে। আর যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে সেগুলোও দ্রুত সময়ের মধ্যে অপসারণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
পরিদর্শনকালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ৯ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, সচিব মশিউর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইমরানুল হক, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোকাম্মেল আলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সংশ্লিষ্ট প্রকল্প) ফররুখ আহমেদ শিশির উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে ২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে লালনশাহ পার্কের উন্নয়ন কাজ চলছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ৯ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাউন্ডারি ওয়াল, সৌন্দর্য্যবর্ধক গ্রিলদ্বারা বেষ্টিত রেলিং, ওয়াকওয়ে, দর্শনার্থীদের বসার বেঞ্চ, ক্যাফেটেরিয়া সংস্কার করা হচ্ছে। লালনশাহ বাঁধ সংলগ্ন রাস্তাটি প্রশস্তকরণসহ ফুটপাত নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পদ্মা গার্ডেন সংলগ্ন ব্রিজ থেকে শাহ মখদুম রূপোষ মাজার সংলগ্ন ব্রিজ পর্যন্ত ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে হযরত শাহ মখদুম (রহ.) মাজার সংলগ্ন এলাকায় একটি ও পদ্মা গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় আরেকটি ঝুলন্ত ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।
৯৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ওভার ব্রিজ দু’টি চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রং আর তুলির আঁচড়ে ওভারব্রিজ দু’টিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নান্দনিকভাবে।
এরআগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে পদ্মাপাড়ের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়