রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||
বৈশাখ ২২ ১৪৩১
|| ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২৩
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ইসরায়েলে ভয়াবহ রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস। হামাসের এই হামলার পর গাজায় পাল্টা বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। পাল্টাপাল্টি হামলায় এরই মধ্যে দুই দেশের এক হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কয়েক হাজার মানুষ। দুই দেশের মধ্যে এখনো লড়াই চলছে। ফলে হতাহতের এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
এরই মধ্যে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। এরই মধ্যে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো এই যুদ্ধে কে জয়ী হবে বা সামরিক শক্তির দিক থেকে কে এগিয়ে—হামাস না ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী?
সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। এমনকি হামাস ও ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী সামরিক শক্তির সরাসরি তুলনা করাও সম্ভব নয়। কেননা হামাস কোনো প্রচলিত সেনাদল নয়। তারা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের একটি সংগঠন মাত্র।
তবে হামাসের এবারের অভিযান ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ অন্য সববারের চেয়ে একেবারে ভিন্ন। নতুন সমরাস্ত্র ব্যবহারের পাশপাশি স্থল, নৌ ও আকাশপথ—তিন দিক থেকেই ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে হামাস। ফলে সেখান থেকে তাদের সামরিক শক্তি নিয়ে কিছুটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
হামাসের সামরিক শক্তি
শনিবার সম্পূর্ণ সামরিক স্টাইলে ইসারয়েলে হামলা করেছে হামাস। এবারের অভিযানে এসব সব অস্ত্র হামাস ব্যবহার করেছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি।
হামাসের আক্রমণের পরপর বিভিন্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, শক্তিশালী গ্লাইডার ব্যবহার করে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকছে হামাসের যোদ্ধারা। ইসরায়েলের সুরক্ষিত চেকপোস্ট এড়াতেই এই পথ বেছে নিয়েছে তারা। এ ছাড়া ইসরায়েলে যুদ্ধ ট্যাংকের চোখ ফাঁকি দিতে প্রথমবারের মতো সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।
ইসরায়েলে হামলা চালাতে বরাবরই রকেট ব্যবহার করে আসছে হামাস। তবে এবারের রকেট ৭০ কিলোমিটার দূরের তেলআবিবে পর্যন্ত আঘাত হেনেছে। এতে বোঝা যায়, এবার বেশ উন্নত গাইডেন্স ও প্রপালশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে।
গত শনিবার নৌপথেও ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টা করেছে হামাসের যোদ্ধারা। যদিও তাদের অধিকাংশ নৌকা ইসরায়েলি বাহিনী ঠেকিয়ে দিয়েছে। এবারের সব হামলায় করেছে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড।
আরেকটি দিক হলো এবার হামলা করার পাশাপাশি অনেক ইসরায়েলি সামরিক ও বেসামরিক নাগরিককে জিম্মি করেছে হামাস। পরে তাদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করাই লক্ষ্য। এমনটা হয়ে থাকে আদর্শ অভিযানের ক্ষেত্রে।
এবার রকেট হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকেও হামলা চালিয়েছে সংগঠনটির প্রায় এক হাজার যোদ্ধা। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের পর এবারই প্রথমবারের মতো এমন আক্রমণ দেখল ইহুদি রাষ্ট্রটি।
ইসরায়েলের সামরিক শক্তি
ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। তবে এবারের হামাসের হামলা নিয়ে তারা বিন্দু পরিমাণ আঁচ করতে পারেনি। ফলে এখন দেশটিকে তাদের প্রচলিত সামরিক শক্তির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করতে হবে। নিচে ইসরায়েলের সামরিক শক্তির একটি চিত্র তুলে ধরা হলো :
সেনাবাহিনী
মাত্র ৮৫ লাখ জনসংখ্যার ছোট্ট দেশ হলেও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বেশ ওজনদার। দ্রুতগতির প্রযুক্তি আর শক্তিশালী পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে দুর্দান্ত যোদ্ধাবাহিনী তৈরি হয়েছে দেশটির। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী ইসরায়েলের প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার সক্রিয় সেনা রয়েছে। এ ছাড়া রিজার্ভে আছে আরও ৪ লাখ ৪৫ হাজার।
বিমানবাহিনী
ইসরায়েলের বিমানবাহিনী বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সেরা বাহিনী। তাদের হাতে রয়েছে উন্নত সব প্রযুক্তি-যুদ্ধবিমান। তাদের পাইলটরাও অত্যন্ত অভিজ্ঞ। সিরিয়া, লেবানন, গাজা এমনকি মিসরের সিনাই উপদ্বীপে লক্ষ্যমাত্রার ওপর নিয়মিত মিশন চালাচ্ছে তারা। এর বহরে রয়েছে এফ-৩৫-এর লাইটিনিং-২ মডেলের আড়াই’শ যুদ্ধবিমান। এগুলো পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া এফ-৩৫এস মডেলের প্রায় ৫০টি যুদ্ধবিমান রয়েছে।
নৌবাহিনী
সেনা ও বিমানবাহিনীতে শক্তিশালী হলেও নৌবাহিনীর দিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে ইসরায়েল। তাদের হাতে ৫টি সাবমেরিন, ৩টি করভেট, ৮টি মিসাইল বোট ও ৪৫টি পেট্রল বোট আছে।
পারমাণবিক শক্তি
তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো ইসরায়েল পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। এর ফলে ট্রাম্প কার্ডটা তাদের হাতেই।
amarrajshahi.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়