শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৩ ১৪৩১
|| ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২০
‘তামাকের কারণে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাদকের ভয়াল ছোবলে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই তরুণ প্রজন্মকে তামাকের কড়ালগ্রাস থেকে রক্ষার জন্য রাজশাহী মহানগরীকে ধূমপানমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত একটি নগরী হিসেবে গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। ৯ মাসে বাংলাদেশকে পাকিস্তানিদের হাত থেকে স্বাধীন করা সম্ভব হয়েছে। কাজেই আমরা সকল অসম্ভবকে জয় করতে পারি। সুতরাং খুব অল্প সময়ের মধ্যে ১৬ নম্বর ওয়ার্ড তথা পুরো রাজশাহী নগরীকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করা সম্ভব।’
আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকাল ৫টায় মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র উদ্যোগে এবং ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের আয়োজনে রাসিকের ১৬নং ওয়ার্ড ‘তামাকমুক্ত ঘোষণা’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদ এসব কথা বলেন।
এই ক্যাম্পেইন কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করছে ‘ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্স-সিটিএফকে’।
স্থানীয় বখতিয়ারাবাদ জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক নবীন আহম্মেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ৬নং জোনের (১৬, ১৭ ও ১৮ নং ওয়ার্ড) মহিলা কাউন্সিলর মাজেদা বেগম, স্থানীয় বাইতুল আমান জামে মসজিদের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান, বিশিষ্ট সমাজসেবক সুরাজ্জামান, স্থানীয় স্বদেশী ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতির সভাপতি সালেহ মোহাম্মদ তপন, স্থানীয় কয়েরদারা জননী গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল হক, ১৬নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সচিব নুরে আলম রানা, বখতিয়ারাবাদ ‘সিডিসি’র কোষাধ্যক্ষ শামিমা আরা, ১৬নং ওয়ার্ড ইয়ুথ ক্লাবের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস লিজা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা রাখেন ‘এসিডি’র তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের মিডিয়া ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুল।
এসময় অন্যদের মধ্যে এসিডির প্রোগ্রাম অফিসার আনোয়ার হোসেন, তৌফিকল ইসলাম, রাজশাহী মহানগর তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য গঠিত ইয়ূথ গ্রুপের সহ-সভাপতি সাব্বির আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক, ১৬নং ওয়ার্ডের কর্মচারিবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকালে সিটি কর্পোরেশনের ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদের নেতৃত্বে ক্যাম্পেইনটি বখতিয়ারাবাদ জোনাকী সংঘের সামনে থেকে শুরু হয়ে ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ও দোকান ঘুরে সুজানগর মিতালী সংঘ হয়ে ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
ক্যাম্পেইন শুরুর আগে বখতিয়ারাবাদ জোনাকী সংঘের আঙ্গিনায় ‘এসিডি’র প্রোগ্রাম অফিসার কৃষ্ণা রাণী বিশ্বাসের উপস্থাপনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদ। এসময় ১৬ নম্বর ওয়ার্ড তামাকমুক্ত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি তামাকবিরোধী একটি কমিটি গঠন করেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদকে সভাপতি ও স্থানীয় বাইতুল আমান জামে মসজিদের সহ-সভাপতি আতাউর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছে- রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং জোনের (১৬, ১৭ ও ১৮ নং ওয়ার্ড) মহিলা কাউন্সিলর মাজেদা বেগমকে সহ-সভাপতি, বখতিয়ারাবাদ জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক নবীন আহম্মেদকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১৬ নং ওয়ার্ড ইয়ুথ ক্লাবের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস লিজাকে সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সচিব নুরে আলম রানাকে।
এসময় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘রাজশাহী একটি নির্মল স্বাস্থ্যসম্মত নগরী। রাজশাহীকে স্বাস্থ্যসম্মত নগরীর গৌরবোজ্জ্বল সম্মানকে ধরে রাখতে নগরীকে তামাকমুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে আমার ওয়ার্ডে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ১০০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের তামাকপণ্য বিক্রি যাতে না কেউ না করে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এছাড়া তামাকের দোকানে আইন বহির্ভুত তামাকের কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন, প্রমশন না করা; স্কুল, রেস্টুরেন্টসহ সকল ধরনের পাবলিক প্লেসে যাতে কেউ ধূমপান করতে না পারে তার জন্য ক্যাম্পেইনসহ সকল স্থানে সতর্কতামূলক নোটিশ প্রদানের ব্যবস্থা করব। আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কোনো শিশুর কাছে তামাকপণ্য বিক্রি কিংবা বিপণন নিষিদ্ধ। অন্ততপক্ষে আমার ওয়ার্ডে যাতে শিশুদের দ্বারা তামাকপণ্য পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয় কিংবা বিপণন করা না হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার ওয়ার্ডে তামাকবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদের সমন্বয়য়ে একটি তামাকবিরোধী সংগঠনের অনুমোদন দেয়া হলো। এর মাধ্যমে পুরো মহানগরীকে ধূমপানমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত নগরী গড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এসময় বক্তারা বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন বাংলাদেশ তথা বিশ্ব দরবারে ক্লিন, গ্রীন, এডুকেশন সর্বোপরি হেলদি সিটি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু ধূমপানমুক্ত নগরী গড়ে তোলা ছাড়া সত্যিকারের হেলদি সিটি গড়া সম্ভব নয়। এজন্য আগে মহানগরীর পাবলিক প্লেসগুলোকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা জরুরি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মধ্যে রাজশাহী মহানগরীর পাবলিক প্লেসগুলো শতভাগ ধূমপানমুক্ত করার লক্ষ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক এ ক্যাম্পেইন প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।
স/এমএস
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়